নিজেদের দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানরা
নিজেদের তৃতীয় টেস্টে এসে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেল আফগানিস্তান। এর আগে রহমত শাহ ৯৮ রানে আউট হয়েছিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, সেই আক্ষেপ তিনি ঘোচালেন বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামে। রহমতের আগে ১১টি দেশের প্রথম ১১ জন সেঞ্চুরিয়ানের গল্প-
ইতিহাসের প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান। টেস্টের প্রথম সেঞ্চুরিটি তারই। সে ইনিংসের পর ইংল্যান্ড অধিনায়ক জেমস লিলিহোয়াইট বলেছিলেন, এর চেয়ে সুন্দর ইনিংস শুধু ডব্লিউ জি গ্রেসই খেলতে পারতেন। সেই গ্রেসই হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান, নিজেদের চতুর্থ ও দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্টে, ১৮৮০ সালে, ওভালে।
নিজেদের প্রথম ফিফটি পেতেই ৭ টেস্ট অপেক্ষা করতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে, পরের টেস্টে সেঞ্চুরির আক্ষেপও ঘুচিয়েছিলেন জিমি সিনক্লেয়ার। ১৮৯৮-৯৯ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কেপটাউনে তিনি করেছিএন ১০৬ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি ক্লিফোর্ড রোচের, ১৯৩০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রিজটাউনে তিনি করেছিলেন ১২২ রান। সে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিও করেছিলেন তিনি।
যে সময় ক্লিফোর্ড সেঞ্চুরি করছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, সে সময়ই আরেকটি ইংল্যান্ড দল টেস্ট খেলছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সে সময় সম্ভব ছিল এটিও! স্টিউই ডেম্পস্টার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রথম সেঞ্চুরি।
ভারতের সেঞ্চুরি খরা কেটেছিল দেশের মাটিতে নিজেদের প্রথম ও সব মিলিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে। রেকর্ডটি লালা অমরনাথের, ১৯৩৩ সালের ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের জিমখানায় করেছিলেন তিনি এই সেঞ্চুরি। হোটেলে গিয়ে নিজের বিছানায় আরও অনেক উপহারের সঙ্গে ডজনখানেক গোল্ড-রোলেক্স পেয়েছিলেন অমরনাথ, ভারত ক্রিকেটে কতোখানি মজে গিয়েছিল তখনই- সেটারই হয়তো প্রমাণ ছিল এটি।
ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তানের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন নজর মোহাম্মদ। দিল্লীতে প্রথম টেস্টে বাজেভাবে হারের পরের টেস্টে লক্ষ্ণৌতে ফজল মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর নজরের ইনিংসে জিতেছিল পাকিস্তান, সিরিজ করেছিল ড্র।
শ্রীলঙ্কা প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিল তাদের তৃতীয় টেস্টে, করেছিলেন সিদাথ ওয়েটিমুনি। ক্যারিয়ারে আরেকটি টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি, তবে প্রথমটির মতো মাহাত্ম্য কি আর ছিল পরেরটির! ১৯৯২ সালে জিম্বাবুয়ে নিজেদের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল ভারতের বিপক্ষে, প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ডেভ হটন। ব্যানারম্যানের সেঞ্চুরির ১১৫ বছর পর নিজের দেশের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন হটন।
হটনকে অনুসরণ করেছিলেন আমিনুল ইসলামও। ২০০০ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে আমিনুল করেছিলেন ১৪৫ রান, যা ঢুকে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট লোকগাঁথায়। সেদিন সরকারি ছুটিতে পত্রিকা অফিস বন্ধ ছিল, তবে সাংবাদিকরা নিজেদের উদ্যোগে বের করেছিলেন আমিনুলের জন্য এক স্মারক পত্রিকা!
বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের প্রায় ১৮ বছর পর অভিষেক আয়ারল্যান্ডের। ব্যানারম্যান, হটন ও আমিনুলের সঙ্গে নিজেদের প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরির তালিকায় যোগ দিয়েছিলেন কেভিন ও’ব্রায়েন। ফলো-অনে পড়ে তার ১১৮ রানের ইনিংস আয়ারল্যান্ডকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল ঐতিহাসিক এক জয়ের। শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি, ও’ব্রায়েন ঠিকই হয়েছিলেন ম্যাচসেরা।