• নিউজিল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    কেন ডিমেরিট পয়েন্ট পেল মিরপুর? সামনে কী শাস্তি অপেক্ষা করছে?

    কেন ডিমেরিট পয়েন্ট পেল মিরপুর? সামনে কী শাস্তি অপেক্ষা করছে?    

    সম্প্রতি শেষ হওয়া বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টের পিচকে রেটিং দিয়েছে আইসিসি। মিরপুরের আউটফিল্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন। তবে প্রথম দিন থেকেই পিচ অস্বাভাবিক আচরণ করায় এই পিচকে ‘আনস্যাটিসফ্যাক্টরি’ রেটিং দিয়েছেন তিনি; যেটার জন্য মিরপুরের পিচের ভাগ্যে জুটেছে ১ ডিমেরিট পয়েন্ট। তবে এরকম কোনও রেটিং আগে দেখা যায়নি। আইসিসি সাধারণত ছয় ধরনের নামকরণের মাধ্যমে তাদের রেটিং সাজিয়ে পিচগুলোকে বিচার করে থাকে। তাহলে সেই রেটিংগুলো কী কী?

    একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের পিচকে ছয় ধরনের রেটিং দিয়ে থাকে আইসিসি:

    -খুব ভালো
    -ভালো
    -গড়
    -গড়পড়তার নিচে
    -খারাপ
    -অযোগ্য

    একটি ভালো পিচের সংজ্ঞাটাও নির্ধারণ করে দিয়েছে আইসিসি। আইসিসির সংজ্ঞানুযায়ী একটি ভালো পিচে ভালো ক্যারি থাকতে হবে, অর্থাৎ ব্যাটে ভালোভাবে বল আসবে; পিচে সীমিত সিম মুভমেন্ট থাকবে; খেলা শুরু হওয়ার প্রথমাংশ থেকেই বাউন্স ধারাবাহিক হবে। তবে প্রথম দুই দিনে খেলা হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই পিচ কিছুটা ধরে আসতে পারে; সেটার কারণেই পিচ থেকে গ্রহণযোগ্য টার্ন পাওয়া যেতে পারে। আর ম্যাচের শেষদিকে গিয়ে স্পিনাররা পিচ থেকে গ্রহণযোগ্য পরিমাণ সহায়তা পাবে যেহেতু খেলা হতে থাকায় পিচে ভাঙন ধরবে।

    আইসিসির সংজ্ঞা থেকে এটুকু পরিষ্কার যে পিচ থেকে স্পিনাররা বল ঘোরাতে সহায়তা পেতেই পারে। তবে প্রথম দিন থেকেই নয়। একটা বিষয়ে অবশ্য আইসিসি পরিষ্কার - বাউন্স যেন ধারাবাহিক হয়। অধারাবাহিক বাউন্সের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যাথারটনের ইংল্যান্ডের খেলাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ১৯৯৮ সালে কিংস্টনের সেই টেস্টে মাত্র ১০.১ ওভার খেলা হওয়ার পরে টেস্ট পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল; কারণ একটাই - অধারাবাহিক বাউন্সের কারণে ব্যাটারদের নিরাপত্তাই ছিল হুমকির মুখে।

    সেই সুত্রেই খারাপ পিচের সংজ্ঞাটাও আইসিসি বেঁধে দিয়েছে। আইসিসির নিয়মানুযায়ী একটি খারাপ পিচ থেকে ম্যাচের যেকোনো পর্যায়েই অস্বাভাবিক সিম মুভমেন্ট পাওয়া যাবে, অর্থাৎ পিচে সিমের ওপর বল পড়ে বড় বিচ্যুতির কারণে অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে; পিচে অধারাবাহিক বাউন্স মাত্রাতিরিক্ত হবে। ম্যাচের শুরুর দিক থেকেই স্পিনাররা অপ্রত্যাশিত সহায়তা পাবে।

    এতটুকু পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে আইসিসি কী খেলাটা শুধুমাত্র বোলারদের ব্যাকফুটে রাখার জন্য সাজিয়েছে কি না; এটা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি, বোলাররাও কম কথা বলেননি। তবে খারাপ পিচের সংজ্ঞায় আইসিসি শেষে এটাও বলেছে - ম্যাচের কোনও দিনেই যদি বোলাররা পিচ থেকে কোনও ধরনের সিম মুভমেন্ট না পায়, অথবা ম্যাচের শেষ দিকে গিয়েও স্পিনাররা পিচ থেকে সহায়তা না পায় তাহলে সেটাও একটি খারাপ পিচ। গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এরকম পিচ বানিয়ে পাকিস্তান পেয়েছিল ‘গড়পড়তার নিচে’ রেটিং।

    ডিমেরিট পয়েন্টের নিয়ম

    আইসিসি সর্বোচ্চ ৫ ডিমেরিট পয়েন্ট দেয়। কোনও একটি পিচ খেলার অযোগ্য ঘোষণা করা হলে সেটা ৫ ডিমেরিট পয়েন্ট পায়। খারাপ পিচ পায় ২ ডিমেরিট পয়েন্ট ও গড়পড়তার নিচের মানের পিচ পায় ১ পয়েন্ট। আইসিসির নতুন নিয়মানুযায়ী ৫ বছর ধরে এই রেটিংগুলো সমন্বিত হয়। ৫ বছরের সময়সীমায় কোনও পিচ ৫ বা তার অধিক ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে ১২ মাসের জন্য সেই পিচ নিষিদ্ধ ঘোষিত হবে।

    মিরপুরের উইকেট এর আগে ২০১৮ সালে শ্রীলংকা-বাংলাদেশ টেস্টের পরও ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছিল। কিন্তু সেই পয়েন্টের পাঁচ বছর এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়ে গেছে। যার মানে এই চক্রে এটাই মিরপুরের প্রথম ডিমেরিট পয়েন্ট।