লুকাকু দেখালেন, বড় ম্যাচেও তিনি পারেন
ম্যাচ নিয়ে দুই দলের ম্যানেজারের কথার লড়াই উত্তাপ ছড়িয়েছে অনেকদিন। হোসে মরিনহো আর আন্তো কন্তে অবশ্য ম্যাচের আগে করমর্দন করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মাঠের খেলাটাই আসল। প্রথমার্ধে ডাগআউটে দুজনের হাসি ঠাট্টাটাও চোখ এড়ায়নি কারোই। ম্যাচশেষে অবশ্য হেসেছেন একজনই, মরিনহো। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও চেলসিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। মরিনহোর দলের জয়ের পেছনে বড় অবদানটা রোমেলু লুকাকুর। এক গোলের সাথে অ্যাসিস্ট করে জানান দিয়েছেন তিনিও বড় ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন!
ওল্ড ট্রাফোর্ডে অবশ্য শুরুটা করেছিল চেলসিই। ইউনাইটেড কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডিবক্সের ভেতর থেকে দারুন এক শট করেছিলেন আলভারো মোরাতা। গোলটা পাননি বারপোস্টে বাধা পেয়ে। ফিরতি বলে এডিন হ্যাজার্ডও ভলি করেছিলেন, কিন্তু তাকে গোলবঞ্চিত করেছেন ডেভিড ডি গিয়া। ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট দুই প্রান্ত দিয়েই আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিলেন মার্কোস আলন্সো আর ভিক্টর মোসেসরা। এরপরই আসলে ঘরের মাঠে খেলায় ফেরে ইউনাইটেড। ২৮ মিনিটে ভালো জায়গায় বল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি অ্যালেক্সিস সানচেজ। কিন্তু এতোক্ষণ গোল হজম না করলেও খেলায় ফিরে কিছু করার আগেই উলটো পিছিয়ে পড়ে ইউনাইটেড। প্রতি আক্রমণ থেকে হ্যাজার্ডের দেওয়া পাস ইউনাইটেডের ডিবক্সের ঠিক বাইরে খুঁজে পায় উইলিয়ানকে। সেখান থেকেই নেয়ার পোস্টে শট করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার, গতির কাছে হার মানেন ডি গিয়া। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এই মৌসুমে এর আগ পর্যন্ত মাত্র ৫ বার গোল হজম করেছিলেন তিনি। নেয়ার পোস্টে গোল খেয়ে আফসোস তাই করতেই পারেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক।
৩২ মিনিটে উইলিয়ানের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি ম্যান ইউনাইটেড। ৪০ মিনিটে চেলসির ডিবক্সের বাইরে থেকে আক্রমণের শুরুটা করেছিলেন লুকাকু। এরপর সানচেজ-মার্শিয়ালদের সাথে ওয়ান টু করে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের ফিনিশে ইউনাইটেডকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তিনি। সাথে নিজের একটা অপবাদও ঘুচিয়েছেন ওই গোলে। আজকের আগ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের ‘বিগ সিক্সের’ বিপক্ষে কোনো গোলই ছিল না বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থেকেও আক্রমনে তেমন সুবিধা করতে পারেনি চেলসি। ড্যানি ড্রিংকওয়াটার দূরপাল্লার শটে একবার চেষ্টা করেছিলেন, প্রথমে কিছুটা অসুবিধা হলেও পরে অবশ্য সেই শট সহজেই তালুবন্দি করেছিলেন ডি গিয়া। বিরতির পর নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করতে ইউনাইটেডকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৬৭ মিনিট পর্যন্ত। ওই আক্রমণেই এগিয়ে যেতে পারত ইউনাইটেড। সানচেজের উড়িয়ে মারা বলে দারুন এক সাইড ভলি করেছিলেন লুকাকু। কিন্তু থিবো কোর্তোয়া লুকাকুকেও ছাপিয়ে গেলেন। লাফ দিয়ে এক হাতে বল উঠিয়ে দিলেন বারপোস্টের বাইরে দিয়ে। সে যাত্রায় আর তাই এগিয়ে যাওয়া হয়নি ইউনাইটেডের।
তবে ইউনাইটেডকে এরপর বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেননি কোর্তোয়া। বদলি হয়ে মাঠে নামার পর ১০ মিনিটেই খেলার চেহারা পাল্টে জেসি লিনগার্ড। ৭৫ মিনিটে লুকাকুই কাজটা করেছিলেন, ডান প্রান্ত দিয়ে চেলসির দুইজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের ভেতর পাঠিয়েছিলেন ক্রস। সেখান থেকেই হেডে গোল করে ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন লিনগার্ড।
পিছিয়ে পড়ার দুই মিনিটের মধ্যেই আবারও উইলিয়ান নেয়ার পোস্টেই শট নিয়েছিলেন ডিবক্সের ভেতর থেকে। কিন্তু তখন আর ভুল করলেন না ডি গিয়া। শেষদিকে অলিভিয়ের জিরু, পেদ্রো রদ্রিগেজ ফ্রান্সেস ফ্যাব্রিগাসদের মাঠে নামিয়েও আর সুবিধা করতে পারেননি আন্তোনিও কন্তে। হার দিয়েই ম্যাচ শেষ করতে হয়েছে চেলসি ম্যানেজারকে।