• ত্রিদেশীয় সিরিজ
  • " />

     

    আবার বাংলাদেশের ফাইনাল-হতাশা

    আবার বাংলাদেশের ফাইনাল-হতাশা    

    শ্রীলঙ্কা ২২১, ৫০ ওভার (থারাঙ্গা ৫৬, চান্ডিমাল ৪৫, ডিকভেলা ৪২, রুবেল ৪/৪৬, মুস্তাফিজ ২/২৯) 
    বাংলাদেশ ১৪২, ৪১.১ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৭৬, মুশফিকুর ২২, মাদুশাঙ্কা ৩/২৬, চামিরা ২/২৬) 
    ফল- শ্রীলঙ্কা ৭৯ রানে জয়ী ও ত্রিদেশীয় সিরিজের চ্যাম্পিয়ন 


    ২০০৯ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল আনতে পারেন। যেহেতু মাহমুদউল্লাহ ছিলেন, আনতে পারেন ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালটাও। ফাইনাল, বাংলাদেশ, হতাশা, এতো কাছে তবু এতো দূর। সব এক সুতোয় গাঁথা, সব বিষাদকাব্য। সে তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম। মিরপুরে আরেকটি ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশকে ৭৯ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা। যে শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে নাকানিচুবানি খেয়েছে, হেরেছে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে- চ্যাম্পিয়ন সেই শ্রীলঙ্কাই! 

    টসে জিতে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ২২১, মিরপুরের এই উইকেটে শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হলো সেটাই। থারাঙ্গার সঙ্গে ডিকভেলা ও পরে চান্ডিমালের জুটি ছাড়া শ্রীলঙ্কা উইকেট হারিয়েছিল নিয়মিতই। শুরুতে গুনাথিলাকা মেহেদিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং-অফে ধরা পড়েছেন। সেই মেহেদির এক ওভারে ২৪ রানের ঝড় তুলেছিল্লেন মেন্ডিস, নিজে ৯ বলে ২৪ রানের পর থামলেন মাশরাফিকে পুলের ব্যর্থ চেষ্টায়, মিড-অনে ক্যাচ দিয়ে। 

    থারাঙ্গা- ডিকভেলার ধীরগতির কিন্তু বাংলাদেশের জন্য হতাশাজনক ৭১ রানের জুটি এরপরই। সাইফউদ্দিন দিয়েছেন ব্রেকথ্রু। লেগস্টাম্পের শর্ট বলে ডিকভেলা শট খেলেছিলেন আগেই, টপ-এজে ক্যাচ গেছে পয়েন্টে সাব্বিরের কাছে। 

    প্রথমে এলবিডাব্লিউর আবেদন, পরের বলেই আউট। প্রথমে থারাঙ্গা, মুস্তাফিজের বলে আম্পায়ার দিয়েছিলেন এলবিডাব্লিউ, রিভিউ নিয়ে বেঁচেছিলেন। পরের বলেই বোল্ড, চান্ডিমালের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি ভেঙেছে সেখানেই। এ উইকেট দিয়েই বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ৫০ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। রুবেলের শর্ট বলে আকাশে উঠলো থিসারা পেরেরার শট। এর আগের বলেই এলবিডাব্লিউর আবেদন নাকচ করেছিলেন আম্পায়ার।  

    গুনারত্নে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন রুবেলের বলে, আর চান্ডিমাল হয়েছেন বোল্ড। ইয়র্কারের চেষ্টায় এর আগে রুবেল ফুলটস দিয়ে ছয়ের শাস্তিও পেয়েছিলেন। দনঞ্জয়া কাভারে মুস্তাফিজের বলে ক্যাচ দিয়েছেন, মাদুশাঙ্কা বোল্ড হয়েছেন মুস্তাফিজের বলে। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয়েছে শেষ বলে গিয়েই, রান-আউটে। 

    আর বাংলাদেশের যাওয়ার শুরুটা হয়েছিল শর্ট বলে। 


    দুশমন্থ চামিরার শর্ট বল কাল হয়ে দাঁড়ালো প্রথমে তামিমের, পরে সাব্বিরের। কয়েকটা শর্ট বল তামিম ছেড়ে দিয়ে, বসে পড়ে, আলতো করে নিয়ন্ত্রণ করলেন, তবে সে পর্যন্তই। পুল করার চেষ্টা ব্যর্থ হলো মিডউইকেটে গিয়ে। সাব্বিরের অবস্থাও একই। এর মাঝে রান-আউট মিঠুন, সিঙ্গেলটা নিতে গিয়ে শুরুটা দেরি করেছিলেন, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে পেরেরার থ্রো করেছে বাকি কাজটা।

    মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের জুটিই ছিল এরপর। মাহমুদউল্লাহর বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার রিভিউ ব্যর্থ হলো, মুশফিক রিভিউ নিয়ে সফল হলেন। তবে সুইপের চেষ্টায় ব্যর্থ মুশফিক, আরেকবার। টপ-এজ, আউট। 

    দলে আসা মিরাজ ফিরতি ক্যাচ দিলেন দনঞ্জয়াকে, সাইফউদ্দিন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝির বলি। মাশরাফি ফুলটসে মিসহিট করে গেলেন, মাদুশাঙ্কার পরের বলে ব্যাট নামিয়ে আনার আগেই ছত্রখান রুবেলের স্টাম্প।

    ছিলেন শুধু মাহমুদউল্লাহ। ফিফটি করেছেন, বড় শট খেলে রান আর বলের ব্যবধান কমাতে চেয়েছেন, জুটি গড়তে চেয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত এবারও তিনি পরাজিত শিবিরেই! 

    মাশরাফি-রুবেলের উইকেট নিয়ে পরের ওভারের প্রথম বলে হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মাদুশাঙ্কা। মাহমুদউল্লাহ তাকে সে উপহারটা দিলেন। সাকিব ব্যাট করতে পারবেন না, ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরই তাই অল-আউট বাংলাদেশ।