• বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
  • " />

     

    'দেজাভুঁতেই' শেষ ব্লুমফন্টেইন দুঃস্বপ্ন

    'দেজাভুঁতেই' শেষ ব্লুমফন্টেইন দুঃস্বপ্ন    

    দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৭৩

    বাংলাদেশ ১৪৭ এবং ৪২.৪ ওভারে ১৭২ (মাহমুদউল্লাহ ৪৩, ইমরুল ৩১, মুশফিক ২৬, রাবাদা ৫/৩০)

    ফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ও ২৫৪ রানে জয়ী

    ম্যাচসেরাঃ কাগিসো রাবাদা


     

    তৃতীয় দিনের আগে যেন ঠিকই করে রেখেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় দিনের দেজাভুই যেন হবে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ খেলতে পেরেছিল ৪২.৫ ওভার, এবার খেলল তার চেয়ে ঠিক এক বল কম।  সেবার করতে পেরেছিল ১৪৭ রান, এবার তার চেয়ে ২৫ রান বেশি হলো। এটুকু বাদ দিলে শরীরী ভাষায় বা ব্যাট করার ধরনে বদলাল না আর কোনো কিছুই। লজ্জা নিয়েই টেস্ট সিরিজ হলো বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে দুঃস্বপ্নের প্রহর দীর্ঘায়িত হলো আরেকটু।

     

    ম্যাচ যে তৃতীয় দিনের বিকেল পর্যন্ত যাচ্ছে না, তা বোঝা গিয়েছিল সকালে। শুরুটা হয়েছে সৌম্য সরকারের আউটে। অলিভিয়েরের শর্ট বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ধুঁকতে ধুঁকতে রাবাদার বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন ৩ রান করে।

    মুমিনুল যেভাবে আউট হলেন, সেটা আসলে একদম পরিকল্পনা করে ফাঁদে পা দেওয়ানোর মতৈ। একের পর এক শর্ট বল করছিলেন অলিভিয়ের-রাবাদা, মুমিনুল তা এড়িয়ে না গিয়ে পুলও খেলছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাবাদার বলেই পুল করতে গিয়ে টাইমিং হলো না, ডিপ স্কোয়ার লেগে দিলেন সহজ ক্যাচ। ফিরে গেলেন ১১ রান করেই।

     

     

    ইমরুল অবশ্য ভালোই খেলছিলেন। মহারাজের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছয়ও মেরেছিলেন। ৩০ পেরিয়ে বড় কিছুর যখন আশা দেখাচ্ছেন, তখনই ছন্দপতন। এবারও শর্ট বলেই হলো সর্বনাশ, অলিভিয়েরের বল লেগে ঠেলতে গিয়ে খোঁচা দিয়ে ক্যাচ দিলেন ডি কককে। ৬৩ রানে ৩ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

    তবে লাঞ্চ পর্যন্ত মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ কাটিয়ে দেবেন বলে মনে হচ্ছিল। মুশফিক তার আগেই অলিভিয়েরের বলে মাথায় আঘাত পেয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন, ভাগ্য ভালো বড় কিছু হয়নি। হেলমেট বদলে খেলছিলেন ভালোই। কিন্তু লাঞ্চের ঠিক আগে পারনেলের বল ছেড়ে দিতে গিয়ে লাইন মিস করে হয়ে গেলেন এলবিডব্লু।

    লাঞ্চের পর একটু আশা দেখাচ্ছিলেন লিটন-মাহমুদউল্লাহ, তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের যা একটু সুখস্মৃতি ওই সেশনেই। ৮ ওভারেই দুজনের জুটিতে ৪৩ রানও উঠে গিয়েছিল। কিন্তু ফেলুকায়োর বলটা ছেড়ে দিতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে গেছেন লিটন দাস, বাংলাদেশের শেষের ধসের শুরুটা তখনই।

    মাহমুদউল্লাহ অবশ্য দারুণ খেলছিলেন, সিরিজে বাংলাদেশের জন্য দুর্লভ আরেকটি ফিফটি থেকে সাত রান দূরত্বে ছিলেন। কিন্তু রাবাদার বলে কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দিইয়েছেন গালিতে, বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচে আগের মিসগুলোর দুঃখও নিশ্চয় কিছুটা ভুলেছেন ডিন এলগার।

     

     

    এরপর বাকিটা শুধু আসা যাওয়ার। তাইজুল ও রুবেলকে বোল্ড করেছেন রাবাদা, তার আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে হয়ে গেছে শততম টেস্ট উইকেটও।  এই টেস্টেই হয়ে গেছে ১০ উইকেট,  এই বছরেও সবচেয়ে বেশি উইকেট তাঁরই। রুবেল ও মুস্তাফিজের ১৬ রানের জুটিটা ভেঙেছেন ফেলেকায়ো। তাতেই শেষ হয়েছে আরেকটি দুঃস্বপ্ন, ২০১৪ সালের পর আরেকটি টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ।