২২ গজের সেলুলয়েড : এলগারের স্বস্তি-অস্বস্তি
বুড়ো বয়সে এলগারের অস্বস্তি
মার্করামের মাথায় হাত। ডিন এলগারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউট হয়ে অভিষেকেই সেঞ্চুরিটা মিস করেছিলেন মার্করাম, সেই ওপেনিং সঙ্গীর ভাগ্যটা তবুও মানতে পারছিলেন না, পারার কথাও নয়! প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে ১৯৯ রানে আউট হওয়া বা অপরাজিত ব্যাটসম্যান বনে গেছেন এলগার, যোগ দিয়েছেন ১২ জনের ‘অভাগা’ তালিকায়। টেস্ট শুরুর দিনে ৩০ বছর ১০৯ দিন বয়সী এলগারের চেয়ে এ তালিকায় আরও বুড়ো আছেন আর তিনজন, কুমার সাঙ্গাকারা (৩৪ বছর ২৩৯ দিন), স্টিভ ওয়াহ (৩৩ বছর ২৯৭ দিন) ও অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (৩৩ বছর ১৩২ দিন)। আরেক ক্ষেত্রে এলগার যোগ দিয়েছেন ম্যাথিউ এলিয়ট, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন ও লোকেশ রাহুলের সঙ্গে। এদের সবারই ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ রানই ওই ১৯৯, যদিও রাহুল বা এলগারের সামনে সুযোগ আছে সে আক্ষেপ দূর করার।
এলগারের অস্থির সময়
ব্যাটিংয়ের শেষটা দিয়েই যেন ফিল্ডিংয়ে শুরুটা করলেন ডিন এলগার। তাকে একমাত্র স্লিপ হিসেবে রেখেই বল করছিলেন কেশভ মহারাজ, মুশফিকুর রহিম সেখানেই দিলেন দুইবার ক্যাচ। দুইবারই এলগারের পিচ্ছিল হাত গলিয়ে বেরিয়ে গেল তা। একবার ৬ রানে, আরেকবার ১৫ রানে। মুশফিক পরে সেই মহারাজের বলেই দিলেন ক্যাচ, শর্ট লেগে মার্করামের হাতে। মহারাজকে অভিনন্দন জানাতে প্রথমেই ছুটে এলেন সেই এলগার, এরপর এলগার গেলেন মার্করামের কাছে, উচ্ছ্বাসের মাত্রাটা বেশি ছিল যেন সেখানেই! এলগারের অস্থির দিনে মহারাজের চেয়ে মার্করামই তো স্বস্তি দিলেন বেশি!
ওভার, ওভার নয়!
কেশভ মহারাজের ওভারের সময় বোলিং প্রান্তের আম্পায়ার ছিলেন ব্রুস অক্সেনফোর্ড। ওভার শেষ, তিনি স্কয়ার লেগে যাবেন। ক্রিস গ্যাফানির প্রান্ত থেকে বোলিং করবেন ডুয়ান অলিভিয়ার। গোলমালটা বাঁধলো তখনই। তৃতীয় আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা দুই অন-ফিল্ড আম্পায়ারকে জানালেন, বল একটা কম হয়েছে। তা হতেই পারে, এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। অক্সেনফোর্ড তার প্রান্তের স্টাম্পের কাছে আসলেন, মহারাজকে ডাকা হলো, ওপ্রান্তে অলিভিয়ারকে তার ক্যাপটা ফিরিয়ে দিলেন গ্যাফানি। এরপরই নিজের ভুলটা বুঝলেন ধর্মসেনা, আসলে আগের ওভারে তো হয়েছে ছয়টা ‘বৈধ’ বলই! যে যেখানে যাচ্ছিলেন, এরপর গেলেন সেখানেই!
টেস্টের বাঁকে বাঁকে আমলা
২০১০ সালে টেস্টে ৬০০০০তম উইকেট হিসেবে আউট হয়েছিলেন হাশিম আমলা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অনেক মাইলফলক ছোঁয়া ব্যাটসম্যান টেস্টের ইতিহাসেরও মাইলফলকে ছিলেন সেবার। ছয় বছর পর, ২০১৬ সালে হাশিম আমলা বনে গেলেন টেস্টে ১০০০০তম এলবিডাব্লিউয়ের শিকার। আজ শফিউলের বলে মিরাজের কাছে ক্যাচ দিয়ে নিজের ৮ম ‘ড্যাডি সেঞ্চুরি’ থেকে ১৩ রান দূরে থামলেন আমলা। আর হয়ে গেলেন টেস্টের আরেকটা মাইলফলক, তাকে দিয়েই ৭০০০০তম উইকেট দেখলো টেস্ট!
তামিম, নাম্বার পাঁচ
দিনের শেষটা ছয় মেরে শেষ করলেন তামিম ইকবাল। তামিম, বাংলাদেশের ৫ নম্বর ব্যাটসম্যান! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ওপেনার, এর চেয়েও বড় কথা, মুখোমুখি হন ইনিংসের প্রথম বলের। টেস্টে এর আগে ৯৮ ইনিংসে ব্যত্যয় হয়নি এর, হলো আজ। চা-বিরতির আগে বেশ কিছুক্ষণ মাঠের বাইরে ছিলেন, ফ্যাফ ডু প্লেসি ইনিংস ঘোষণা করে দেওয়াই নিয়মানুযায়ী নামতে পারলেন না ওপেনিংয়ে। ইমরুল দ্রুত ফিরলেন, তাও নামা হলো না। খানিক বাদে গেলেন লিটন দাস, তামিমের সময়ের ‘ক্ষতিপূরণ’ দেওয়া হয়নি তখনও। নামলেন মুশফিক ফিরে যাওয়ার পর। ৫ নম্বরের তামিম নিজের প্রথম ইনিংসটা কতো বড় করেন, সেটাই দেখার অপেক্ষা এখন।