• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগে: টটেনহামের বিপক্ষে লিভারপুলের রেকর্ডের হাতছানি

    কিক অফের আগে: টটেনহামের বিপক্ষে লিভারপুলের রেকর্ডের হাতছানি    

    কবে, কখন

    লিভারপুল-টটেনহাম হটস্পার

    প্রিমিয়ার লিগ

    অ্যানফিল্ড

    রাত ১০.৩০


    শেষ যেবার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল লিভারপুল এবং টটেনহাম হটস্পার, মাদ্রিদে সেবার ১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের পর কেটে গেছে প্রায় মাস পাঁচেক। আগের মৌসুমের মতই দুর্দান্ত ফর্মে আছে লিভারপুল, কিন্তু টটেনহামকে যেন চেনাই দায়। একের পর এক হারে টেবিলের ১১ নম্বরে নেমে গেছে মাউরিসিও পচেত্তিনোর দল। অ্যানফিল্ডে ইতিহাস, ফর্ম- কোনোটিই নেই স্পার্সের পক্ষে, আর লিভারপুলের সামনে হাতছানি প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে দারুণ শুরুর রেকর্ডে ভাগ বসানোর।

    গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলেও প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল ক্লপের দলের। কিন্তু এবার রীতিমত অদম্য তারা, স্পার্সকে হারালে চেলসি (২০০৫-০৬), ম্যানচেস্টার সিটির (২০১১-১২, ২০১৭-১৮) প্রিমিয়ার লিগের প্রথম দশ ম্যাচে সর্বোচ্চ জয়ের (৯) রেকর্ডে বসাবে লিভারপুল। শুধু অ্যানফিল্ড নয়, স্পার্সের বিপক্ষে গত দুই বছরে যেকোনো প্রতিযোগিতায় ১৪ দেখায় মাত্র ১বার হেরেছেন সালাহ-মানেরা। প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের শেষ ৪৪ ম্যাচে হারেনি ‘অল রেড’রা।

     

     

    লিভারপুলের হোম ফর্ম যতটা দুর্দান্ত, স্পার্সের অ্যাওয়ে ফর্ম ঠিক ততটাই হতাশাজনক এবং একপ্রকার অবিশ্বাস্য। প্রতিপক্ষের মাঠে শেষ ১০ ম্যাচে মাত্র ২বার ড্র করতে পেরেছে পচেত্তিনোর দল, জয় নেই একটিও। ২০১৯-২০ মৌসুমে ১৩ ম্যাচ খেলে ফেললেও মাত্র ৩টি জয়ের মুখ দেখেছে পচেত্তিনোর দল। স্পার্সকে ভরসা দেখানো একমাত্র পরিসংখ্যান হল গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়নস লিগে রেডস্টার বেলগ্রেডকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা; গোলে ফিরেছেন হ্যারি কেইন, হিউঙ-মিন সন এবং এরিক লামেলারা।

    পাঁচ মাস আগে পরে লিভারপুলের একাদশে পরিবর্তন নেই তেমন। কিন্তু স্পার্সের একাদশ থেকে ছিটকে গেছেন ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। ইনজুরি নয়, ডেনিশ মিডফিল্ডারের বদলে ড্যালি আলি, মুসা সিসোকো এবং হ্যারি উইঙ্কসদেরই প্রাধান্য দিচ্ছেন পচেত্তিনো। টটেনহামের সাথে চুক্তিতে আর ছয় মাস বাকি থাকা এরিকসেনকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই চলছে দলবদলের গুঞ্জন। শোনা যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস, বায়ার্ন মিউনিখের মত বড় ক্লাবগুলোর নাম। অ্যানফিল্ডে তাই পচেত্তিনোর একাদশে এরিকসেনকে দেখার সম্ভাবনা হয়তো ক্ষীণ।

     

     

    গত সপ্তাহে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে ড্র করে প্রিমিয়ার লিগে টানা ৮ জয়ের রেকর্ড হাতছাড়া হলেও খুব একটা চাপে নেই লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে জিতলে সিটির সাথে ব্যবধানটা ফিরে যাবে ৬ পয়েন্টে, ড্র করলেও ৪ পয়েন্টে এগিয়ে থাকবে তারা। অ্যানফিল্ড থেকে জয় নিয়ে ফেরার উচ্চাশাও হয়তো করছেন না পচেত্তিনো। সেই ২০১১ সালে শেষবার জয়ের দেখ পেয়েছিল লিভারপুলের মাঠে। কিন্তু ফর্ম এবং লিগ টেবিলে অবস্থানের কারণে জয়ের বিকল্প নেই স্পার্সের। ধারাবাহিকতার অভাবে পচেত্তিনোর ওপর আস্থা হারাচ্ছেন চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল লেভি, জানিয়েছে গার্ডিয়ানের মত সংবাদমাধ্যমগুলো। 

    একাদশ নিয়ে অবশ্য এত মাথাব্যথা নেই ক্লপের। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছেন অ্যালিসন বেকার, পছন্দের একাদশের সবাই আছেন ফিট। গত সপ্তাহে গেঙ্কের বিপক্ষে সালাহ-মানেও ফিরে পেয়েছেন নিজেদের বোঝাপড়া। জয়ের পক্ষে বাজি ধরার লোকের সংখ্যা তাই হয়তো লিভারপুলের পক্ষেই হবে বেশি।

    লিভারপুল যেখানে প্রায় প্রতি ম্যাচেই রেকর্ডের হাতছানি নিয়ে নামছে, সেখানে প্রতিনিয়তই নিজেদের ফিরে পাওয়াটাই যেন স্পার্সের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। গত মৌসুমে রক্ষণের দিক দিয়ে প্রিমিয়ার লিগের সেরা দলগুলোর একটি ছিল তারা, কিন্তু এবার অল্ডারওয়েরেল্ড-ভার্টনহেন জুটিকে চেনাই দায়। ফুলব্যাকে রোজ, ডেভিস, অরিয়েররাও নেই ফর্মে। আর ইনজুরিতে পড়ে আগামী বছরের আগ পর্যন্ত ছিটকে গেছেন গোলরক্ষক হুগো লরিস, অধিনায়কের অভাবটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে স্পার্স।

     

     

    রক্ষণের মত আক্রমণে অবস্থাও বেগতিক। গতবার সালাহ এবং অবামেয়াংয়ের সাথে প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া কেইন যেন লিগে জাল খুঁজে পেতেই ভুলে গেছেন। আগুয়েরো, আব্রাহাম, অবামেয়াংরা যখন আবারও গোল্ডেন বুটের দৌঁড়ে ছুটছেন; তখন ৯ ম্যাচ শেষে কেইনের গোলসংখ্যা মাত্র ৫। অ্যানফিল্ডে আবারও স্পার্সের মূল ভরসা থাকবেন তিনিই।

     

    দলের খবর

    ইনজুরি নিয়ে খুব একটা ভাবতে হচ্ছে না লিভারপুলকে। জোয়েল মাতিপের খেলা নিয়ে আছে শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ফিটনেস টেস্টে মাতিপ উতরে না গেলে তার জায়গায় হয়তো জো গোমেজ বা দেয়ান লভ্রেনের ওপরই আস্থা রাখবেন ক্লপ। লরিসকে ছাড়া পূর্ণশক্তির স্কোয়াডই পাচ্ছেন পচেত্তিনো।

     

    সম্ভাব্য মূল একাদশ

    লিভারপুল (৪-৩-৩): অ্যালিসন; আলেকজান্ডার-আর্নল্ড, গোমেজ, ভ্যান ডাইক, রবার্টসন; হেন্ডারসন, ফাবিনহো, ওয়াইনাল্ডাম; সালাহ, ফিরমিনো, মানে

    টটেনহাম (৪-২-৩-১): ভর্ম; অরিয়ের, অল্ডারওয়েরেল্ড, ভার্টনহেন, রোজ; উইঙ্কস, সিসোকো; আলি, লামেলা, সন; কেইন

     

    প্যাভিলিয়ন প্রেডিকশন: লিভারপুল ৩-০ টটেনহাম