• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    হিগুয়াইন-আগুয়েরো যখন প্রতিপক্ষ

    হিগুয়াইন-আগুয়েরো যখন প্রতিপক্ষ    

    আজ (রবিবার) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটি এবং চেলসি। মৌসুমের শুরুতে শিরোপার দাবিদার মনে হচ্ছিল দু'দলকেই। সিটি এখনও সেই কক্ষপথে থাকলেও ছুটকে গেছে চেলসি। শিরোপা নয়, মরিজিও সারির 'ব্লুজ'দের লক্ষ্য শীর্ষ চার-এ থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পাকা করা। চাহিদা ভিন্ন, লক্ষ্য একটাই। জয়ের বিকল্প ভাবার অবকাশ নেই কারোই। কিন্তু আজ ইউরোপের অন্যতম সেরা দুই দলের লড়াইটা ছাপিয়ে উঠে আসবে দুই লাতিন আমেরিকানের মধ্যকার দ্বৈরথ। আরও ভাল করে বললে দুই আর্জেন্টাইনের। সার্জিও আগুয়েরো এবং গঞ্জালো হিগুয়াইনের।

    ইউরোপের সেরা আর্জেন্টাইনের উপাধিটা আগেই নিজের করে নিয়েছেন বার্সেলোনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। লড়াইটা তাই দ্বিতীয় সেরা হওয়া। লড়াইটা মেসির 'আন্ডারস্টাডি' হওয়ার। ক্লাব ক্যারিয়ারটা দুজনেরই বেশ বর্ণাঢ্য। খেলে বেড়িয়েছেন ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোতে। আগুয়েরোর কথাই ধরা যাক। স্বদেশি ইন্দিপেন্দিয়েন্তে হয়ে যোগ দিয়েছিলেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। এরপর ম্যানচেস্টার সিটিতেই যেন ভিটেমাটি গড়ে নিয়েছেন। হিগুয়াইনের শুরুটা আগুয়েরোর মত হলেও আগুয়েরোর চেয়ে বড় 'যাযাবর' তিনি। রিভার প্লেট থেকে গায়ে চাপিয়েছিলেন আগুয়েরোর অ্যাটলেটিকোর নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের সাদা জার্সি। রিয়ালে ৭ বছর কাটিয়ে শুরু করেছিলেন নিজের 'ইতালিয়ান অ্যাডভেঞ্চার'। সিরি আ চষে বেড়িয়েছেন নাপোলি, জুভেন্টাস এবং এসি মিলানের হয়ে। এখন ধারে এসেছেন চেলসিতে। খুব সম্ভবত মৌসুম শেষেই তাকে পাকাপাকিভাবে কিনে নেবে সারির দল। জাতীয় দলে কম সুযোগ পাননি দুজন। ক্লাব ফুটবলের তুলনায় পরিসংখ্যান বা অর্জন রীতিমত নগণ্য দুজনেরই। 

     

     

    আর্জেন্টিনার জার্সিতে আগুয়েরোর করা ৩৯ গোলের বিপরীতে হিগুয়াইনের গোল ৩১টি। 'আলবিসেলেস্ত'দের হয়ে ম্যাচপ্রতি গোলগড়ও বেশি 'কুন'-এর। দুজনের মধ্যে বেছে নিতে হলে অধিকাংশ আর্জেন্টাইনই হয়ত বেছে নেবেন আগুয়েরোকেই। দুই কোপা আমেরিকা এবং এক বিশ্বকাপ ফাইনালে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে সমর্থকদের শূলে চড়েছিলেন 'এল পিপিতা'। সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে জয় নিশ্চিত করতে না পারায় তাকে হয়ত কখনোই ক্ষমা করবেন না আর্জেন্টাইনরা। ক্লাব ফুটবলে পরিসংখ্যান আবার ভিন্ন। দুজনই ইউরোপে পাড়ি জমানোর আগুয়েরোর গোলসংখ্যা (২৩১) হিগুয়াইনের (২২৬) চেয়ে সামান্য বেশি হলেও সিটি কিংবদন্তীর (০.৫৭) চেয়ে গোলগড়ে এগিয়ে আছেন হিগুয়াইন (০.৫৯)। আগুয়েরোর (৪) চেয়ে শিরোপাও বেশি হিগুয়াইনের (৫)।

     

    দুজনের জন্ম মাস ছয়েক আগে পরে, ইউরোপে আগমনটাও প্রায় একই সাথে। ইউরোপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজের, কিন্তু জাতীয় দলের জার্সিতে এখনও মলিনই আছেন দুজন। কিন্তু লড়াইটা যখন ক্লাব ফুটবলের, তখন নিজেদের সর্বোচ্চটাই দিয়েছেন দুজন। এই মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন আগুয়েরো, পিছিয়ে নেই হিগুয়াইনও। চেলসিতে প্রথম দুই ম্যাচে গোল না পেলেও স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে নিজের অভিষেকটা স্মরণীয় করে রেখেছিলেন জোড়া গোল দিয়েই। অনেকদিন ধরেই বিশ্বমানের এক স্ট্রাইকারের খোঁজে ছিল চেলসি। হিগুয়াইনের এমন পারফরম্যান্সে হয়ত আশার আলো দেখছেন সারি। স্পেন, ইতালির পর এবার ইংল্যান্ডে নিজেকে প্রমাণ করার পালা 'পিপিতা'র। আগুয়েরোর অবশ্য নিজেকে প্রমাণ করার কিছু নেই। তবুও 'হাই ভোল্টেজ' ম্যাচগুলোয় এখনও সিটির মূল ভরসা তিনিই। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আজ তাই ইউরোপের লড়াইয়ের আগুনে কিছুটা লাতিন আমেরিকান আঁচও যে থাকছে- তা অবশ্য বলাই যায়।