তিন বছরের সম্মান হারাতে চান না মুশফিক
দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে এই প্রথম ৩০০ পেরুতে পেরেছে। সম্পূরক তথ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে এই প্রথম ১০০র নিচে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম তথ্যটা এখন নিশ্চয় হাস্যকর মনে হচ্ছে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যেভাবে ব্যাট করেছে, তাতে আসলে অজুহাত দেওয়ারও কিছু থাকে না। পচেফস্ট্রুম টেস্টের পর হতাশ মুশফিকুর রহিম তাই জানালেন, গত দুই তিন বছরে বাংলাদেশের আদায় করে নেওয়াটা সম্মানটা এভাবে হারাতে চান না।
দক্ষিণ আফ্রিকা উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য এমনিতেই অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ। ভারত এখানে ১৭টি ম্যাচের জয় পেয়েছে মাত্র দুইটিতে, ১২টি ম্যাচে পাকিস্তানেরও তাই। ১৩টি ম্যাচ খেলে শ্রীলঙ্কার জয় মাত্র একটিতে। জয় দূরে থাক, ড্র ই হতো বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। কিন্তু শেষ ইনিংসে এভাবে আত্মসমর্পণ করাটা অন্তত এই বাংলাদেশের গ্রাফের সঙ্গে বেমানান। মুশফিকও কোনো অজুহাত না দিয়েই দায়টা মাথায় নিলেন।
‘শেষ বাংলাদেশ কবে এরকম ব্যাট করেছে সেটা ভুলে গিয়েছিলাম। ১০০র নিচে কবে অলআউট হয়েছে সেটাও মনে পড়ছে না। হারারও অনেক উপায় থাকে। আমাদের অন্তত দুই সেশন খেলা উচিত ছিল। অধিনায়ক হিসেবে আমি খুবই হতাশ। খুবই খারাপ লাগছে। এখন আমাদের পরের টেস্টে একটা সুযোগ আছে, নইলে এরকম লজ্জা ছাড়া আমরা কিছুই নিয়ে যেতে পারব না। গত দুই তিন বছর ধরে আমরা যে সম্মান অর্জন করেছি সেটা যেন না হারাই। আমি এজন্য জাতি কাছে ক্ষমা চাইছি।’
মুশফিক মানসিকভাবে ভেঙে পড়াটাই দেখছেন বড় কারণ হিসেবে, ‘মানসিকভাবে নিজেদের অনুপ্রাণিত করতে না পারলে এটা আসলে যে কোনো দলের সঙ্গে হতে পারে। আমার মনে হয় এই ব্যাপারে আমাদের উন্নতি করার আছে। আমাদের দেখাতে হবে আমরা এতোটা খারাপ নয়।’
কিন্তু ব্যাপারটা কি অতি আত্মবিশ্বাসের জন্য হয়েছে? অন্তত সাব্বির, তাসকিন বা লিটন যেমন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছিলেন তাতে যে কোনো কিছুই মনে হতে পারে, বাংলাদেশ অধিনায়ক তা মানতে চাইলেন না, ‘অতি-আত্মবিশ্বাস না। আসলে অতি আত্মবিশ্বাস বলে কিছু নেই। স্কিল অনুযায়ী বা মানসিকভাবে আরেকটু শক্ত হতে হবে। এমন কোনো উইকেট ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকায় এরকম উকেট আমরা আশাও করিনি। আমি জানি না, হারার আগে কেন আমরা হেরে গেলাম। শেষ তিন বছরের সম্মান যেন না হারাই।’
মুশফিকের শেষ কথাটাই বলে দিচ্ছে, দ্বিতীয় ইনিংসে শুধু ব্যাটিং নয়, গুড়িয়ে গেছে দলের মনোবলও।