• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    কিক অফের আগেঃ সেই পেরুর ওপরেই আর্জেন্টিনার জীবন-মরণ

    কিক অফের আগেঃ সেই পেরুর ওপরেই আর্জেন্টিনার জীবন-মরণ    

     

     

    হয়তো চিত্রনাট্যটা এভাবেই সাজানো ছিল। বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য শেষ মুহূর্তের লড়াই, মুখোমুখি আর্জেন্টিনা-পেরু; লাতিন আমেরিকার বাছাইপর্বে এ তো নতুন কিছু নয়! আগেও কয়েকবার ঠিক একই পরিস্থিতিতে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। প্রতিবারই রোমাঞ্চের জন্ম দিয়েছে সেই ম্যাচ। আগামীকাল বাছাইপর্বের মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আবারো মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা-পেরু। কী ঘটবে এবার? ম্যাচ জিতে স্বস্তির হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়বেন মেসিরা, নাকি আর্জেন্টিনাকে রুখে দিয়ে বিশ্বকাপের পথে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে পেরু? শুক্রবার বাঙ্গালদেশ সময় সকাল সাড়ে পাঁচটায় জানা যাবে এই প্রশ্নের উত্তর 

     

    এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব একেবারেই ভালো কাটেনি আর্জেন্টিনার। নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ছিলেন না মেসি। বরখাস্ত হয়েছেন কোচ বাউজা। একের পর এক অপ্রত্যাশিত ফলাফল খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে তাদের। অন্যদিকে শুরুতে ভালো ফলাফল আনতে না পারলেও শেষ কয়েক ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পেরু।  ১৬ ম্যাচে দুই দলের পয়েন্টই এখন ২৪, গোল পার্থক্যও সমান। বেশি গোল করায় এগিয়ে আছে পেরু।

     

    কালই সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে পারে আর্জেন্টিনা কিংবা পেরু। সমীকরণটা এরকম, প্রথমেই নিজেদের ম্যাচে জিততে হবে। এরপর অন্য ম্যাচে ইকুয়েডরের কাছে হারতে হবে চিলির। অন্যদিকে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পরাজয় এড়াতে হবে কলম্বিয়াকে। তবে হেরে গেলে কিংবা ড্র করলে সরাসরি বিশ্বকাপ যাত্রা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে সাম্পাওলির দলের। শেষ পর্যন্ত সরাসরি বিশ্বকাপে না যেতে পারলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্লে-অফ খেলেই রাশিয়া বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে হবে আর্জেন্টিনাকে।

     

     

     

    ‘পেরু বাধা’ অবশ্য একবার আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিল। ১৯৬৯ সালে বাছাইপর্বের ঠিক এখনকার মতো পরিস্থিতিতেই আর্জেন্টিনার সাথে ২-২ গোলে ড্র করে ১৯৭০ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিল পেরু। সেবার বাছাইপর্বেই থেমে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার যাত্রা, ওই একবারই বিশ্বকাপে যেতে পারেনি তারা। এটার ‘মধুর প্রতিশোধ’ অবশ্য ১৯৮৫ সালে নিয়েছে ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা। সেবারও ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল ম্যাচটা, কিন্তু ওই ড্রই আর্জেন্টিনাকে পৌঁছে দিয়েছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপে। প্লে-অফে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপে আর যাওয়া হয়নি পেরুর। 

     

    তবে আর্জেন্টিনা-পেরু ম্যাচের কথা বললেই সবকিছু ছাপিয়ে সামনে আসবে ২০০৯ সালের বাছাইপর্বে আর্জেন্টাইন কোচ ম্যারাডোনার সেই উদযাপন। খাদের কিনারায় থাকা আর্জেন্টিনা ৯২ মিনিটে পালেরমোর গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে, নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে যাওয়াও। জয়ের ওই মুহূর্তে তুমুল বৃষ্টির ভেতর মাঠে ঝাঁপ দিয়ে ম্যারাডোনার সেই উল্লাস ছিল দেখার মতো।

     

     

    বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে পেরুর কাছে কখনোই হারেনি আর্জেন্টিনা। আট ম্যাচে ছয়টিতেই জিতেছে তারা, দুটি হয়েছে ড্র। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় পেলেই ১৯৮২ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নটা আর উজ্জ্বল হবে পেরুর। ম্যাচের আগেই উত্তেজনার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছে নিজ দেশ থেকে পেরুর পানি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা।

    এবারের বাছাইপর্বে আট ম্যাচ খেলেছেন মেসি, করেছেন ৪ গোল। শেষ দুই ম্যাচে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে পেরু অধিনায়ক পাওলো গেরেরোর গোলসংখ্যা ৫, আছেন দারুণ ফর্মে। কাল কি মেসির গোলেই হাসি ফুটবে আর্জেন্টাইন ভক্তদের মুখে? নাকি সেই হাসি কেড়ে নেবেন গেরেরো?