• কোপা আমেরিকা
  • " />

     

    কোপার সেরা অ্যালিসন-আলভেজ-এভারটন

    কোপার সেরা অ্যালিসন-আলভেজ-এভারটন    

    এত আনন্দের মাঝেও হয়ত অ্যালিসন বেকারের একটু আক্ষেপ থাকতেই পারে। ফাইনালের ৪৪ মিনিটে থিয়াগো সিলভা যদি সেই হ্যান্ডবলটা না করতেন, তাহলে কোনো গোল হজম না করেই কোপার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেতে পারতেন এই ব্রাজিল গোলরক্ষক। পেরুর বিপক্ষে ফাইনালে একটি গোল হজম করলেও টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কারটা উঠেছে অ্যালিসনের হাতেই। কোপার এবারের আসরের সেরা ফুটবলার হয়েছেন ব্রাজিল অধিনায়ক দানি আলভেজ। তিন গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড এভারটন। 

    লিভারপুলের হয়ে গত মৌসুমটা দুর্দান্ত কেটেছে অ্যালিসনের। দল লিগ লিগের শিরোপা জিততে না পারলেও গোলপোস্টের সামনে তিনি অন্য কিপারদের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়েই ছিলেন। প্রিমিয়ার লিগে মোট ২১টি ম্যাচে গোল হজম করেননি অ্যালিসন, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ক্লাব ও জাতীয় দল মিলে তাঁর মোট ক্লিন শিট ৩৮টি। দুর্দান্ত সব সেভ করে লিভারপুলকে জিতিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগও। প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল্ডেন গ্লোভস উঠেছিল অ্যালিসনের হাতেই। শুধু কিপিংয়ের সুবাদে ব্যালন ডি অর জিততে পারবেন কিনা অ্যালিসন, কথা হয়েছে এটা নিয়েও।

    লিগের মতো কোপা আমেরিকাতেও গোলপোস্টের অতন্দ্র প্রহরী ছিলেন অ্যালিসন। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে গোল হজম করেননি। কোয়ার্টার ও সেমিতেও তাঁর বাধা পেরোতে পারেননি প্রতিপক্ষের কেউ। চোখ ধাঁধানো সব সেভে ব্রাজিলকে অন্যদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছেন অ্যালিসন। বিশেষ করে সেমিতে লিওনেল মেসির দারুণ একটি ফ্রি কিক আটকে গিয়েই প্রমাণ করেছেন, এবার তাকে পরাস্ত করা মোটামুটি অসম্ভব।  

    সেই 'অসম্ভব' কাজটা কাজটা করেছেন পেরুর পাউলো গুরেরো। সেটা অবশ্য ওপেন প্লেতে নয়, পেনাল্টিতে। ছয় ম্যাচে এই একটি মাত্র গোলই হজম করতে হয়েছে ব্রাজিলকে। অনুমেয়ভাবে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কারটা উঠেছে অ্যালিসনের হাতেই। 

    কোপা শুরুর কিছুদিন আগেই জানানো হয়, নেইমার নন, ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দেবেন ৩৬ বছর বয়সী আলভেজ। অধিনায়ক হিসেবে যে দায়িত্বটা পেয়েছিলেন, সেটা খুব ভালোভাবেই পালন করেছেন তিনি। কোপা শুরুর আগে কাতার ও হন্ডুরাসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে তাঁর অধীনে হেসেখেলেই জিতেছিল সেলেসাওরা। এরপর অপরাজিত থেকেই ১২ বছর পর কোপার শিরোপা ঘরে তুলেছে ব্রাজিল। ছয় ম্যাচে আলভেজ গোল করেছেন একটি। প্রথম ফুটবলার হিসেবে ৪০টি ট্রফি জয়ের কীর্তি গড়লেন তিনি। 

    ছয় ম্যাচে তিন গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা ব্রাজিলের এভারটন সোয়ারেস। গ্রেমিওর হয়ে শেষ দুই মৌসুমে দারুণ ফর্মে ছিলেন ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড, করেছেন ২৬ গোল। গত বছরের আগস্টে অভিষেক হওয়া এভারটন কোপার আগে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন মাত্র ছয় ম্যাচ, গোল পাননি একটিও। 

    কোপার প্রথম দুই ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন এভারটন। বলিভিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ৮৫ মিনিটে গোল করেন তিনি। পেরুর বিপক্ষে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এভারটন, সেই ম্যাচে করেছেন একটি অ্যাসিস্টও। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিতে গোল পাননি। পেরুর বিপক্ষে ফাইনালে ১৫ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন এভারটন, ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনিই। তিন গোল ও এক অ্যাসিস্টে টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বুট জিতেছেন এই ফরোয়ার্ড। তিন গোল করেছিলেন পেরু অধিনায়ক গুরেরোও, তবে তাঁর কোন অ্যাসিস্ট ছিল না।