• " />

     

    শাপেকোয়েনসের অশ্রুসিক্ত প্রত্যাবর্তন

    শাপেকোয়েনসের অশ্রুসিক্ত প্রত্যাবর্তন    

    দক্ষিণ ব্রাজিলের অ্যারেনা কন্ডা স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা কুড়ি হাজারের মতো। ভরদুপুরে সূর্যটা মধ্য গগনে রেখে গ্যালারি পুরোপুরি ভরলো না। তবে হাজার হাজার ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের সাথে সমস্বরে কান্নাভেজা কণ্ঠের কোরাস পরিবেশটা কেমন ভারী করে তুললো ঠিকই। ফুটবল ইতিহাসে স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ ট্র্যাজেডির শিকার ব্রাজিলিয়ান ক্লাব শাপেকোয়েনসের মাঠে প্রত্যাবর্তনের মুহূর্তটা আগাগোড়াই মোড়া থাকলো সীমাহীন আবেগ আর শোককে শক্তিতে পরিণত করার প্রত্যয়ে।

     

     

    গত নভেম্বরে কোপা সুদামেরিনাকানার ফাইনাল খেলতে কলম্বিয়া যাওয়ার পথে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন শাপেকোয়েনসের প্রায় সব খেলোয়াড়, দলের সফরসঙ্গী কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ৭১ জন। ওই ঘটনার পর এই প্রথম মাঠে নামে ক্লাবটি। পালমেইরাসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটিতে আদতে আনকোরা নতুন এক দলই মাঠে নামে শাপেকোয়েনসের জার্সিতে।

    দুর্ঘটনায় নিহত ৭১ জনের স্মরণে এ ম্যাচের ৭১ মিনিটের মাথায় খেলা সাময়িক বন্ধ রাখা হয় ভক্ত-সমর্থকদেরকে ‘ভামোস শেপ’ গানটি গাওয়ার সুযোগ করে দিতে। ওই ট্র্যাজেডি স্মরণে গাওয়া গানটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

    খেলা শুরুর আগে মাঝমাঠে অবস্থান নেন বেঁচে যাওয়া ৬ জন ও নিহত খেলোয়াড়দের পরিবারবর্গ। হুইলচেয়ারে করে অংশ নেন বেঁচে গেলেও পা হারানো দুর্ঘটনায় পা হারানো গোলরক্ষক জ্যাকসন ফলম্যান। দুর্ঘটনার পর বাতিল হয়ে যাওয়া ফাইনাল ম্যাচটিতে শাপেকোয়েনসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। এই ম্যাচের আগে সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানে সে টুর্নামেন্টের ট্রফি তুলে দেয়া হয় ফলম্যানের হাতে যেটি ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা। আবেগঘন অনুষ্ঠানটিতে নিহত খেলোয়াড়দের পক্ষে পদক গ্রহণ করেন তাঁদের স্ত্রী-পিতামাতা-স্বজনেরা।

     

     

    ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ম্যাচটা দেখতে এসেছিলেন সিজেলদা ফিলিপি, প্রিয় ক্লাবের নতুন করে শুরুর সাক্ষী হতে, “আজকে আমরা এখানে থাকার সুযোগটা নাও পেতে পারতাম। আবেগটা তাই আজ বাঁধভাঙ্গাই হবে, এরপর আবার এগিয়ে চলা...পুরোনো পথটায় নতুন করে।”