• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    সিজন প্রিভিউ: 'ছিনতাই-সংকট' কাটিয়ে বোয়েহলি ধরে রাখতে পারবেন আব্রামোভিচের রাজত্ব?

    সিজন প্রিভিউ: 'ছিনতাই-সংকট' কাটিয়ে বোয়েহলি ধরে রাখতে পারবেন আব্রামোভিচের রাজত্ব?    

    উল্লেখযোগ্য দলবদল

    যারা এলেন: রাহিম স্টার্লিং (৫০ মিলিয়ন পাউন্ড), কালিদু কুলিবালি (৩৪.২ মিলিয়ন), কার্নি চুকুমেকা (১৫ মিলিয়ন) 

    যারা গেলেন: অ্যান্তনিয়ো রুডিগার (ফ্রি), আন্দ্রেস ক্রিশ্চেনসন (ফ্রি), রোমেলু লুকাকু (লোন), ড্যানি ড্রিংকওয়াটার (ফ্রি) 

    ট্রান্সফার মৌসুমটা ঠিক পরিকল্পনামাফিক যাচ্ছে না চেলসির। লুকাকু-সমস্যার একটা সুরাহা করতে গিয়ে তারা কাটিয়েছে প্রথম এক মাস। এরপর তারা যেই কয়জন খেলোয়াড়কে দলে ভেড়ানোর জন্য আলোচনা চালিয়েছে, তাদের প্রায় সবাইকে ‘ছিনতাই’ করেছে বার্সেলোনা। রবার্ট লেভানডফস্কি, রাফিনহা, জুলস কুন্দে; ফ্রি এজেন্ট হতে যাওয়া উসমান ডেম্বেলেও চেলসি আগ্রহ দেখানোর পর স্বাক্ষর করেছেন নতুন চুক্তি।  

    তবে বার্সার এই দাদাগিরির পরও বাজারসদাই করছে চেলসি। মৌসুমের প্রথম সাইনিং হিসেবে তারা দলে ভিড়িয়েছে ম্যান সিটি উইঙ্গার রহিম স্টার্লিংকে। লিওনেল মেসির পর পেপ গার্দিওলার অধীনে সর্বোচ্চ গোল দেওয়া এই উইঙ্গার অনেকভাবে সাহায্য করতে পারে চেলসিকে। গোল, অ্যাসিস্ট, একাধিক পজিশনে খেলা; প্রিমিয়ার লিগে প্রচুর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ২৭ বছর বয়সী টুখেলের চেলসির আক্রমণভাগকে নিয়ে যেতে পারেন আরেক ধাপ উপরে। আর চেলসির রক্ষণকে নতুন রূপ দিতে পারেন নাপোলি থেকে আসা কালিদু কুলিবালি। এই ৩১ বছর বয়সীকে আনাই হয়েছে সামনে দলের রক্ষণকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তৃতীয় সাইনিং কার্নি চুকুমেকা অ্যাস্টন ভিলায় নিজের প্রতিভার পরিচয় ভালোভাবেই দিয়েছেন। কিছুটা বুড়িয়ে যাওয়া চেলসি মিডফিল্ডে নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে আসবেন এই ১৮ বছর বয়সী। 

    দলবদল বাজারে এখনও বেশ সক্রিয় আছে চেলসি। মার্ক কুকুরেলা, ডেনজেল ডামফ্রিজের মতো কয়েকজন লেফটব্যাকের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ক্লাবটি। কথা আছে আরেকজন সেন্টার-ব্যাক ও রাইটব্যাককে দলে ভেড়ানোর। নজরে আছে লেস্টার ডিফেন্ডার ওয়েসলি ফোফানা, বায়ার্নের বেঞ্জামিন পাভাড।

     

    যা জানা আছে 

    রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট যেমনই থাকুক, রোমান আব্রাহিমোভিচের বিদায় সকল চেলসি ভক্তের জন্যই একটি বড় ধাক্কা। তবে নতুন মালিক টড বোয়েহলি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ক্লাবকে অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন খেলাগুলোর আদলে আধুনিক ব্যবসায়িক মডেল গড়ে তোলারও। 

    দায়িত্ব নেওয়ার পর টড বোয়েহলি প্রথমেই যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তা হচ্ছে- তিনি জানিয়ে দিয়েছেন ম্যানেজার টমাস টুখেলকে পূর্ণ সমর্থন দিবেন তিনি। তা করতে গিয়ে বরখাস্ত করেছেন ক্লাবের দীর্ঘদিনের ডিরেক্টর মারিনা গ্রানফস্কাইয়া ও টেকনিকাল উপদেষ্টা পিটার চেককে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো একজন মেগাস্টারকে দলে ভিড়িয়ে নিজের মালিকানা যুগের শুরু করতে চেয়েছিলেন বোয়েহলি। টুখেলের পরামর্শে বাদ দিয়েছেন সেই পরিকল্পনাও। স্মরণকালে চেলসির কোনো ম্যানেজার এমন সমর্থনও স্বাধীনতা পাননি। একে কাজে লাগিয়ে এখন টুখেল কেমন দল বানান এবং সে দল মাঠে কেমন করে, তা-ই এখন দেখার বিষয়।  

     

    বড় প্রশ্ন: গোল আসবে কোথা থেকে?  

    টমাস টুখেলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী দলের খুঁত ছিল একটিই- দলে নিখাদ গোলস্কোরারের অভাব। এরপর শত মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে রোমেলু লুকাকুকে দলে ভেড়ানো হয়েছিল একটি সোজা-সাপ্টা লক্ষ্য নিয়ে, তা হচ্ছে- লুকাকু একাই মৌসুমে ২০+ গোল করবেন। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি। যে কারণে মৌসুমের শুরুতে শিরোপার দৌড়ে থাকলেও লুকাকুর ইনজুরির পর সিটি-লিভারপুল থেকে দূর সড়তে শুরু করে চেলসি। 

    এবারও সেই পুরনো দুর্বলতা নিয়ে মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে লন্ডনের ক্লাবটি। লেভানডফস্কি চলে যাওয়ার পর এখন বাজারে সেরকম ওয়ার্ল্ড-ক্লাস স্ট্রাইকারও নেই যে প্রিমিয়ার লিগে ২০ গোল করতে পারবে। এদিকে দলের ব্যাক-আপ স্ট্রাইকার টিমো ভের্নারকেও লোনে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে চেলসি। চলে যেতে পারেন রাইট উইঙ্গার হাকিম জিয়েখও। এরপর শীর্ষ চারের জন্য লড়াই করার জন্য পর্যাপ্ত গোল পায় কি না ব্লুজরা, সেটিই এখন দেখার বিষয়। 
     

    শেষ পাঁচ মৌসুমে চেলসি    

    ২০২১-২২: ৩য়

    ২০২০-২১: ৪র্থ 

    ২০১৯-২০: ৪র্থ 

    ২০১৮-১৯: ৩য় 

    ২০১৭-১৮: ৫ম 

     

    প্যাভিলিয়নের প্রেডিকশন: পঞ্চম।