• বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
  • " />

     

    ভিন্ন উইকেটে অন্য বাংলাদেশ?

    ভিন্ন উইকেটে অন্য বাংলাদেশ?    

    কবে, কখন
    ব্লমফন্টেইন, ৬-১০ অক্টোবর
    ম্যাচ শুরু- বাংলাদেশ সময় দুপুর ২.০০টা 


    ‘এটা আমরা বাংলাদেশ অধিনায়কের ওপরই ছেড়ে দেব’, ফ্যাফ ডু প্লেসি টস নিয়ে প্রশ্নের জবাবটা দিলেন এভাবে। ইঙ্গিতটা পরিষ্কার, প্রথম টেস্টে টসজয়ের পর মুশফিকের সিদ্ধান্তের বিস্ময় যেন কাটেনি এখনও তার! টসের পর থেকে পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত যা হলো, সেটা কি খুব বিস্ময়কর কিছু? 

    র‍্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বর দলের সঙ্গে নয় নম্বর দলের খেলা। একদল দ্বিতীয় ইনিংসে বা শেষদিনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ৩৩৩ রানে হারবে, সেটা খুব একটা বিস্ময় জোগাতে পারবে না খোলা চোখে। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সও তাই ভ্রু কুঁচকে দেয়নি, বাংলাদেশ নয় নম্বর দল, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কন্ডিশন, এমন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক! 

    কিন্তু যে দলটা এর আগের সিরিজগুলোতেই টেস্ট হারিয়েছে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা (তাদের মাটিতেই), অস্ট্রেলিয়াকে, তখন এমন পারফরম্যান্স একটু হতাশা জাগাতেই পারে! তার ওপর দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে যদি পাওয়া যায় ধীরগতির, ফ্ল্যাট উইকেট, ‘বিদেশে দেশের ছোঁয়া’, যদি শেষদিনে দক্ষিণ আফ্রিকার ‘প্রধান’ পেসার চোটের কারণে ছিটকে যান, এরপরও যদি ৮৩ মিনিট ক্ষণস্থায়ী হয় শেষদিনের যাত্রা, যদি ৩৫ রানে পড়ে যায় শেষ ৭ উইকেট, হতাশা জাগতেই পারে! 

    দ্বিতীয় টেস্টটা তবে বাংলাদেশের জন্য সে হতাশা ভোলার সুযোগ। যদিও এবার আর আগের টেস্টের মতো সুযোগগুলো সেভাবে মিলবে না, ব্লমফন্টেইনের উইকেটে তো অপেক্ষা করে আছে একরাশ ঘাস! টেস্টেও বাংলাদেশে নতুন দিনের সারথিদের অন্যতম হয়ে ওঠা সাকিব আল হাসান নেই আগে থেকেই, এবার নেই তামিম ইকবালও। বাংলাদেশের সামনে পথটা তাই মসৃণ নয়, পচেফস্ট্রুমের ব্যাকভিউ মিররে তাকালে তো শুধু অন্ধকারই চোখে পড়বে। 

    বিন্দু বিন্দু আলো হয়ে দেখা দিতে পারে মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বিরদের ফিফটি, মুস্তাফিজের অন্য পেসারদের থেকে আলাদা হয়ে ওঠার চেষ্টা। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দ্বিতীয় টেস্টে এসব আলোবিন্দুর কোনোটিকেই হতে হবে উজ্জ্বল, অথবা জ্বলে উঠতে হবে একসঙ্গে। 

    তাহলেই যদি হতাশাগুলো ভোলা যায়। তাহলেই যদি কমানো যায় দুই ও নয় নম্বর দলের ব্যবধান। তাহলেই যদি বলা যায়, নতুন বাংলাদেশের নতুন এক পথচলা শুরু হচ্ছে ব্লমফন্টেইনে। যেখানে আবার ছিলেন না দুই দীর্ঘপথের সারথি! 

     
    রঙ্গমঞ্চ
    প্রথম ম্যাচের আগে পচেফস্ট্রুমের ঝুলিতে ছিল একটিই টেস্ট, সেটিও বাংলাদেশেরই। ব্লমফন্টেইনের ম্যানগও ওভালের অভিজ্ঞতা অবশ্য চারটি টেস্টের। সর্বশেষটি আবার সেই ২০০৮ সালে, যেখানেও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ ছিল এই বাংলাদেশই। সেবার বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ১২৯ রানে। তবে পচেফস্ট্রুমের চেয়ে ‘পরিষ্কার’ আবহাওয়া থাকার কথা এখানে, মাঝে একদিন ছাড়া বৃষ্টির তেমন কোনও পূর্বাভাস নেই। উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া আছে, প্রথম টেস্টের পর ফ্যাফ ডু প্লেসির প্রকাশ্য হতাশার কথা কিউরেটরদের কানে পৌঁছানোরই কথা। আর ঘাসের সঙ্গে থাকবে বাউন্সও, দক্ষিণ আফ্রিকার একদম নতুন (সবচেয়ে অভিজ্ঞ কাগিসো রাবাদা, অভিজ্ঞতা ২২ টেস্ট) পেস আক্রমণও কি টলিয়ে দেবে বাংলাদেশকে? 

     

    যাঁদের ওপর চোখ
    লিটন দাস 
    প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে উইকেটকিপিংয়ের পরপরই নেমে আসতে হয়েছিল ওপেনিংয়ে। লিটন দাসের শুরুটা আশাজাগানিয়া হলেও সেটা টেকেনি বেশিক্ষণ। দ্বিতীয় ইনিংসে আর সবার মতো তিনিও হতভম্ব হয়েই বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন উইকেট। তবে উইকেটের পেছনের লিটন ছিলেন দুর্দান্ত। তার কিপিং গ্লাভসের পারফরম্যান্সটা যদি ব্যাটিংয়েও অনূদিত হয়, বাংলাদেশ তো খুশিই হবে! 

    কেশভ মহারাজ
    তাকে খেলতে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা প্রথম টেস্টে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছেন। তবে উইকেট থেকে সুবিধা পেয়েছিলেন কেশভ মহারাজ। দ্বিতীয় টেস্টে তিনি কতোখানি সুবিধা আদায় করতে পারেন, সেটা একটা প্রশ্ন বটে। তবে নিজে থেকে যদি সুবিধা করে নিয়ে আবার অসুবিধা সৃষ্টি করেন বাংলাদেশীদের জন্য, মহারাজকেই তো কুর্নিশ করবেন সবাই! 


    সম্ভাব্য একাদশ
     
    বাংলাদেশ
    সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, লিটন দাস, মেহেদী হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ/রুবেল হোসেন/শুভাশীষ রায়। 
     
    দক্ষিণ আফ্রিকা 
    ডিন এলগার, এইডেন মার্করাম, হাশিম আমলা, ফ্যাফ ডু প্লেসি, কুইন্টন ডি কক, টেমবা বাভুমা, ওয়াইন পারনেল/ড্যান প্যাটারসন, অ্যানডাইল ফেহলুকায়ো, কেশভ মহারাজ, ডুয়ান অলিভিয়ার, কাগিসো রাবাদা। 
     
    সংখ্যার খেলা 

    • আর একটি সেঞ্চুরি হলেই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির তালিকায় গ্রায়েম স্মিথকে টপকে যাবেন ২৭টি সেঞ্চুরি করা হাশিম আমলা। যেখানে সবার ওপরে আছেন জ্যাক ক্যালিস, ৪৫টি সেঞ্চুরি নিয়ে। 
    • আর ১৭৫ রান হলে টেস্টে ২০০০ রান হবে মুমিনুলের, একই মাইলফলক ছুঁতে মাহমুদউল্লাহর লাগবে ১১৬ রান।