• ইউয়েফা নেশনস লিগ
  • " />

     

    পর্তুগালে বিবর্ণ ইতালি

    পর্তুগালে বিবর্ণ ইতালি    

    পোল্যান্ডের সঙ্গে ঘরের মাঠে ড্র করার পরই সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে ইতালির ওপর দিয়ে। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পরও নতুন দিনের স্বপ্ন দেখার জন্য অপেক্ষাটা কেবল বাড়ছেই ইতালির। পর্তুগালের বিপক্ষে সেই অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয়েছে কেবল। রবার্তো মানচিনি আরও একবার প্রস্তুত হতে পারেন সমালোচনায় বিদ্ধ হওয়ার জন্য। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোবিহীন পর্তুগালের কাছেও অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ইতালি, হেরেছে ১-০ ব্যবধানে। যদিও হারের ব্যবধানটা ম্যাচে পর্তুগালের দাপটের কথা বলছে না, বলছে না ইতালির অসহায়ত্বের কথাও।

    পর্তুগালের স্টাডিও ডা লুজে দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনেছিলেন মানচিনি। ইতালির শুরুর একাদশে ছিলেন না কোনো জুভেন্টাস খেলোয়াড়, ১৯৯৮ সালের পর এবারই প্রথম ঘটল এমন ঘটনা। আর পর্তুগাল দলে তো রোনালদো ছিলেনই না। তবে পর্তুগালের খেলায় তার অভাবটা টের পাওয়া গেল কম। শুরুতে দুই দল সমানে সমান লড়াই চালিয়ে গেলেও, আধ ঘন্টা পেরুতেই পার্থক্যটা বোঝা গেল। এর মধ্যে দুইবার ইতালি বেঁচে গেল ভাগ্যের সহায়তায়। বের্নার্দো সিলভার শট লাইন থেকে ক্লিয়ার করে রোমানয়োলি বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন ইতালিকে। আসলে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন জিয়ানলুইজি ডোনারুমাকে।
    উড়ে আসা বলের ফ্লাইট মিস করে বিপদ ডেকে এনেছিলেন ইতালির গোলরক্ষক। এর কিছুক্ষণ পর ব্রায়ান ক্রিস্টানটের গায়ে লেগে বল বাঁধা পায় বারপোস্টে, আত্মঘাতী গোল হজমের হাত থেকেও বাঁচে ইতালি।



    ৩৪ মিনিটে রেফারির সিদ্ধান্তও যায় ইতালির পক্ষে। আলেসান্দ্রো রোমানয়োলি আটকে রেখেছিলেন পিজ্জিকে। ডিবক্সের ভেতর অমন অদ্ভুত ফাউল করার শাস্তি পেনাল্টিই হতে পারত। কিন্তু রেফারি, সহকারি রেফারি সবার চোখ এড়িয়ে যায় ঘটনা। আদ্রিয়ান সিলভা, বের্নার্দো সিলভা, ব্রুমাদের আক্রমণের বিপরীতে অন্যপ্রান্তে ইতালি ছিল সাদামাটা। প্রথমার্ধে মাত্র ১৬৭ টি পাস দিতে পেরেছে ইতালি। অবশ্য জাজা, ইম্মোবিলেদের সমন্বয় ঠিক থাকলে হয়ত ইতালিও স্বল্প সুযোগ তৈরি করেও গোলটা আদায় করে নিতে পারত প্রথমার্ধে। আগের ম্যাচে খেলা বালতেল্লি দলেই ছিলেন না, ইনসিনিয়েও ছিলেন না একাদশে। তিনিও অবশ্য বালতেল্লির মত দর্শকই হয়ে থেকেছেন ম্যাচ শেষে।

    প্রথমার্ধে একাধিক বার বেঁচে গিয়েও ম্যাচে টিকেছিল ইতালি। কিন্তু বিরতির পর তারা পর্তুগালকে আটকে রাখতে পারল অল্প সময়ের জন্যই। রোনালদোর ৭ নম্বর জার্সি পরে খেলতে নামা ব্রুমাই করালেন গোলটা। ৪৮ মিনিটে তার পাসে গোলটা আসল আদ্রিয়ান সিলভার পা থেকে। এরপরের গল্পটা পর্তুগালের আক্রমণের বিরুদ্ধে ডোনারুমার প্রতিরোধের। ৫৪ মিনিটে বের্নার্দো সিলভার নিখুঁত শট এক হাতের দুর্দান্ত সেভ করেন ডোনারুমা। এরপর আরও অন্তত দুইবার পর্তুগালকে গোলবঞ্চিত করেন তিনি। বিশেষ করে মার্টিনেজ নামার পর পর্তুগালের আক্রমণে ধার বাড়লে ইতালিকে প্রায় একাই রক্ষা করেন ডোনারুমা।

    মানচিনিও পরিবর্তন করেছিলেন গোল হজমের পর, কিন্তু ভাগ্য বদলাতে পারেননি একজনও। শেষ ১৫ মিনিটে ক্রিসিতো আর বোনাভেনতুরা মিলে বাঁ দিক থেকে কয়েকটি ক্রস করেছিলেন। কিন্তু পেপে, রুবেন ডিয়াজরা ছিলেন সতর্ক। তাদের ফাঁকি দিয়ে বলের নাগাল পাননি জাজা, বা পরে নামা বেলত্তিও। আগের ম্যাচে ইতালিকে বাঁচানো জর্জিনিয়ো ফিকে হয়েছেন সময়ের সাথেই।
    ফার্নান্দো সান্তোসের দল তাই নেশনস কাপের শুরুটা করল জয় দিয়েই। আর ইতালির দুর্যোগ আরও বাড়ল তাতে।