টেস্টে রশিদদের চেয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখছেন মিরাজ
একদিকে রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, জাহির খান। আরেক দিকে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যুযুধান মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসানরা। বাংলাদেশ সবুজ উইকেট বানানোর কথা বললেও লড়াইটা শেষ পর্যন্ত হয়তো হবে দুই দলের স্পিনারদের মধ্যে। তবে মিরাজ মনে করছেন, টেস্ট বলেই বাংলাদেশের স্পিনাররা এগিয়ে থাকবেন আফগানদের চেয়ে।
মিরাজের কথা অবশ্য ফেলে দেওয়ার উপায় নেই। আফগান অধিনায়ক রশিদ খান এখন পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বিস্তর বল করে ফেললেও টেস্টে অভিজ্ঞতা মাত্র দুই ম্যাচের। প্রথম শ্রেণীর ম্যাচই খেলেছেন শুধু ছয়টি। মোহাম্মদ নবীর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও খেলেছেন মাত্র ৩৪টি ম্যাচ। মিরাজ যেখানে চার বছরেই খেলেছেন ৩৫টি ম্যাচ। অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখছেন মিরাজ, ‘একটা জিনিস দেখেন যে আমাদের বোলারদের অভিজ্ঞতা অনেক। বিশেষ করে সাকিব ভাই। অলমোস্ট ১৩-১৪ বছর ক্রিকেট খেলে ফেলেছে, সাকসেসফুল প্লেয়ার, ওয়ার্ল্ড ক্লাস বোলার ব্যাটিং আমরা জানি অলরাউন্ডার। এবং তাইজুল ভাই হয়ত আর একটা উইকেট পেলে একশত উইকেট হবে। আমারও হয়ত ৩-৪ কছরের এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে। এই তিন চার বছরে আমার যে এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে; আমি বলব ওদের থেকে আমারদের টেস্ট ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা ভাল।’
সীমিত ওভারের চেয়ে টেস্ট যে আলাদা, সেটাও বিস্তারিত বললেন মিরাজ, ‘আমি বলব ওয়ানডে ক্রিকেট ও টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের চাইতে টেস্ট ক্রিকেট অনেক অন্যরকম। যেটা ওদের স্পিনাররা করে আসছে। যেমন ওরা ওয়ানডে টি টোয়েন্টিতে রান সেভ দিয়ে বল করে বা বিভিন্ন জায়গা বল করে থাকে। এটার জন্য হয়ত ব্যাটসম্যান চার্জ করে থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে কিন্তু ওইরকম কিছু নাই যে জোর করে মারা বা চার্জ করে খেলা। যতক্ষণ ভাল করবে ততক্ষণ টিকে থাকবে। একটা খারাপ করলে ওটাই মারবে। কতটুকু করবে বা কতটুকু প্রস্তুতি নিয়ে আসবে সেটা ওরাই ভাল জানে। বাট আমি মনে করি ওদের থেকে টেস্ট ক্রিকেটে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। আমরা শতভাগ দিতে পারলে ফলাফল আমাদের দিকেই আসবে।’
কিন্তু বোর্ডের কাছ থেকে আভাস এসেছে, বাংলাদেশ পেস বান্ধব উইকেটের দিকে ঝুঁকতে পারে। সেক্ষেত্রে স্পিনারদের ভূমিকা কী হবে? মিরাজদের ভূমিকা সেক্ষেত্রে কেমন হবে? এই অফ স্পিনার অবশ্য এ নিয়ে ভাবছেন না, ‘স্পিনার হিসেবে আমরা সব কন্ডিশনেই খেলতে অভ্যস্ত। আমাদের যে উইকেটই দিক না কেন আমরা প্রস্তুত। যেটা আসলে দলের জন্য, আমাদের জন্য ভাল হয়। এবং নট অনলি স্পিন বা পেস বা ব্যাটিং ভাল উইকেট। আসলে টেস্ট ক্রিকেট সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হয়। যে টাইপের উইকেটই হোক না কেন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’
চট্টগ্রামের উইকেটে মিরপুরের চেয়ে ঐতিহ্যগতভাবে স্পিন একটু কম ধরে। বাংলাদেশ কি তাহলে নিরাদপদ পথে হাঁটল? মিরাজ ভাবনাটা সরিয়ে রাখলেন এক পাশে, ‘আসলে মিরপুর চিটাগং যেখানেই খেলা হোক না কেন সবই আমাদের গ্রাউন্ড আমাদের হোম কন্ডিশন। আমরা জানি কীভাবে হবে না হবে। এর আগে ওরা আমাদের কন্ডিশনে ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি খেলেছে টেস্ট খেলেনি। বাট আমরা আমাদের কন্ডিশন সম্পর্কে জানি। আমরা চেষ্টা করব আমাদের কন্ডিশন কাজে লাগানার জন্য। যেহেতু একটা টেস্ট, দুইটা টেস্ট থাকলে হয়ত মিরপুরেও খেলা থাকত। যেহেতু সুযোগ আছে আমাদের চিটাগংয়ে হয়ত ওখানে কন্ডিশনে আমরা খাপ খাইতে নিতে পারব, ভাল ক্রিকেট খেলতে পারব। হয়ত আমাদের ব্যাটম্যানদের রান করার সুযোগ বেশি থাকবে।’
আফগানদের প্রস্তুতি কেমন, তা ২ আগস্ট থেকে শুরু প্রস্তুতি ম্যাচে কিছুটা বোঝা যাবে। ৫ আগস্ট থেকে প্রথম টেস্ট শুরু চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।