দুর্দান্ত ইউনাইটেডে অসহায় লেস্টার
মাত্র কয়েকমাস আগে এই কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামেই প্রিমিয়ার লিগ ট্রফি হাতে উৎসবে মেতেছিলেন মাহরেজ, ভার্ডিরা। বছর না ঘুরতেই সেই স্টেডিয়ামেই রাজ্যের হতাশা। আরও এক ম্যাচ, আরও একটি পরাজয়। চ্যাম্পিয়নদের চোখ রাঙাচ্ছে অবনমন! ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ৩-০ গোলে হারের পর অবনমনের শঙ্কাটা সত্যিকারভাবেই ভাবিয়ে তুলছে লেস্টার সিটিকে।
আজকের ম্যাচের পর ২১ পয়েন্ট ১৬ নম্বরে আছে লেস্টার সিটি। অবনমন অঞ্চলে থাকা তিন দলের পয়েন্ট ব্যবধান আক্ষরিক অর্থেই উনিশ-বিশ! শুধু আজকের এই হারটাই নয়, র্যানিয়েরির দলের চিন্তার কারন তাঁর দলের অসহায় আত্মসমপর্ন!
অবশ্য এর চেয়ে খুব বেশি কিছু করার তেমন কোনো সুযোগই ছিল না লেস্টার সিটির। দুর্দান্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সামনে একেবারেই দাঁড়াতে পারেনি ফক্সরা। প্রথমার্ধের শেষদিকে মিখিতারিয়ান আর ইব্রাহিমোভিচের দুই মিনিটের দুই গোলেই আসলে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল ম্যাচের ভাগ্য।
ওই দুই গোলের মাঝে ব্যবধান ছিল মাত্র ৮৮ সেকেন্ডের। ৪২ মিনিটে মাঝমাঠ প্রায় একক প্রচেষ্টায় গোল করেন মিখিতারিয়ান। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে লেস্টার ডিফেন্ডারদের সাথে গোলকিপার স্মাইকেলকেও ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান আর্মেনিয়ান এই উইঙ্গার।
এরপরই ম্যাচে আসে ইব্রা মুহূর্ত! ভ্যালেন্সিয়ার ক্রস ডি-বক্সের ভেতরে খুঁজে পায় ইব্রাহিমোভিচকে। সুইডিশ স্ট্রাইকারের নেয়া কিক গোলে রুপান্তর নেয়ার সাথে রেকর্ড বুকেও ঢুকে যায়। প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি বয়সে অন্তত ১৫ গোলের মাইলফলক ছোঁয়া একমাত্র খেলোয়াড় এখন তিনিই!
দুই গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও ভেঙে পড়ে লেস্টার ডিফেন্স। এবার হুয়ান মাতার গোলে সেই প্রায়শ্চিত্ত করতে হয় র্যানিয়েরির দলকে। মিখিতারিয়ানের সাথে ওয়ান-টু খেলে কোনাকুনি শটে গোল করে মরিনহোর সহজ জয় নিশ্চিত করেন মাতা।
হালের সাথে ঘরের মাঠে জিততে না পারার পর এই জয়টা স্বস্তি হয়েই আসল ইউনাইটেডের জন্য। সাথে সমর্থকদের জন্যেও নিয়ে এসেছে উদাযাপন করার মতো কিছু রেকর্ড! স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন আমল শেষ হবার এই প্রথম টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজেয় থাকল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একই সঙ্গে পয়েন্ট তালিকায়ও লিভারপুল, আর্সেনাল আর ম্যানসিটির সাথে শেষ চারে ওঠার লড়াইয়েই দারুণভাবেই ফিরে আসল মরিনহোর দল।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি অবশ্য অল্পের জন্য পয়েন্ট হারানোর হাত থেকে বেঁচে গেছে আজ। গ্যাব্রিয়েল জিসাসের করা ৯০ মিনিটের গোল গার্দিওলাকে টিকিয়ে রেখেছে লড়াইয়ে। সোয়ানসি সিটির বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে তাঁর দল।
দুই গোল করে ব্রাজিলিয়ান গ্যাব্রিয়াল জিসাসই সিটির জয়ের নায়ক। ১১ মিনিটে সিটির প্রথম গোলের পর ম্যাচ শেষের ৮ মিনিট বাকি থাকতে স্রোতের বিপরীতে গোল খেয়ে বসে গার্দিওলার দল। অন্তিম মুহুর্তে সিলভার ক্রস থেকে গোল করে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন জিসাস। প্রথম একাদশে সুযোগ পাবার পর টানা দুই ম্যাচেই গোলের দেখা পেলেন ব্রাজিলিয়ান এই স্ট্রাইকার। অন্যদিকে আজও সাইড বেঞ্চে থেকেই শুরু হয়েছিল আগুয়েরোর ম্যাচ।