• বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
  • " />

     

    এবার অন্তত চেষ্টাটা করতে পারল বাংলাদেশ

    এবার অন্তত চেষ্টাটা করতে পারল বাংলাদেশ    

    দক্ষিণ আফ্রিকা ২০ ওভারে ১৯৫/৪ (ডি কক ৫৯, ডি ভিলিয়ার্স ৪৯; মিরাজ ২/৩১সাকিব ১/২৮, রুবেল ১/৩৪)

    বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৭৫/৯ (সৌম্য ৪৭, সাইফ ৩৯*; ফেকলেকোয়াও ২/২৫, প্যাটারসন ২/২৯ )

    ফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ২০ রানে জয়ী


    ৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৯২, শেষ ১১ ওভারে দরকার ১০২ রান। সবচেয়ে বড় কথা, তখনো হাতে আছে আট উইকেট। সৌম্য সরকার আশা দেখাচ্ছিলেন বড় কিছুর, অন্য পাশে ইন ফর্ম মুশফিক। ১৯৬ রানের পাহাড় তখন আর অত দূরে নয়। শেষ পর্যন্ত ওই আশা শুধুই কুহকিনী, যথারীতি আরেকটি একরতফা পরাজয়ই লেখা রইল বাংলাদেশের ললাটলিপিতে। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিটাও ২০ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ।

    টি-টোয়েন্টিতে ২০ রান খুব ছোট ব্যবধান নয়। তবে বাংলাদেশ আজ যেমন খেলছিল, তাতে ব্যবধান আরও অনেক কম হতে পারত। শুরুটাই তো করেছিল বার্তা দিয়ে, প্যাটারসনের প্রথম বলটাই চার মারেন ইমরুল কায়েস। অন্যদিকে সৌম্যও শুরু থেকে ছিলেন দারুণ সপ্রতিভ। তবে টি-টোয়েন্টিতে নিজের বাজে রেকর্ডটা আরও একবার ধরে রাখলেন ইমরুল, ১০ রান করেই আউট হয়ে গেলেন হেনড্রিকসের বলে। বাংলাদেশ অবশ্য ৩.৫ ওভারে তুলে ফেলেছে ৪৩ রান।

    এরপর সাকিব আর সৌম্য মিলেও রানরেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন। ভালো খেলতে খেলতেই সাকিব আউট হয়ে গেলেন ১৩ রান করে। তবে সৌম্যর ব্যাটে অনেক দিন পর ছিল পুরনো ফর্মের ছোঁয়া, পাঁচটি চারের সঙ্গে দুইটি ছয়ও মেরেছেন হেনড্রিকস ও ফাঙ্গিসোর বলে।

    প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটি থেকে যখন সৌম্য তিন রান দূরত্বে, বাংলাদেশের আশাটা যখন আরকটু উজ্জ্বল হয়ে উঠছে, তখনই অঘটন। ফেকলেকায়র বলে প্রথমে আম্পায়ার আউট দেননি, কিন্তু রিভিউ নিয়ে শেষ পর্যন্ত সৌম্যকে আউট করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের আশার প্রদীপটা তখন জ্বালিয়ে দিয়েই গেছেন।

    একটু পরেই সেটি নিভু নিভু হয়ে গেল। সাকিবের মতো আনলাকি থার্টিনে বিদায় নিলেন মুশফিক, মাহমুদউল্লাহও মারতে গিয়ে ফিরে গেলেন ক্যাচ দিয়ে। ৯২ রানে দুই উইকেট থেকে ১০১ রানে পাঁচ উইকেট হয়ে গেল বাংলাদেশের, প্রদীপটাও প্রায় নিভে গেল তখনই। সাব্বির, মিরাজ, সাইফ উদ্দিনরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে রানের ব্যবধানটাই একটু কমাতে পেরেছেন। সৌম্য ও সাইফ ছাড়া আর কারও বিশ পেরুতে না পারা বলছে, আরেকটু বেশিক্ষণ কেউ সঙ্গ দিতে পারলে ম্যাচের ফলটা অন্যরকম হতেই পারত।

    অবশ্য ১৯৬ তাড়া করতে ইতিহাসই গড়তে হতো বাংলাদেশকে। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরই ১৯০, তার চেয়েও করতে হতো পাঁচ রান বেশি। মজার ব্যাপার, বাংলাদেশের আজকের স্কোরের (১৭৫) চেয়ে টি-টোয়েন্টিতে বেশি রান করতে পেরেছে মাত্র তিন বার। তার চেয়েও বড় কথা, সিরিজে এই প্রথম একটু হলেও করতে পেরেছে লড়াই।

     আগের ম্যাচগুলোর সাথে একটা পার্থক্য হয়ে গেছে ম্যাচের শুরুতেই। ওয়ানডে-টেস্টে শুরুতে একটা বড় জুটি গড়া যেন নিয়মই হয়ে গিয়েছিল স্বাগতিকদের। আজ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে এসে একটু ব্যতিক্রম হলো, দ্বিতীয় ওভারেই মেহেদী হাসান মিরাজের বল বাড়তি জায়গা নিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন হাশিম আমলা। ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা।

    কিন্তু খাল কেটে যেন কুমিরই আনল বাংলাদেশ। এবি ডি ভিলিয়ার্স নামার পর প্রথম পাঁচ বল দেখেশুনে খেললেন, এরপরে শুরু করলেন ঝড়। অবশ্য ঠিক ঝড় বলা উচিত হবে না, একটা ছয়ও মারেননি। কিন্তু পরের ১১ বলের মধ্যে মেরেছেন আটটি চার! এর মধ্যে শফিউলের এক ওভারেই মেরেছেন চারটি চার। অন্য পাশে ডি ককও ছয় না মেরেই খুন করার প্রতিযোগিতায় যোগ দিলেন। ফলাফল মাত্র ৯ ওভারেই উঠল ৯০ রান।

    এরপরই ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ, মিরাজকে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন ডি ভিলিয়ার্স। একটু পরেই ডি ককও আউট হতে পারতেন দুই রান নিতে গিয়ে। কিন্তু ফিফটি-ফিফটি সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বিপক্ষে গেছে বাংলাদেশের, বেঁচে গেছেন ডি কক। ওই ওভারেই অবশ্য কায়েসের দারুণ এক ক্যাচে ফিরে গেছেন ডুমিনি।

    তবে বাংলাদেশের সেরা ওভারটা হয়েছে ১৫তম ওভারে গিয়ে। একের পর এক ইয়র্কারে শেষ পর্যন্ত ডি কককে আউট করতে পেরেছেন রুবেল হোসেন। তখন মনে হচ্ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৮০ রানেও বেঁধে রাখতে পারে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি, শেষ দিকে ফারহান বেহারডিয়েনের ১৭ বলে ৩৬ রানের ইনিংসে ১৯৫ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।