'কুশল পেরেরাকে শুরুতেই আউট করতে হবে'
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজুড়ে প্যাভিলিয়নের সাথে থাকছেন জাতীয় ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। শ্রীলংকার সাথে ম্যাচের আগে কথা বলেছেন বাংলাদেশের মানসিক অবস্থা, একাদশ ও কৌশল নিয়ে
আমি চাচ্ছিলাম এই গ্রুপে পড়ুক
আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ গ্রুপ ১ পড়ায় ভালোই হয়েছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে সেটা চাচ্ছিলাম। কারণ অস্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশ কিছুদিন আগেই জিতেছে, সেক্ষেত্রে মানসিকভাবে কিছুটা এগিয়ে থাকবে। ওদের ক্রিকেটারদের আমরা ভালোমতোই চিনি। কিছুটা সুবিধা বাংলাদেশ পাবে। আর অন্য গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান এই কন্ডিশনে অনেক বেশি শক্তিশালী দল। আফগানিস্তানও আছে। আমার মনে হয় সেদিক দিয়েও এই গ্রুপটা এড়িয়ে যেতে পেরে বাংলাদেশের জন্য খারাপ হয়নি।
দুপুরের ম্যাচে সুবিধা, অসুবিধা দুই-ই আছে
একদিক থেকে দেখলে দুপুরের সব ম্যাচ আমাদের জন্য সুবিধা, আবার আরেকদিক থেকে দেখলে অসুবিধা। শারজায় বিশেষ করে স্পিনাররা দুপুরে একটু বাড়তি সুবিধা পেতে পারে। আবার রাতে ম্যাচ হলে দেখা যেত বোলারদের বল গ্রিপ করতে সমস্যা হতো। আবার আরেক দিক থেকে অসুবিধা হচ্ছে এই গরমের মধ্যে আমাদের ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। একদিন পরেই আমাদের মাঠে নামতে হচ্ছে, রিকভারির খুব বেশি সময় পাওয়া যাচ্ছে না। খেলোয়াড়দের অ্যাডজাস্ট করারও একটা ব্যাপার থাকে। ওখানকার গরমে আসলে টানা ম্যাচ খেলে তো আমাদের অব্যহাস নেই। ওদিক দিকে হয়তো ক্রিকেটারদের কাজ একটু কঠিন হতে পারে।
আজকের খেলা আবু ধাবি বা দুবাইতে হলে ভালো হতো
আমার কাছে মনে হয় শ্রীলংকার সাথে আবু ধাবি বা দুবাইতে খেললে আমাদের জন্য বেটার হতো। কারণ শারজায় দেখলাম উইকেট বেশ স্লো, বল অনেক গ্রিপ করছে। আবার ওদের স্পিনাররা দেখলাম খুব ভালো করছে, হাসারাঙ্গা ভালো ফর্মে আছে। আবার ক্যারম বল-গুগলিসহ ভ্যারিয়েশনও আছে ওদের। সেদিক দিয়ে আমাদের স্পিনাররা একটু অর্থোডক্স। আবু ধাবিতে হয়তো উইকেট একটু ইভেন, সেখানে খেলা হলে ভালো হতো।
শ্রীলংকা এখন বেশ ভালো দল
কয়েক দিন আগেও আমি আসলে ভাবিনি শ্রীলংকা আমাদের জন্য খুব বড় কোনো পরীক্ষা হবে। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের সাথে ওদের ম্যাচটা দেখে আমি মুগ্ধ। ১০ রানের ভেতর ৩ উইকেট হারানোর পর ওরা যেভাবে কামব্যাক করল এবং ম্যাচটা জিতল সেটা আসলেই দারুণ। ওরা যেভাবে ডমিনেটিং ক্রিকেট খেলেছে তাতে ওদের সাথে কাজটা আসলেই সহজ হবে না। ওরা এখন দল হিসেবে খেলছে। আমার মনে হয় আমাদের জন্য খুব কঠিন একটা ম্যাচ অপেক্ষা করছে।
কুশল পেরেরাকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিতে হবে
আমার মনে হয় আমাদের সাথে ওদের একটা খেলোয়াড় অনেক সাফল্য পেয়েছে। সেটা হচ্ছে কুশল পেরেরা। কুশল বাংলাদেশের সাথে সবসময় ভালো করেছে। আর হাসারাঙ্গা তো আছেই। আমার মনে হয় কুশলকে যদি আমরা দ্রুত আউট করতে পারি তাহলে সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। কারণ ওদের শুরুতে রান করার ব্যাটসম্যান একজনই আছে। আর বাকিরা যারা আছে, আমি আশা করি আমাদের বোলিংয়ের বিপক্ষে অতটা কার্যকরী হবে না। সেজন্য কুশল পেরেরার উইকেট বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বাড়তি স্পিনার আসতে পারে একাদশে
আমার মনে হয়, কাল একজন বাড়তি স্পিনার দরকার হতে পারে। শারজার উইকেট বেশ স্লো। আমাদের পেসে সাইফ উদ্দিন আছে, মোস্তাফিজ আছে। সেক্ষেত্রে তাসকিনের জায়গায় হয়তো নাসুম আসতে পারে। কারণ সাইফের ব্যাটিংটা ভালো। সেটার জন্য হয়তো তাসকিন একটু পিছিয়ে থাকবে। আবার মোস্তাফিজের কাটার এই উইকেটে অনেক কার্যকর হতে পারে।
ওপেনিং এখনো চিন্তার জায়গা
ওপেনিং নিয়ে আমি আবারও বলব, আমাদের একটু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যেতে পারে। উইনিং কম্বিনেশন চেঞ্জ করা ঠিক না, সেটা অবশ্যই ঠিক। আবার বিশ্বকাপেও পাঁচটা ম্যাচ কিন্তু বাকি আছে। সেজন্য আমাদের বিকল্প চিন্তা করে রাখতেই হবে। আবার যদি ওপেনিং জুটি ব্যর্থ হয় তাহলে তো অন্য চিন্তা করতে হবে। সেটা আগে থেকে করলে খারাপ না বলে মনে হয়। একজন বা দুজন এক জায়গায় ব্যর্থ হবে, আর সারাজীবন খেলে যাবে, সেটা কিন্তু দলের জন্য ভালো কোনো উদাহরণ নয়। সেক্ষেত্রে লিটনকে বাদ নয়, রেস্ট দিয়ে নিচের কাউকে ওপরে নিয়ে আসার চিন্তা করা যেতে পারে।
ঘরের খবর বাইরে আসা ঠিক নয়
দল নিয়ে অনেক রকম কথা শুনছি এখন। এ নিয়ে আসলে বিস্তারিত জানি না আমি। আমার কাছে মনে হয়, প্রতিটা ব্যাপারে ভারসাম্য রাখা উচিত। ঘরের বিষয় মিডিয়াতে চলে আসলে সেটা সবার জন্য ভালো কিছু নয়। তো আমার মনে হয় এদিক দিয়ে আমাদের আরেকটু সতর্ক হওয়া উচিত।