• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    'রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে' আইসিসির সদস্যপদ স্থগিত জিম্বাবুয়ের

    'রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে' আইসিসির সদস্যপদ স্থগিত জিম্বাবুয়ের    

    আইসিসির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে জিম্বাবুয়ের। লন্ডনে আইসিসির বার্ষিক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানানো হয়েছে। মূলত ক্রিকেট বোর্ড পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত। আইসিসি সংবিধানের ২.৪ ধারার 'সি' ও 'ডি' অনুচ্ছদে লঙ্ঘন করেছে তারা। পূর্ণ সদস্যপদ ছিল জিম্বাবুয়ের, সেটি স্থগিত হওয়ায় আইসিসির ফান্ডিং পাবে না তারা, আইসিসির ইভেন্টে অংশগ্রহণও করতে পারবে না। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে অনতিবিলম্বেই। 

    আইসিসি থেকে বলা হয়েছে, পূর্ণ সদস্য হিসেবে একটি গণতান্ত্রিক ও হস্তক্ষেপমুক্ত নির্বাচন এবং ক্রিকেট প্রশাসনে সরকারী হস্তক্ষেপমুক্ত রাখার শর্ত পালনে জিম্বাবুয়ে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আইসিসির সব ফান্ডিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে তাদের সামনে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির বাছাইপর্বে অংশগ্রহণও অনিশ্চিত এখন।  

    গত মাসে জিম্বাবুয়ের সরকারের স্পোর্টস ও রিক্রিয়েশন কমিশন পুরো ক্রিকেট বোর্ডকেই বহিষ্কার করেছিল। আইসিসির এই বার্ষিক সভায় তাদের হয়ে কে অংশগ্রহণ করবেন, অনিশ্চিত ছিল সেটিও। বোর্ডকে বহিষ্কার করার পর একটা অন্তর্বর্তীকালিন কমিটি নিয়োগ করেছিল জিম্বাবুয়ে সরকার, যা ছিল আইসিসির নিয়ম বিরোধী। 

    আইসিসি প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর বলেছেন, সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না তাদের জন্য, “আমরা কারও সদস্যপদ স্থগিত করাটা হালকাভাবে নেই না। তবে আমাদের খেলাকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে অবশ্যই মুক্ত রাখতে হবে। 
     


    “জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে যা হয়েছে, তা আইসিসির সংবিধানের খুবই গুরুতর লঙ্ঘন। আমরা এটা এভাবে চলতে দিতে পারি না। আইসিসি জিম্বাবুয়েতে ক্রিকেট আইসিসির সংবিধান মেনেই চলুক, এটা চায়।” 

    পূর্ণ সদস্য হিসেবে বছরে প্রায় ৯ মিলিয়ন পাউন্ড পেত জিম্বাবুয়ে। তবে সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডে মেয়েদের দলের একটি সফর স্থগিত করা হয়েছিল আর্থিক সঙ্কটের কারণে। জিম্বাবুয়ের সরকারের স্পোর্টস ও রিক্রিয়েশন কমিটির চেয়ারম্যান জেরাল্ড ম্লোতশয়া এর আগে অভিযোগ করেছিলেন, বোর্ড স্থগিত করার পর কোনও স্টাফই কাজে আসছেন না। 

    এর আগে নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ স্থগিত করেছিল আইসিসি। তবে তাদেরকে চালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছিল খেলা। অক্টোবরে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি বাছাইপর্বে জিম্বাবুয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা, সেটি নিশ্চিত নয় অবশ্য। 

    ইএসপিএনক্রিকইনফো বলছে, বোর্ডে নির্বাচিত প্রতিনিধি ফিরিয়ে আনতে তাদেরকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। সেসব পদক্ষেপেরই ধারাবাহিকতায় এ ব্যাপারে আবারও অক্টোবরে আইসিসি মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

    জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে টালমাটাল অবস্থা চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। ২০১৯ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব পেরুতে পারেনই তারা, এরপর তাদের হেড কোচ, অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচককে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এরই মাঝে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটকে ছেড়ে গেছেন ২২ বছর বয়সী পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি, যিনি পাড়ি জমিয়েছেন ইংল্যান্ডে। যোগ দিয়েছেন ইংলিশ কাউন্টি নটিংহ্যামশায়ারে। এর আগে সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার তার ক্যারিয়ার স্থগিত রেখে পরিবারের কাছে দুবাইয়ে চলে গেছেন। 

    আর অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজাসহ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে বোর্ডের দ্বন্দ্ব অবশ্য মিটেছিল। তবে আপাতত জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে শুধুই নিকষ অন্ধকার।