'প্রথম দিন শেষে আমরা জায়গামতো আছি'
প্রথম দিনে যে একটু হলেও এগিয়ে আফগানিস্তান, স্কোরকার্ড দেখলে সেটির সঙ্গে কারও দ্বিমত করা কঠিন। ৫ উইকেটে ২৭১ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে আফগানরা, একজন সেট ব্যাটসম্যান আছে ক্রিজে। প্রথম সেশন আর শেষ সেশনের শুরুটা বাদ দিলে বাকি সময় তারা হতাশ করে গেছে বাংলাদেশের বোলারদের। তবে তাইজুল ইসলামের কথা শুনে আপনি একটু অবাকই হতে পারেন। প্রথম দিন শেষে তারা তো হতাশ ননই, বরং উইকেটের যে অবস্থা তাতে বাংলাদেশ ঠিক জায়গাতেই আছে বলে মনে করেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
চট্টগ্রামের উইকেট নিয়ে ম্যাচের আগে থেকেই বেশ জল্পনা কল্পনা ছিল। সকালে একাদশে তিন স্পিনার নিয়ে নামার পর উইকেট কেমন হবে, সেটার একটা আগাম ধারণাও পাওয়া যাচ্ছিল। প্রথম দিনে অবশ্য উইকেট থেকে সেরকম সাহায্য মিলল না। বাংলাদেশ অবশ্য এর মধ্যেই ৫ উইকেট নিয়েছে, তবে দেশের মাটিতে নিজেদের স্পিন-সামর্থ্য আর প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের টেস্ট অনভিজ্ঞতা বিবেচনা করলে সাকিব আল হাসান অন্তত ছয়-সাতটি উইকেট হয়তো আশা করেছিলেন। তবে দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা তাইজুলের কন্ঠে হতাশার তেমন কোনো সুর নেই, ‘আমরা এখনো ঠিক জায়গায় আছি। উইকেটের অবস্থা যেকরম, খারাপ হয়েছে বলব না।আমার মনে হয় রানটা কমই হয়েছে। বোলাররা ভাল বল করেছে। ’
দিনটা বাংলাদেশের প্ত্রত্যাশার বাইরেও যায়নি বলেও মনে করছেন তাইজুল, ‘প্রত্যাশার বাইরে যায়নি, উইকেট মুখস্থ উইকেট হয়ে গেছে। যদি মাঝেমধ্যে টার্ন করত, মাঝেমধ্যে সোজা যেত এরকম করলে উইকেটের শংকা বেশি থাকত। এখন পিচের যে অবস্থা, বল একই রকম হচ্ছে। ওরা মুখস্থর মতোই খেলছে।’
পরে অবশ্য স্বীকার করলেন, আজ আরও এক-দুইটি উইকেট পেলে দিনটা আরও হতে পারত। তবে যা হয়েছে তাতে খেদ নেই। বরং এখন পর্যন্ত ম্যাচে এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশকেই, ‘এটা তো প্রথমেই বললাম, আজকে যে উইকেটের ব্যবহার দেখছি আর ওদের যে স্পিনার আছে আমার মনে হয় না খুব কঠিন হবে। এটা যদি আমি বলতাম টি-টোয়েন্টি হলে ওদেরকে এগিয়ে রাখতাম। বাট খেলা তো টেস্ট। ওদের বোলারদের কেমন ধৈর্য্য থাকবে এটাও দেখার বিষয়। ওদের স্পিনাররা এর আগেও টেস্ট খেলছে। আমার মনে হয় না আহামরি কিছু করছে। আমি আমার দলকে এখনো এগিয়ে রাখব আরকি। ’
কিন্তু কাল বাংলাদেশের লক্ষ্য কী? তাইজুল যেমন বলেছেন, ১০ রানের ভেতর ৫ উইকেট ফেলে দিতে পারলে দারুণ হবে। সেটা সেটা করতে হলে তো অলৌকিক কিছু করতে হবে। তাইজুল সেই অলৌকিকের ওপরও ভরসা হারাচ্ছেন না, ‘ক্রিকেটে মিরাকল যে নাই তা কিন্তু না। কখনো হয়নি এমনও না। হতেই পারে, এ তো অস্বাভাবিক না। নাঈম দুই বলে দুই উইকেট পায়নি আজ? ভাল ভাল ব্যাটসম্যান, দুইটাই আউট হয়ে গেছে। নাঈম যে দ্বিতীয় উইকেট পেয়েছে বল লো হয়েছে, এরকম তো হতেই পারে।’
ওবে তাইজুল যতই আশার বাণী শোনান, এই টেস্টে প্রথম দিন শেষে এখন আফগানরদের হাতেই ড্রাইভিং হুইল। টস জেতার পর এগিয়ে গেছে এমনিতেই, সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশকে ব্যাট করতে হবে চতুর্থ ইনিংসে। এই টেস্টে সাকিবদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে, সেটা আপনি অনুমান করে ফেলতেই পারেন।