• আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট
  • " />

     

    আফগানিস্তানকে আটকাতে বাংলাদেশের প্রয়োজন বৃষ্টি, মিরাকল ইত্যাদি..

    আফগানিস্তানকে আটকাতে বাংলাদেশের প্রয়োজন বৃষ্টি, মিরাকল ইত্যাদি..    

    ৪র্থ দিনশেষে, আফগানিস্তান ১ম ইনিংস ৩৪২ অল-আউট (রহমত ১০২, আসগর ৯১, আফসার ৪১; তাইজুল ৪/১১৬, সাকিব ২/৬৪) ও ২য় ইনিংস ২৬০ অল-আউট (ইব্রাহিম ৮৭, আসগর ৫০, জাজাই ৪৮*, সাকিব ৩/৫৮) ; বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ২০৫ অল-আউট (মুমিনুল ৫২, মোসাদ্দেক ৪৮*, রশিদ ৫/৫৫, নবি ৩/৫৬) ও বাংলাদেশ ২য় ইনিংস ১৩৬/৬* (সাদমান ৪১, সাকিব ৩৯*, রশিদ ৩/৪৬)
    বাংলাদেশের জয়ের জন্য ৪ উইকেটে ২৬২ রান প্রয়োজন


    দিনভর চট্টগ্রামে চললো এই মেঘ এই বৃষ্টির খেলা। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে খেলা যখন শেষ হলো, তখন মনে হতেই পারে, বৃষ্টি শুধু আফগানিস্তানের জয়টাই বিলম্বিত করলো। শেষদিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন এখনও ২৬২ রান, বাকি ৪ উইকেট। ব্যাটিং-অর্ডারে বেশ অদলবদলের পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গী এখন সৌম্য সরকার। তবে এখন পর্যন্ত ম্যাচের যা গতিপথ, এক বৃষ্টি ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্ট বাংলাদেশ বাঁচাতে পারলে সেটি হবে মিরাকলের চেয়েও বেশি কিছু! 

    ২য় ইনিংসেও বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্দশার পেছনে মূল হন্তারকের ভূমিকা পালন করেছেন রশিদ খান। সঙ্গে মোহাম্মদ নবির দারুণ ট্যাকটিক্যাল বোলিংয়ের সঙ্গে ছিল জাহির খানের চায়নাম্যান। এক সাদমান ইসলাম টিকে থাকার লড়াইয়ে যা মনযোগী ছিলেন, বাকিরা ঠিক সঙ্গ দিতে পারেননি তাকে। অবশ্য সাকিব আছেন তার স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ের মাধ্যমেই, তবে তিনিও বাংলাদেশকে ঠিক কতোখানি আশা জোগাতে পারছেন, প্রশ্ন সেটিই। 

    ৩৯৮ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ওপেনিংয়ে সাদমানের সঙ্গে পাঠিয়েছিল লিটন দাসকে। লিটন আউট হওয়ার পর মুমিনুলের জায়গায় মোসাদ্দেক, মোসাদ্দেক ফিরলে মুশফিককে পাঠানোর পর ট্যাকটিকসটা আদতে পরিষ্কার ছিল- বাংলাদেশ রাখতে চায় বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন। সে ট্যাকটিকস ঠিক কতোখানি কাজে দিল, সেটি অবশ্য প্রশ্ন। অফস্পিনার মোহাম্মদ নবি যে পেলেন দিনে সবচেয়ে মূল্যবান সাদমানের উইকেটটি! 
     


    লাঞ্চের আগে কয়েক ওভার বিপদ ছাড়াই পার করেছিলেন লিটন ও সাদমান। তবে বিরতির পরই ঘটে বিপত্তি। রিভিউ নিয়ে জাহির খানের বলে বাঁচলেও ঠিক পরের ডেলিভারিতেই তিনি হয়েছেন এলবিডব্লিউ, জাহিরের টার্ন করা বলটা আছড়ে পড়েছে লিটনের প্যাডে। পরের উইকেটটিও জাহিরের, তার রং-আন পড়তে না পেরে হতাশ মোসাদ্দেক অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট ছুঁড়ে লং-অফে তুলেছেন ক্যাচ। ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিন নম্বরে নেমেছিলেন তিনি, তবে ব্যাটিং পজিশনের চেয়েও যেন বেশি অজানা ঠেকলো তার কাছে জাহিরের বোলিং-ই। 

    জাহিরের পর শুরু হলো রশিদ খানের খেল। মুশফিক শুরুতে তিন সুইপে চার মেরে নিজেকে থিতু করার চেষ্টা করছিলেন, রশিদ খানের গুগলিটা পড়তে ভুল করে ফেললেন। ইনসাইড দ্য লাইনে খেলতে গিয়ে মিস করে হলেন এলবিডব্লিউ, রিভিউ নিলেন, তবে সেটা তাকেই আশা দিতে পারছিল না খুব একটা। মুশফিকের মতোই পরিণতি মুমিনুলের, পার্থক্য বলতে তিনি শিকার হাই-স্পিনিং লেগব্রেকের। 

     

     

    সাকিব এসেছেন, রশিদের হাতে ফিরতি ক্যাচ তুলেও বেঁচেছেন। চা-বিরতিতে তিনি গেছেন সাদমানকে নিয়েই, বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা তখন মাত্র নেমেছে ৩০০-এর নিচে। শেষ সেশনে শুরুতে ভাঙলো সাদমানের প্রতিরোধের দেওয়াল। নবি লেংথের মারপ্যাঁচে ফেলে সাদমানকে ফেললেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। আগের ইনিংসে পেসার ইয়ামিনের বলে আউট হওয়ার পর এবার নিজেকে শুধরে নিয়েছিলেন সাদমান, স্পিনেও টিকে থাকার লড়াইয়ে মানিয়ে নিচ্ছিলেন। নিজের শেষ টেস্টে নবি তাকে পরাজিতই করলেন। মাহমুদউল্লাহ এরপর রশিদের গুগলি পড়তে পারলেন না, ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে ধরা পড়লেন। সৌম্য নামলেন আটে, এরপরই বৃষ্টি এসে থামিয়ে দিল খেলা। 

    এর আগে সকালেও বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হয়েছিল খেলা। ২৫ মিনিট ও ২৩ রান যোগ করার পর অল-আউট হয়েছে আফগানিস্তান। মুশফিক একটা রান-আউটের সুযোগ মিস করেছেন, এরপর রান-আউট করেছেন ইয়ামিনকে। মিরাজ দিনের প্রথম বলেই ক্লোজ-ইনে ক্যাচ বানিয়েছেন জাহিরকে। ফিফটি থেকে ২ রান দূরে অপরাজিত ছিলেন আফসার জাজাই।