• সিরি আ
  • " />

     

    রোনালদোর রেকর্ডের রাতটা মাটি করে দিল জেনোয়া

    রোনালদোর রেকর্ডের রাতটা মাটি করে দিল জেনোয়া    

    এই মৌসুমে তিনি গোল করেছেন আর জুভেন্টাস জেতেনি- এমনটা হয়নি এই মৌসুমে। আজ নিজেদের মাঠে জেনোয়ার বিপক্ষে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যখন লক্ষ্যভেদ করলেন, তখন হয়ত ‘সিরি আ’-তে টানা ৯ম জয়ের স্বপ্নতে মত্ত জুভেন্টাসের সমর্থকেরা। কিন্তু জেনোয়া আজ প্রমাণ করল, কেন এই মৌসুমের ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’ হিসেবে ধরা হচ্ছে তাদের। রোনালদোর পর বেসার গোলে ‘তুরিনের বুড়ি’দের থেকে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে এনেছে জেনোয়া। ১-১ গোলে ড্র হয়েছে ম্যাচটি। তবে এরপরও ৯ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই থাকল ইতালির চ্যাম্পিয়নরা।

    পুরো মৌসুমে আক্রমণের বাঁ-প্রান্তে খেলা রোনালদোকে আজ সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলিয়েছিলেন ম্যাক্সিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। কোচের আস্থার প্রতিদানটাও দিয়েছেন ‘সিআর৭’। ম্যাচের শুরু থেকেই স্বরূপেই ছিলেন তিনি। ম্যাচের ১৪ মিনিটেই লিড এনে দিতে পারতেন দলকে। কিন্তু হুয়ান কুয়াদ্রাদোর ক্রস থেকে রোনালদোর দুর্দান্ত হেড প্রতিহত হয় জেনোয়া গোলের বারপোস্টে। ফিরতি বল তার পায়ে আসলেও শট গোলে রাখতে পারেননি তিনি। তবে এজন্য খুব একটা ভুগতে হয়নি জুভেন্টাসকে। কারণ রোনালদোর শট বারপোস্টে প্রতিহত হওয়ার মিনিট চারেক পর লিড ঠিকই নেয় তুরিনের বুড়িরা।

     

     

    প্রথমবার হেরেছিলেন ভাগ্যের কাছে। কিন্তু এবার যেন সেই ভাগ্যই মুখ তুলে তাকাল তার দিকে। ১৮ মিনিটে হোয়াও ক্যান্সেলোর ক্রস জেনোয়া গোলরক্ষক ধরতে ব্যর্থ হলে ফাঁকা জালে ডানপায়ের আলতো টোকায় মৌসুমে নিজের ৫ম গোল করেন রোনালদো। এই গোলে দুর্দান্ত এক ‘মাইলফলক’ও ছুঁয়েছেন রোনালদো। ইউরোপের সেরা ৫ লিগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছিলেন আগেই। আজ জেনোয়ার বিপক্ষে গোল দিয়ে পূর্ণ করলেন একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ৪০০ গোলের ‘ল্যান্ডমার্ক’। লিড নেওয়ার পর থেকে জুভেন্টাসের কাছে আরও পাত্তা পায়নি জেনোয়া। গোছানো ফুটবলে বারবার তাদের ঝামেলায় ফেলছিলেন রোনালদোরা। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় জুভেন্টাসের পাওয়া সুযোগ গুলো এসেছে রোনালদোর পা থেকেই। ২৫ মিনিটে তার দূরপাল্লার শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন রাদু। প্রথমার্ধে ঐ এক ভুল ছাড়া বাকিটা সময় ছিলেন দুর্দান্ত। বিশেষ করে ৩২ মিনিটে রোনালদোর হেড এতটাই অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়েছিলেন, সেভের পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন স্বয়ং রোনালদো।

    প্রথমার্ধে তার গোলেই লিড নিয়েছিল জুভেন্টাস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নিজের এবং জুভেন্টাসের ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন রোনালদো। কিন্তু ৪৬ মিনিটে আবারও রোনালদোকে খালি হাতে ফিরিয়েছেন রাদু। তবে সময়ের সাথে দ্বিতীয়ার্ধে জেনোয়া শুরু থেকেই কিছুটা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকে। তবে আক্রমণের ধার বাড়ানো জেনোয়াকে দমিয়ে রাখতে তেমন সমস্যাই হয়নি বনুচ্চিদের। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই প্রতি-আক্রমণে খেলা জুভেন্টাসও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। রাদু ছিলেন দুর্দান্ত, সময়ের সাথে রোনালদোরাও কেমন যেন মিইয়ে গিয়েছিলেন। এই সুযোগেই সমায় ফেরে জেনোয়া। ৬৭ মিনিটে বল মাঠের বাইরে চলে গেছে ভেবে খেলা থামিয়ে দেয় জুভেন্টাস। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বল ছিল মাঠের ভেতরেই। তখনই কুয়ামের চমৎকার ক্রসে হেড করে দলকে সমতায় ফেরান বেসা। কিন্তু পরক্ষণেই সমতায় ফিরতে পারত জুভেন্টাস। কিন্তু ৬৯ মিনিটে অ্যালেক্স সান্দ্রোর ক্রসে রোনালদোর হেড চলে যায় জেনোয়া গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের আশায় পাওলো দিবালা, ডগলাস কস্তাকে নামিয়ে দেন অ্যালেগ্রি। ৭৭ মিনিটে দলকে লিড এনে দেওয়ার সবচেয়ে দারুণ সু্যোগটিই পেয়েছিলেন দিবালা। কিন্তু তার শটও রোনালদোর হেডের মত চলে যায় গোলের বাইরে দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে জুভেন্টাসের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন তিনিই। কিন্তু জালটাই আর খুঁজে পাওয়া হয়নি। রোনালদোর এক ‘নিষ্প্রভ’ দ্বিতীয়ার্ধের দিনে জ্বলে উঠতে পারেনি জুভেন্টাসও। সেজন্যই পয়েন্ট খুইয়ে মাঠ ছাড়তে হয় জুভেন্টাসকে।