• আফগানিস্তানের বাংলাদেশ সফর ২০২৩
  • " />

     

    শান্ত, জয়ের দুই মেরুর ব্যাটিংয়ে প্রথম দিনটা হয়ে থাকল বাংলাদেশের

    শান্ত, জয়ের দুই মেরুর ব্যাটিংয়ে প্রথম দিনটা হয়ে থাকল বাংলাদেশের    

    একমাত্র টেস্ট, মিরপুর (টস-আফগানিস্তান/বোলিং)
    বাংলাদেশ- ৩৬২/৫, ৭৯ ওভার (শান্ত ১৪৬, জয় ৭৬, মিরাজ ৪৩*, মাসুদ ২/৬৭, রহমত ১/৩০, হামজা ১/৮৫)
    ১ম দিন, স্টাম্পস


     

    সবুজ উইকেট নিয়ে যথেষ্ট কথাবার্তা হলেও প্রথম দিন শেষে চায়ের কাপে নিশ্চিতভাবেই ঝড় তুল্বে বাংলাদেশের প্রথম দিনের ব্যাটিংয়ের ধরন। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর ঘাসের কথা ভেবে আফগানিস্তান ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও বাজবল অনুসরণ করে বাংলাদেশ রান তুলল চারের ওপর রান রেটে। আর সেই তান্ডবের নেতৃত্ব দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, পার্শ্ব নায়ক হয়ে থাকলেন মাহমুদুল হাসান জয়। শান্তর তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিটা নিশ্চিতভাবেই প্রথম দিনটা বাংলাদেশের করে রেখেছে।

    দিনের শুরুতেই অবশ্য নিজের প্রথম বলে প্রথম টেস্ট উইকেট পেয়ে গিয়েছিলেন নিজাত মাসুদ। জাকির হাসান ওই বলে ফেরার পর আফগানদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন জয়-শান্ত। এমন না যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিলেন দুজন; তবে ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ে উলটো আফগানদের বুকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন বিশেষ করে শান্ত। অশান্ত হয়ে ওঠার দিনে মাত্র ৫৮ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি, বাংলাদেশ শতরান পূর্ণ করে ২১-তম ওভারেই! উল্টো শান্তভাবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন জয়। আর তাতেই ফিফটির পর আরও মারমুখী হয়ে ওঠার সুযোগ পান শান্ত। প্রথম সেশনে ২৪ ওভার খেলা হলে বাংলাদেশ পেয়ে যায় ১১৬ রানের সংগ্রহ।

    আফগানদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিং, অনিশ্চিত ফিল্ডিং বিন্যাসের পূর্ণ সুযোগ নিয়ে এই জুটি এগিয়ে যান দোর্দণ্ড প্রতাপে। শান্ত যখন সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে তখন টেস্ট মেজাজে খেলে ১০২ বলে ফিফটি তুলে নেন জয়। সেখান থেকেই সময় ক্ষেপণ না করে ১১৮ বলে শান্ত পেয়ে যান সেঞ্চুরি, ঘরের মাঠে যেটা তার প্রথম। সেঞ্চুরির এক ওভার পরেই আমির হামজার বল তার ব্যাটের কানা খুঁজে পেলেও স্লিপ গলে বল বেরিয়ে যাওয়াতে বেঁচে যান শান্ত। তবে ওই স্লিপেই ইব্রাহিম জাদরানের দারুণ ক্যাচে কিছুক্ষণের মধ্যে থামতে হয় জয়কে। রহমতের ভাসিয়ে দেওয়া বলে ভারসাম্য হারিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় জয়ের ১৩৭ বলে ৭৬ রানের ধীরস্থির ইনিংস, ভাঙে ২১২ রানের সুবিশাল জুটি। মুমিনুলকে এরপর দলকে ২৩৫ রানে নিয়ে গিয়ে চা-বিরতিতে যান শান্ত।

    চা-বিরতির পর যেন হুট করে মনোযোগে বিচ্যুতি ঘটে দলগতভাবেই। মাসুদের দ্বিতীয় শিকার হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে মুমিনুল ফেরার পর মুশফিককে নিয়ে ক্ষণিকের জন্য খোলসে ঢুকে যান শান্ত। সেটাই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। আবারও লাগামছাড়া হতে গিয়ে আমির হামজার বলে বেরিয়ে এসে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন। তবে নাসির জামালকে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ দিয়ে শান্তকে সেবার থামতে হয় ১৭৫ বলে ১৪৬ রানের ওয়ানডে মেজাজের ইনিংস শেষে। উইকেটে এসে একটু পরেই ৯ রানে ফিরে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস।

    তবে ওই সময়টুকুতে খেই হারালেও মেহেদী হাসান মিরাজ এসে আবারও হাল ধরেন, সেই সাথে মুশফিক তার অভিজ্ঞতার প্রদর্শনীতে আর কোনও বিপদ ঘটতে দেননি। দলীয় তিনশো রান পূর্ণ করার পর সুবিশাল সংগ্রহ নিয়েই দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। মিরাজ ৪৩* রান ও মুশফিক ৪১* রানে অপরাজিত থেকে গড়েছেন ৭২* রানের জুটি জুটিটাকে দুজনেই চাইবেন আগামীকাল আরও লম্বা করতে।