পানামাকে হারাতে পারল না ব্রাজিল
প্রতিপক্ষ পানামাকে নিয়ে ম্যাচের আগে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার কিছু ছিল না ব্রাজিলের জন্য। রাশিয়া বিশ্বকাপে খেললেও পানামার সেই দলের অনেকেই অবসর নিয়েছেন। আর আগের ৫ বার পানামার মুখোমুখি হয়ে প্রতিবারই জিতে ফিরেছিল ব্রাজিল। ৩২ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্রাজিলের কাজটা সহজই হবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু ওই গোল শোধ করে এরপর পানামা রক্ষণে গড়ে তুলল দূর্গ। ব্রাজিলের নামী দামী আক্রমণকে আটকে রাখল বাকিটা সময়ই। ১৬ বার গোলে শট করেও ব্রাজিল ফিরল ওই এক গোল নিয়েই। পর্তুগালের এস্তাদিও দো দ্রাগাওতে তাই প্রীতি ম্যাচটা স্বস্তির বদলে ব্রাজিলকে দিল নতুন চিন্তা।
ফিফা র্যাংকিং এর ৭৭ নম্বরে থাকা পানামার বিপক্ষে শুরুতে গুছিয়ে উঠতে একটু সময়ই নিয়েছিল ব্রাজিল। বলার মতো প্রথম ছিলেন না দলে, তবে পর্তুগালের মাঠে দর্শক সারিতে ছিলেন তিনি। তার জার্সি নম্বর পেয়েছিলেন লুকাস পাকেতা। এসি মিলান ফরোয়ার্ড দশ নম্বর জার্সি দাম রেখেছেন গোল করেই। ৩২ মিনিটে ডানদিক থেকে ফারপোস্টে ক্রস করেছিলেন কাসেমিরো, জায়গামতো ছিলেন পাকেতা। সিক্স ইয়ার্ড বক্সের ভেতর থেকে দারুণ এক ফিনিশে পাকেতা করেছেন ব্রাজিলের জার্সিতে নিজের প্রথম গোল। 'নতুন কাকা' নামে তাকে কেন ডাকা হয় সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন ওই এক গোলেই।
কিন্তু ওই গোলের পর ব্রাজিলের স্বস্তি উড়ে গেছে কয়েক মিনিটেই। ফ্রি কিক থেকে হেড করে চার মিনিট পরই গোল শোধ করেন পানামা অধিনায়ক আদোলফো মাসাদো। ব্রাজিল অবশ্য নিজেদের কপালের দোষও দিতে পারে। প্রীতি ম্যাচে ভিএআর ছিল না। তাই অফসাইড পজিশনে থেকেও পার পেয়ে গেছেন তিনি।
প্রথমার্ধে অবশ্য আর সেভাবে আক্রমণ করা হয়নি ফিরমিনো, কৌতিনহোদের। ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসনও কাটিয়েছেন অলস সময়। দ্বিতীয়ার্ধের অবশ্য একবার তাকে একবার পরীক্ষায় ফেলেছিলেন পানামার রদ্রিগেজ। ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষক সেই শট আটকে দিয়েছেন বামদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপরই শুরু হয় পানামার রক্ষণ বনাম ব্রাজিলের আক্রমণের লড়াইটা।
রিচার্লিসন ছিলেন ব্রাজিলের আক্রমণে সবচেয়ে উজ্জ্বল। ৫৯ মিনিটে গোলটা পেতে পেতেও পাননি তিনি। ফ্যাগনারের ক্রস থেকে ভলি করেছিলেন, কিন্তু ক্রসবারে আটকে গেছে গোলভাগ্য। আরেকবার পানামার তিনজন ডিফেন্ডার কাটিয়ে ডিবক্সের ভেতর ঢুকে গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ান পজিশনে চলে গিয়েছিলেন ব্রাজিল স্ট্রাইকার। তখন তার শট আটকে দিয়েছেন গোলরক্ষক মেহিয়া। পুরো ম্যাচেই তিনি বেশ কয়েকটি ভালো সেভ করেছেন, তার মধ্যে এটাই থাকবে সবার ওপরে। এরপর আরও একবার বারপোস্টের কারণে কপাল চাপড়াতে হয়েছে ব্রাজিলকে। সে দফায় কাসেমিরোর হেড গোলে পরিণত হয়নি।
এর মধ্যে একটা পেনাল্টিও পেতে পারত ব্রাজিল। পাকেতাকে ডিবক্সের ভেতর ফাউল করে ভালো জায়গা থেকে গোলে ঠিকমতো শট করতে বাধা দেন পানামা ডিফেন্ডার। কিন্তু রেফারির চোখ এড়িয়ে যায় সেই ঘটনাও। গ্যাব্রিয়েল হেসুস, ফিলিপে অ্যান্ডারসনদের নামিয়ে শেষদিকে আক্রমণে ব্রাজিল ধার বাড়ায় আরও, কিন্তু তাতে পাল্লা দিয়ে রক্ষণে মনোযোগী হয় পানামা। ব্রাজিল যখন ড্র নিয়ে হা হুতাশ করতে করতে মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন তাদের কপালে হারটাও জুটতে পারত অবশ্য। ইনজুরি সময়ের শেষ মিনিটে হোসে ফাহার্দো অল্পের জন্য লক্ষ্য মিস করেছেন, নইলে ইতিহাস গড়া এক জয়ও জুটে পারত পানামার ভাগ্যে! অবশ্য তাতেই বা কী, এই ড্র টাই তো তাদের জন্য জয়ের মতো।