• সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২১
  • " />

     

    শেষ সময়ের গোলে বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙে সাফের ফাইনালে নেপাল

    শেষ সময়ের গোলে বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙে সাফের ফাইনালে নেপাল    

    হলো না বাংলাদেশের। ১৬ বছরের অপেক্ষা বাড়ল আরও। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে নেপালের সঙ্গে ড্র করল বাংলাদেশ। সুমন রেজার গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর অঞ্জন বিস্তা গোল শোধ করে নেপালকে এনে দিয়েছেন মহামূল্যবান এক পয়েন্ট। আর তাতেই প্রথমবারের মতো সাফের ফাইনালে পৌঁছেছে নেপাল।

    বাংলাদেশ অবশ্য সুযোগ মিসের খেসারতি দিয়েছে। সুমন গোল করলেও একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। শেষ পর্যন্ত দশ জন হয়ে আর শেষ রক্ষা হয়নি।

    শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের, ম্যাচের ২ মিনিটেই জার্সি টেনে ধরে হলুদ কার্ড দেখেছেন তপু বর্মণ। নেপালকেই বেশি ধারাল মনে হচ্ছিল, গোলটা অবশ্য খেলার ধারার খানিকটা বিপরীতেই পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

    ম্যাচের ৮ মিনিটেই প্রথম গোলটা পেয়ে যায় বাংলাদেশ। জামাল ভুইঁয়ার ফ্রিকিকটা নেপালের একজনের গায়ে লেগে খানিকটা দিক বদলে ফেলে। এই ম্যাচে সুযোগ পেয়ে যাওয়া সুমন রেজা ছিলেন তক্কে তক্কে, বক্সে আনমার্কড অবস্থায় হেড করে গোল দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন বল। মালেতে বাংলাদেশীদের এনে দিয়েছেন আনন্দের উপলক্ষ। গোল করার পরেই আরেকটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন সাদ উদ্দিন। কিন্তু পোস্টের বাইরে থেকে তার বাঁ পায়ের শট চলে গেছে পোস্টের পাশ ঘেঁষে।

    ১৫ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন রোহিত চান্দ। বক্সের ভেতর ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু কয়েক গজ দূর থেকে পোস্টের ওপর মেরে দেন।

    ২১ মিনিটে দীনেশ রাজবংশীকে কাটিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন সুমন রেজা। ইব্রাহিম ছিলেন দারুণ পজিশনে, কিন্তু সুমন নিজেই মারতে গেলেন। বাঁ পায়ের শট চলে গেল সোজাসুজি গোলরক্ষক বরাবর,সুবর্ণ সুযোগ হারাল বাংলাদেশ।

    ২৭ মিনিটে আরেকটি দারুণ প্রতিআক্রমণের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সুমন-ইব্রাহীম হয়ে বল এসে পড়ে সাদ উদ্দিনের কাছে, কিন্তু বাঁ পায়ের উদ্দেশ্যহীন শটে ভেস্তে যায় সেই আক্রমণ।

    প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোল শোধ করার আরেকটি দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিল নেপাল।কিন্তু আয়ুশের হেড একটুর জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।

    ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ গড়ে দেওয়ার মতো দুইটি মুহূর্ত এসেছিল ৫২ মিনিটে। প্রথমে নেপাল প্রায় গোল করেই ফেলেছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে জিকো হাত দিয়ে পাঞ্চ করে দেন। এর পরেই সুমন হাফ লাইনের পর বল পেয়ে দুজনকে ছিটকে ঢুকে পড়েছিলেব বক্সে। কিন্তু ওয়ান অন ওয়ানে তার শট সরাসরি চলে যায় গোলরক্ষক বরাবর, দ্বিতীয় গোল পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের।

    ৬৩ মিনিটে জামাল ভুইঁয়াকে তুলে নিয়ে অস্কার ব্রুজোন নামান সোহেল রানাকে। তখনই সেট পিস থেকে আরেকটিহাফ চান্স পায় বাংলাদেশ, কিন্তু ইব্রাহীম পোস্টে রাখতে পারেননি। মিনিটখানেক পরেই আবার সুমন রেজা, কিন্তু এবারও তার বাঁ পায়ের শট সরাসরি চলে যায় গোলরক্ষকের কাছে। এরপরেই আবার সুযোগ পেয়ে যায় নেপাল, এবারও বিপদমুক্ত করেন জিকো।৬৯ মিনিটে রোহিত একেবারেই কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন, কিন্তু গৌতম শ্রেষ্ঠার পাস থেকে তার হেড একটুর জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।

    ৭৮ মিনিটে অঘটন ঘটে যায় বাংলাদেশের। বক্স থেকে বেরিয়ে এসে বলে হাত লাগিয়ে দেন জিকো। লাল কার্ড দেখিয়ে দেন রেফারি। দশ জনের দল হয়ে যায় বাংলাদেশ, ব্রুজোন এরপর নামান রানা আর ফাহাদকে।

    ৮৭ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় নেপাল। সেট পিসের সময় সাদ উদ্দিন ফাউল করে বসেন, রেফারি বাঁশি বাজান পেনাল্টির। যদিও সিদ্ধান্তটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরাও অনেকক্ষণ প্রতিবাদ করেছেন। তবে অঞ্জন বিস্তা ভুল করেননি, ঠান্ডা মাথায় গোল করে সমতা ফিরিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গের জন্য সেটাই ছিল যথেষ্ট।