• ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজ
  • " />

     

    ব্রড-অ্যান্ডারসন-ওকসে বিধ্বস্ত ভারত

    ব্রড-অ্যান্ডারসন-ওকসে বিধ্বস্ত ভারত    

    দ্বিতীয় টেস্ট, লর্ডস
    তৃতীয় দিনশেষে
    ভারত ১ম ইনিংস ১০৭ অল-আউট ও ২য় ইনিংস ১৩০ অল-আউট
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৯৬/৭ ডিক্লে.
    ইংল্যান্ড ইনিংস ও ১৫৯ রানে জয়ী, সিরিজে ২-০তে এগিয়ে 


    অ্যান্ডারসনের হাতে একটা স্টাম্প, ম্যাচে তিনি নিয়েছেন নয় উইকেট। ক্রিস ওকসের হাতে একটা স্টাম্প, তার সেঞ্চুরি ছিটকে দিয়েছে ভারতকে, দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের কফিনে ঠুকেছেন শেষ পেরেক। একটা স্টাম্প আদিল রশিদের কাছেও। তিনি বোলিং করেননি, ব্যাটিং করেননি, ফিল্ডিংয়ে বল ছুঁয়েছেন ২৬ বার। দিনশেষে সবাই জয়ী দলের সদস্য। যে দল ১৭০.৩ ওভার খেলার মাঝেই উড়িয়ে দিয়েছে ভারতকে। চারদিনের একদিন বৃষ্টিতে হারিয়ে যাওয়ার পরও যে দল জিতেছে ইনিংস ও ১৫৯ রানে। সিরিজে ইংল্যান্ড এগিয়ে গেছে ২-০ ব্যবধানে। 

    আগের দিনের লিডের সঙ্গে আজ স্যাম কারানের উইকেটের ৩৯ রান যোগ করেই ইনিংস ঘোষণা করেছে ইংল্যান্ড। লর্ডসে মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশন, আরেকবার ভারত ব্যাটিং লাইন-আপকে পেয়ে বসার অপেক্ষা তখন অ্যান্ডারসনদের। 

    অ্যান্ডারসন সময় নিলেন না বেশি। মুরালি বিজয়কে ভেতরের দিকে ঢোকা বলের বাউন্সে ভড়কে দিয়ে করলেন কট-বিহাইন্ড, উপহার দিলেন ‘পেয়ার’, ৬ষ্ঠ ভারতীয় ওপেনার হিসেবে। সাত বছর আগে আজকের দিনেই বিরেন্দর শেওয়াগের সঙ্গে এমনটিই করেছিলেন অ্যান্ডারসন। আজ বিজয়ের উইকেট দিয়ে লর্ডসে ১০০ উইকেট হলো অ্যান্ডারসনের, দ্বিতীয় বোলার হিসেবে একই ভেন্যুতে উইকেটের সেঞ্চুরি ছুঁলেন তিনি। 

    লোকেশ রাহুল লেগসাইডের বাইরের বলে বাউন্ডারি মারলেন, তবে অ্যান্ডারসনের ওই ভেতরের দিকে ঢোকা বলে জবাব তৈরি করতে পারলেন না আজও। হলেন এলবিডব্লিউ। পিঠের চোটে ফিল্ডিংয়ে নামেননি বলে আগে ব্যাটিংয়ে নামতে পারলেন না কোহলি, এলেন চেতেশ্বর পুজারা, এলেন আজিঙ্কা রাহানে। 

    এরপর এলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। ক্রিস ওকসের প্রথম ইনিংসের বোলিংয়ের পর দলে যার জায়গা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। ব্রড সঙ্গে আনলেন ভয়ঙ্কর এক স্পেল, যাতে গুঁড়ে গেল ভারত। ৭-৪-৭-৪, ব্রডের স্পেলের ফিগারটাই আসলে বলে দিচ্ছিল সব! 

    অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট ছুঁড়ে ক্যাচ দিলেন ‘হতাশ’ রাহানে, ভারতীয় ব্যাটিংয়ের প্রতিচ্ছবিই যেন তখন তিনি। এরপর স্বপ্নালু এক ইনসুইংয়ে এলোমেলো পুজারার স্টাম্প। কোহলির আউটের সঙ্গে অবশ্য দৃশ্যপটে হাজির হলেন আম্পায়ার আলিম দারও। 

    প্রথমে কোহলির বিপক্ষে কট-বিহাইন্ডের রিভিউ নিল ইংল্যান্ড, রিপ্লে দেখালো, বল ছুঁয়েছে কোহলির বুকের একপাশ। পরের বলে শর্ট লেগে কোহলিকে ক্যাচ দিলেন দার, সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিলেন কোহলি। এবারও সঠিক দার, বুকে লাগার আগে বল ছুঁয়ে গেছে কোহলির গ্লাভস। পরের বলে এলবিডব্লিউ কার্তিক। আবার রিভিউ। আবার সঠিক দার! 

    এরপর ইংল্যান্ডের সময়ের অপেক্ষা। বৃষ্টির কারণে এগিয়ে আনা হলো চা-বিরতি। ভারতের তখন অল্প বৃষ্টিতে কাজ হবে না, প্রয়োজন সব ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কিছু। 

    সেটা হলো না। আরেকবার ভারতীয় ‘ব্যাটসম্যান’দের আশ্বিন দেখালেন, কিভাবে ব্যাটিং করতে হয়। সুইং, সিমের বিপক্ষে কিভাবে প্রস্তুত থাকতে হয়। বারকয়েক আঙ্গুলে আঘাত পেলেন, তবে থাকলেন অটল। অবশ্য টেইল-এন্ডারদের কেউ সমর্থনটা দিতে পারলেন না ভারতের ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরারকে। 

    অ্যান্ডারসনের বলে বোল্ড কুলদিপ, এলবিডব্লিউ শামি। আর শেষে লেগ-গালিতে ওকসের বলে ক্যাচ দিলেন ইশান্ত। সেই ওকস। যার ইনিংস ঘুরে দিয়েছিল ম্যাচের গতিপথ। সেই ওকস, যিনি দলে এসেছেন বেন স্টোকসের জায়গায়!