কেপির জন্য দরজা খোলা রাখতে বলেছিলেন কুক
ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেনের জন্য দলে ফেরার জায়গাটা খোলা রাখতে বলেছিলেন অ্যালেস্টার কুক। নিজের শেষ টেস্টের আগে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে নামা সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলেছেন, ইসিবি ব্যাপারটা সামলাতে পারেনি তখন। সে সময় সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে কাজ করতো, তাও ইসিবি জানতো না।
২০১৩-১৪ অ্যাশেজের পর ইংল্যান্ড বাদ দেয় কেভিন পিটারসেনকে। সেই যে বাদ গেলেন, কেপি আর ফিরতে পারলেন না! “কেপি-সাগা”-তে মূল খড়গটা নেমে এসেছিল তখনকার অধিনায়ক কুকের ওপর। এরপর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ঘরের মাটিতে হার, ভারতের বিপক্ষে ১-০ তে পিছিয়ে যাওয়া। ইংল্যান্ড অবশ্য পরে ভারতের সঙ্গে সিরিজটা জিতেছিল, তবে এরপর বিশ্বকাপের মাত্র মাসদুয়েক আগে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল কুককে। কুকও আর ফিরতে পারেননি সীমিত ওভারে।
পিটারসেনকে এরপর দলে ফেরানোর ব্যাপারেও কথা উঠেছিল অনেক। সঙ্গে ছিল দর্শক-সমর্থক ও সোশ্যাল মিডিয়ার ক্রমাগত চাপ। কুক তখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন না, এখনও তার নিজের সেখানে কার্যকলাপ নেই। তবে কুকের মনে হয়, তখন ইসিবি জানতো না, সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে কাজ করে। ক্যারিয়ারে সবচেয়ে কঠিন সময় হিসেবে এটিকেই উল্লেখ করেছেন কুক।
“এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল। কোনো সন্দেহ নেই, এটা আমার ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলেছিল। যেদিন স্ট্রাউসি এসে বললো, কেভিন আর আমাদের হয়ে খেলবে না, আমার কাঁধ থেকে বিশাল এক বোঝা নেমে গিয়েছিল।
“আমি মূল সিদ্ধান্তে জড়িত ছিলাম। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক কাউকে আনা বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় না। আমি এটা মানি। তবে বলেছিলাম, ‘আমরা কেন তাকে কিছুদিন বিরতি দিচ্ছি না? আমরা চলে যেতে পারি, কেপি তো এরপর ফিরতে পারে।’
“স্ট্রাউসের পূর্বসূরি পল ডাউনটাউন স্বচ্ছতা চেয়েছিল, পরিষ্কার একটা বিরতি চেয়েছিল, কারণ লোকে জিজ্ঞাসা করছিল, পিটারসেন কবে ফিরবে এটা জানতে চেয়ে। তার সিদ্ধান্তের পক্ষে থাকতেই হতো, কারণ তার কাজই ছিল এটা।
কেপি বনাম কুক অধ্যায়ে এরপর কালো অধ্যায়, “এরপর যা হলো, সেটা খুবই বাজে। আমার মনে হয় না, ইসিবি এটা ঠিকঠাক সামলাতে পেরেছিল। তারা তখন বুঝতে পারেনি, সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে কাজ করত। আমার ওপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে, তবে অধিনায়ক হলে এমন হবেই।
“কেউ যদি বলে, আমি পিটারসেনকে সিঁড়ির দিয়ে ফেলে দিয়েছি, তাহলে তাকে ভুল প্রমাণ করতে হবে আমার। তবে আমি এই সিদ্ধান্তে জড়িত ছিলাম। আর আমার মনে হয়, তখন এটাই ঠিক ছিল। এক বছর পর কী হতো, আমি জানি না।
“ফিরে তাকালে বলতে পারি, আমি যা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সবই ইংল্যান্ড ক্রিকেটের তখনকার ভাল করার জন্য। আর সেই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আরও অনেকেই ছিল। আমার ওপরে অনেকেই ছিল, যারা জড়িত ছিল। আমার মনে হয়েছিল, অধিনায়ক হিসেবে যেন আমাকে একা ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
এরপর থেকেই দুটি পথ বেঁকে গেছে কুক ও পিটারসেনের, “সেদিনের পর থেকে আমি পিটারসেনের সঙ্গে কথা বলিনি। তবে সময় তো কতো ক্ষতই পূরণ করে দেয়! আমরা অনেক সময় কাটিয়েছি একসঙ্গে। দারুণ কিছু স্মৃতি আছে আমাদের। দুইজন মানুষ হিসেবে, আপনি যদি ক্রিকেটটা বাদ দেন, আমাদের মাঝে কলহের কিছু ছিল না। বরং ইন্টারনেটই এরপর থেকে আমাদের জন্য কলহ করেছে। তবে তার মতামত অবশ্যই ভিন্ন হবে, আমি নিশ্চিত।”