• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    রোমাঞ্চকর ড্রতে সিটি-লিভারপুল সমানে সমান

    রোমাঞ্চকর ড্রতে সিটি-লিভারপুল সমানে সমান    

     

    ম্যান সিটি ২:২ লিভারপুল 


    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লিগের কোনো ম্যাচকে এত গুরুত্ব দেয়নি ইংলিশ ফুটবল। ইংল্যান্ড, এবং তর্কসাপেক্ষে গ্রহের শ্রেষ্ঠ দুই দলের সম্মুখ লড়াইকে মৌসুমের ফাইনাল হিসেবেই দেখছিল সবাই। কিন্তু না, মৌসুমের দ্বিতীয় লিগ ম্যাচেও ২-২ ব্যবধানে ড্র করা সিটি, লিভারপুলের ভাগ্য নির্ধারিত হতে সময় লাগবে আরও কিছুদিন। 

    সব রকম রোমাঞ্চের পশরা সাজিয়েই মাঠে নেমেছিল দু দল। ঘরের মাঠে ফ্রন্টফুটে খেলা শুরু করে গার্দিওলার সিটি। পঞ্চম মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে বাড়ানো এক বলে সামনে দৌড় দেওয়া গ্যাব্রিয়াল জেসুসকে খুঁজে নেন কেভিন ডি ব্রুইনা। লিভারপুলের বক্সের কাছে একদম ফাঁকা পেয়ে যাওয়া জেসুস বলটি স্কয়ার করেন স্টার্লিংয়ের কাছে। কিন্তু স্টার্লিংয়ের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন। 

    লিভারপুল বল ক্লিয়ার করার সঙ্গে সঙ্গেই আবার আক্রমণে উঠে সিটি। ডি ব্রুইনা ফ্যাবিনিয়োকে পাশ কাটিয়ে বক্সের সামনে থেকে বাম পায়ে শট নেন। সেই শট মাতিপের পায়ে ডিফ্লেক্টেড হয়ে জায়গা করে নেয় লিভারপুলের জালে। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো ইতিহাদ স্টেডিয়াম। 

    গোল খাওয়ার পরই যেন টনক নড়ে লিভারপুলের। গুছিয়ে খেলা শুরু করে ক্লপের দল। যার ফলও পায় দ্রুত। ১৩তম মিনিটে থিয়াগো এক দূরপাল্লার পাসে রাইট উইংয়ে থাকা মানেকে খুঁজে নেন। বক্সের ভেতর নেওয়া মানের ক্রস লাপোর্ত ক্লিয়ার করলেও তা গিয়ে পড়ে বক্সের বাইরে থাকা রবার্টসনের পায়ে। দেরি না করে রবার্টসন সাথে সাথেই ক্রস করেন বক্সের ভেতর। তার ক্রস গিয়ে পড়ে সিক্স ইয়ার্ড বক্সের ডানপাশে থাকা ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার আর্নল্ডের পায়ে। ট্রেন্ট স্কয়ার করেন মাঝখানে, আর নাম্বার নাইনের জায়গায় দাঁড়িয়ে নাম্বার নাইনের মতোই ফিনিশ করেন ডিয়গো জোটা। 

    প্রথমার্ধের বাকি সময়ে দুই দলই বলার মতো বেশ কিছু আক্রমণ করে। তবে সিংহভাগ আক্রমণ আসে স্বাগতিকদের পক্ষ থেকেই। লিভারপুলের হাই লাইনকে ফাঁকি দিয়ে দুই উইং দিয়ে বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত বল বের করে সিটিজেনরা। এরকম একটি বল থেকেই দ্বিতীয় গোল করে তারা। 

    ৩৬ মিনিটে সিটির নেওয়া কর্নার লিভারপুল ক্লিয়ার করলেও তা গিয়ে পড়ে সিটি উইংব্যাক ক্যান্সেলোর পায়ে। বাঁপাশ থেকে বক্সের ভেতর ক্রস করেন ক্যান্সেলো। আর ডান পাশে লিভারপুলের অফসাইড ট্র্যাপকে পরাস্ত করে সামনে এগিয়ে যান জেসুস, বক্সে একদম ফাঁকা পেয়ে যান বল। অ্যালিসনের সামনে দাঁড়িয়ে এই ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারের নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে জালে জড়ায়। আবার এগিয়ে যায় সিটি। 

    এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করলেও সিটির আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতা ফেরায় লিভারপুল। রাইট উইং থেকে অল্প ভিতরে ঢুকে দুর্দান্ত এক বাঁকানো বলে বক্স অভিমুখে রওনা দেওয়া সাদিও মানেকে খুঁজে নেন সালাহ। জন্মদিনে খেলতে নামা মানে ওয়াকারকে পাশ কাটিয়ে দুর্দান্ত এক শটে সমতায় ফেরান তার দলকে। 

    ৬৪ মিনিটে আবারও লিভারপুলের হাই লাইনকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকায় বল পেয়ে যান স্টার্লিং। বক্সে ঢুকে গোলও করেন এই ইংলিশ তারকা। কিন্তু নিজের সাবেক দলের বিপক্ষে করা তার উদযাপন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ভিএআরে অল্পের জন্য অফসাইড ধরা পড়ায় বাতিল হয় এই গোল। 

    এরপর দুই দলই বেশ কিছু বদলি করে। লিভারপুল ডিয়াজ, কেইটা, ফিরমিনো; সিটি মাহরেজ ও গ্রিলিশকে মাঠে নামালেও কেউই নিজের দলকে উপহার দিতে পারেন কাঙ্ক্ষিত শিরোপা-নির্ধারণী গোলটি। যার ফলে সমতাতেই শেষ হয় এই ম্যাচ।  

    যেই এক পয়েন্টের ব্যবধান নিয়ে ম্যাচ শুরু করেছিল দুই দল, তা নিয়েই ম্যাচ শেষ করে তারা। ৩১ ম্যাচ শেষে ম্যান সিটি ও লিভারপুল সংগ্রহ এখন যথাক্রমে ৭৪ ও ৭৩ পয়েন্ট। নিশ্চিতভাবেই বাকি সাত ম্যাচের সাতটিই জেতার পরিকল্পনা থাকবে দুই দলের। কারণ কোনো ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ানোই এখন শিরোপা খোয়ানোর সমতুল্য হয়ে দাঁড়াবে।