'রেজা ইজ অলওয়েজ রেডি'
প্রশ্নটা মাটিতেও পড়তে দিলেন না তিনি। মৃদু হেসে বললেন, ‘রেজা ইজ অলওয়েজ রেডি।’
মিরপুরে ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে ঘামতে ঘামতে কথাগুলো যখন বলছিলেন, জাতীয় দলের অনুশীলন প্রায় শেষ হয়ে গেছে। ফিল্ডিং সেশন শেষ করেই, নেটে যে যার মতো ব্যাট-বলে নিজেদের ঝালাই করে নিচ্ছেন। ফরহাদ রেজাও করে ফেলেছেন একদফা। কিন্তু সামনের টেস্ট সিরিজে কি সুযোগ পাবেন? নাকি টি-টোয়েন্টি দলের স্কোয়াডেই আবার ডাকা হবে?
রেজা অবশ্য বললেন, টি-টোয়েন্টিই তার পছন্দের খেলা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্যই মূলত তাকে বিবেচনা করা হয়েছে তাকে, টেস্টে এখন পর্যন্ত খেলেননি কোনো ম্যাচ। ৩৩ বছর বয়সে এসে যে খেলবেন, সেই সম্ভাবনাও খুব কম। কিন্তু রেজা যা বললেন, এই ফরম্যাটে যখন তাকে সুযোগই দেওয়া হয়নি তখন ভালো না খারাপ করবেন সেটা কীভাবে বোঝা যাবে?
‘আমি অনেকদিন ধরে বাইরে আছি। আমাকে তো আগে খেলতে হবে। যেহেতু আমি অনেক দিন পিছিয়ে আছি। কিন্তু আমি ক্রিকেটই খেলেছি। এই জায়গায় তো ক্রিকেটই খেলবো। আমাকে তো নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা দিতে হবে। জায়গা পাওয়াটা আমার হাত না। আমার কাজ পারফর্ম করা, ভালো খেলার চেষ্টা করা। তাও যদি না হয় তা আমার হাতে না।’
এমন নয় যে ঘরোয়া লম্বা দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্স খারাপ। গত জাতীয় লিগে পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট ছিল তার। ৫ হাজারের কাছাকাছি রান ও ২৭২ উইকেট বলছে, এই ফরম্যাটে অন্তত ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ঘরোয়া লিগে নিজের এই পারফরম্যান্স কি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানেন? ফরহাদ সেরকমই বললেন, ‘ক্যাপ্টেন জানে, ওর সাথে এই নিয়ে কোনো কথা হয়নি বাট সে সব জানে। এটা সে সবসময়ই বলে পারফর্ম করবেন থাকবেন, পারফর্ম করবেন না চলে যাবেন। ’
কিন্তু টেস্টে যদি সুযোগ পেয়েই যান, টানা বল বা ব্যাট করার জন্য যে ফিটনেস দরকার সেটা কতটুকু আছে? ট্রেনার তুষার কান্তি, জয় ও ফিজিও বায়েজীদ ইসলামকে কৃতিত্ব দিলেন সেজন্য, ‘তুষার দাকে ধন্যবাদ, জয় এবং বাইজিদ। আজকে পাঁচ বছর পর আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। তাঁরা আমার সঙ্গে কাজ করছে। ফিটনেস খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুশফিক ব্যাটিং করছে। কেউ রানিং করছে। এখন সবাই বুঝে গেছে আপনি যদি ফিটনেস ধরে রাখেন তবে অনেকদিন খেলতে পারবেন।’
জাতীয় দলের বিশেষ করে পেসারদের নিয়ে ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়েন সন্তুষ্ট না হলেও ফরহাদ বলছেন, পেসারদের টানা বল করার ফিটনেস আছে, ‘আপনি চার দিনের খেলাগুলি দেখেন, দেখছেন পেস বোলাররাই বেশি বল করে থাকেন। স্পিনার ১-২জন আছেন। রাজ ভাই ছাড়া খুব কম স্পিনার আছেন যারা অনেকক্ষন বোলিং করেন। দিন শেষে পেসাররাই বেশি বোলিং করে। তাসকিনকে দেখেছি একদিন, দিনে ২১-২৫ ওভার বোলিং করেছে। ’
নতুন পেস বোলিং কোচ শার্ল ল্যাঙ্গেভেল্টের সাথেও কাজ করছেন কয়েক দিন হলো। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকেও এখন দেখছেন কাছ থেকে। এত দ্রুত মূল্যায়ন করা কঠিন, ফরহাদ তা করতেও চাইলেন না। তবে অন্যদের মতো বললেন, বোলিং কোচ আপাতত জায়গায় বল ফেলার ওপর বেশি জোর দিচ্ছেন। তাতে কতটা কাজ হয়েছে, সামনের টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজেই তা প্রমাণ হবে।