টেস্টে যে কারণে তিন-চারে ব্যাট করতে চান না সাকিব
বিশ্বকাপে যা করেছেন, সেটা আসলে স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু। আফগান অধিনায়ক রশিদ খান যেমন আজ বলছিলেন, বিশ্বকাপে এর চেয়ে ভালো খেলতে কাউকে দেখেননি। সাকিব আল হাসান জানেন, সব সিরিজেই সেরকম কিছুর পুনরাবৃত্তি করাটা কঠিন। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত করে দিলেন, এখনই টেস্টে ওয়ানডের মতো তিনে ব্যাট করতে চান না।
বিশ্বকাপে সাকিবের তিনে ব্যাট করাটা বাংলাদেশের বলতে গেলে একমাত্র প্রাপ্তি ছিল। গত বছর থেকে ওয়ানডেতে তিনে উঠে আসার পেছনে তার নিজেরও একটা জেদ ছিল। বিশ্বকাপে সেটার ষোলআনাই কাজে লাগিয়েছেন, ফলও পেয়েছেন। তবে বড় আসরের জন্য যেরকম প্রস্তুতি নিয়েছেন, সব সময় সেটা নেওয়া সম্ভব হয় না। বিশ্বকাপের আগে আইপিএলে গিয়েও নিবিড় সময় কাটিয়েছেন নেটে। এবার ফরম্যাট বদলে গেছে। সাকিন নিজেও ছুটি আর হজ্ব সেরে দেশে ফিরেছেন বেশিদিন হয়নি। দিন দশেকের মতো ঝালাই করার সময় পেয়েছেন নেটে। বিশ্বকাপের মতো অতিমানবীয় কিছু যে সব সময় সম্ভব নয়, সেটা আগেই মনে করিয়ে দিলেন, ‘প্রত্যাশা সবসময়ই থাকে। একেক সময় একেকরম প্রত্যাশা থাকে। প্রত্যাশার চাপও থাকে। কিন্তু চাওয়া সবসময়ই থাকে দলের জয়ে যতটুকু অবদান রাখা সম্ভব, ততটুকু যেন করতে পারি। সবসময় হয় না। সবসময় ওভাবে প্রস্তুতিও নেওয়া যায় না। তবে চেষ্টার কখনও কমতি থাকে না।’
কিন্তু টেস্টেও কি ওয়ানডের মতো নিজেকে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরে নিয়ে আসবেন? বিশেষ করে তিন বা চারে? সাকিব অবশ্য সাদা পোশাকে বরাবরই পাঁচ-ছয়ে বেশি ব্যাট করেছেন। চার নম্বরে ব্যাট করেছেন কালেভদ্রে, তিনে ব্যাট করা হয়নি কখনোই। আপাতত সেরকম ইচ্ছাও নেই তার। কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন, ‘যেহেতু বিশেষ করে আমাদের দেশে বা উপমহাদেশে খেলায় অনেক ওভার বোলিং করতে হয়, এত ওভার বোলিং করে সঙ্গে সঙ্গে ওপরে ব্যাট করা কঠিন। যদি কখনও ওরকম সুযোগ আসে যে বোলিং কমিয়ে দিচ্ছি বা ওরকম কিছু, হয়তো ইচ্ছে আসতেও পারে যে ওপরের দিকে ব্যাট কররলাম। শেষ যখন আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছি, আমি চারেই ব্যাট করেছিলাম। তবে সত্যি কথা হলো, তিন-চারে ব্যাটিং করলে, দ্রুত উইকেট পড়ে গেলে, ২৫-৩০ ওভার বোলিং করে আবার তখনই ব্যাটিং করার কঠিন। মনোযোগ টেস্টে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ টেস্টে একজন ব্যাটসম্যানের জন্য। মনোযোগ ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো কতটা তরতাজা অবস্থায় ব্যাট করতে পারেন। এজন্য একটু পরে ব্যাট করাটাই আমার জন্য মনে হয় ভালো।’
সাকিবের জন্য অবশ্য প্রস্তুতিও এমন কোনো বড় ব্যাপার নয়। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বন্যাট হাতে দুই দিনের নেট সেশনের পরেই মাঠে নেমে দলকে জিতিয়েছিলেন। এমনিতে নিজের অবদান নিয়ে তার আলাদা কোনো ভাবাবেগ নেই। র্যাঙ্কিং নিয়েও ভাবেন না খুব বেশি। টেস্ট ক্রিকেটে শীর্ষ অলরাউন্ডারের জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছেন আগেই। সেই গত বছরের নভেম্বরের পর আর তো টেস্টই খেলা হয়নি। সাকিব এখনও এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। তবে ভালো করলে যে সংখ্যাও সেই সাক্ষ্য দেবে, সেটা তিনি জানেন, ‘একটা জিনিসই কাজ করে যে দলের জয়ের পেছনে কতটা অবদান রাখতে পারি। সেটি যদি বেশি রাখতে পারি, স্বাভাবিকভাবেই র্যাঙ্কিং তার জায়গাটা আপনাআপনি করে নেবে। এই কারণেই আমার র্যাঙ্কিং নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। আমার চেষ্টা থাকে দলের প্রয়োজনে ভালো কিছু করার। সেটা কম হোক বা বেশি, সেটি আমার কাছে ব্যাপার না। সেটা করতে গিয়ে যদি র্যাঙ্কিংয়ে ভালো কিছু হয়, আমি অবশ্যই সেটি নেব।’