• লা লিগা
  • " />

     

    লা লীগা প্রিভিউঃ অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ

    লা লীগা প্রিভিউঃ অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ    

    সেই ২০০৪-'০৫ মৌসুমের পর থেকে লা লিগা অনেকদিন ধরেই রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সা - এই দুই ঘোড়ার দৌড়ই হয়ে ছিল। প্রায় ১০ বছর পরে, '১৩-'১৪ মৌসুমে এসে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। সেবার শেষ ম্যাচে গিয়ে ১০ম বারের মতো লীগ জিতে নেয় তাঁরা। রিয়াল- বার্সার আধিপত্যের অবসানেরও একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলো কি?

     

    না, আধিপত্য খর্ব তাঁরা করতে পারেনি। তবে রিয়াল এবং বার্সা উভয় দলেরই নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই। বার্সার সাথে যেমনই হোক, নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে পেলেই যেন তাঁদের উপরে ভর করছে অন্য কিছু। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের সাথে ৪-০ গোলের জয়ে তো “দুষ্টু লোকেরা” বলা শুরু করেছে ‘রিয়াল’ মাদ্রিদ মানেই অ্যাতলেটিকো।

     

    লা লিগা দরজায় কড়া নাড়ছে। এই শেষ সময়ে দেখে নিই, অ্যাতলেটিকো, বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ কতটা গুছিয়ে নিতে পারলো নিজেদেরকে। আজ প্রথম পর্বে থাকছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের কথা।

     

     

    ময়া আর ওবলাকেই আস্থা রাখছেন সিমিওনে

     

    থিবো কুর্তোয়া যতদিন অ্যাতলেটিকোতে ছিলেন ততদিন গোলবার নিয়ে চিন্তা ছিল  না অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের। কিন্তু তিনি চেলসিতে চলে যাওয়ার পরেই আসলে সমস্যাটা শুরু হয়। কে সামলাবেন গোলবার? ময়া আর ওবলাক ভাগাভাগি করে কাজ চালালেন। ময়া’র ২৭ ম্যাচে ১২ ক্লিনশিট, ৪৫ সেভ। অন্যদিকে ওবলাকের ১১ ম্যাচে ৭ ক্লিনশিট, ২১ সেভ। খুব খারাপ না অবশ্যই। তাই সিমিওনেও এবার আর নতুন গোলকিপার কেনেন নি। আস্থা রাখছেন এই দুজনের উপরেই।

     

     

    দুর্গ রক্ষার দায়িত্ব এবার বুড়োদের ওপরে

     

    এমনিতে অ্যাতলেটিকোর ডিফেন্স বরাবরই খুব আঁটোসাঁটো। গত মৌসুমে ৩৮ ম্যাচে মাত্র ২৯ গোল হজম করা সেটাই প্রমাণ করে। সেন্টারব্যাক মিরান্ডা এবার চলে গেছেন ইন্টার মিলানে। তাঁর অভাব পূরণের জন্য এসেছেন মন্টেনেগ্রোর তরুণ খেলোয়াড় স্টেফান সাভিচ। বয়স মাত্র ২৪ বছর। বিশ্বসেরা হওয়ার সকল উপাদানই আছে তাঁর মধ্যে। চেলসিতে এক বছরের ‘ভ্রমণ’ শেষে আবার ঘরে ফিরেছেন ফেলিপ লুইস। স্ট্রাইকারদেরকে ভুগিয়ে মারা ডিয়েগো গডিন তো আছেনই। আরও আছেন হুয়ানফ্রান। ডিফেন্স নিয়ে সিমিওনের মাথাব্যথার কোনো কারণ এখনো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।

     

    তবে এবারের চ্যালেঞ্জটা হতে পারে অন্যরকম। এই দলের অধিকাংশ ডিফেন্ডারের বয়সই যে প্রায় ৩০’র কাছাকাছি।

     

     

    মাঝমাঠের দখল কার হাতে? 

     

    অ্যাতলেটিকোর মিডফিল্ড কখনোই বলার মতো কিছু ছিল না। 'মিডিওকার' খেলোয়াড়রাই সবসময়ে টেনে নিয়ে গেছে অ্যাতলেটিকোকে। সেই মিডফিল্ডে পরিবর্তন বলতে আর্দা তুরান বার্সেলোনায় চলে গেছেন। তাঁর 'রিপ্লেসমেন্ট' হিসেবে মোনাকো থেকে সিমিওনে কিনে এনেছেন ইয়ানিক কারাসোকে। উইং দিয়ে তুরানের আক্রমণে যাওয়া অথবা প্রতিপক্ষের পেনাল্টিবক্সে দাপিয়ে বেড়ানো নিশ্চিতভাবেই মিস করবেন অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মারিও সুয়ারেজ উড়াল দিয়েছেন ফিওরেন্টিনার উদ্দেশ্যে। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব এবার গাবি, কোকে, রাউল গার্সিয়াদের উপরে।

    পারবেন তো তাঁরা?

     

     

    আক্রমণে নতুন অস্ত্র

     

    ডিয়েগো কস্তা চলে যাওয়ার পর থেকে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের অ্যাটাকিং যেন কোনভাবেই থিতু হতে পারছে না। গতবছর কস্তা চলে যাওয়ার পরে তাঁর রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে অ্যাতলেটিকো সাইন করিয়েছিলো মারিও মানজুকিচকে। তিনি এবার চলে গেছেন জুভেন্টাসে। আরেক স্ট্রাইকার রাউল জিমিনেজও চলে গেছেন বেনফিকাতে। ফারনান্দো টরেস আর গ্রিজম্যান আছেন; কিন্তু সেরা ফর্ম হারিয়ে ফেলা টরেসের বয়স হয়ে গেছে প্রায় ৩২। গ্রিজম্যান তাই নিজের কাঁধ কতটুকু চওড়া করতে পারবেন সে সন্দেহ আছেই। অ্যাতলেটিকোর একটা দুর্ধর্ষ নাম্বার নাইনের দরকার ছিল খুব। ভিলারিয়াল থেকে লুসিয়ানো ভিয়েত্তো আর পোর্তো থেকে জ্যাকসন মার্টিনেজকে কিনে আনায় অ্যাতলেটিকোর সমর্থকদের যে দুশ্চিন্তা কমবে তো বটেই, সাথে আক্রমণের ধার যে আরও বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

     

    ঘর মোটামুটি ভালোই গুছিয়েছে অ্যাতলেটিকো। এই স্কোয়াড নিয়ে তাঁরা কতদূর যেতে পারবে তা বলবে সময়। তবে অ্যাতলেটিকোর জন্য ট্রাম্প কার্ড হতে পারেন কোচ ডিয়েগো সিমিওনে নিজেই।

    ব্যাকব্রাশ করা এই ভদ্রলোকের ট্যাকটিকস যেকোনো সময়ে উল্টে দিতে পারে পাশার দান।

     

     

    '১৩-'১৪ মৌসুমের পরে এবার কি আবারো লীগ জিততে পারবে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ?

     


     

    আরো পড়ুনঃ

     

    লা লীগা প্রিভিউঃ বার্সেলোনা