বিপিএল ড্রাফট : ওগো বিদেশিনী, লেগস্পিনারের খোঁজ এবং অন্যান্য
ক্যাটাগরি ‘লেটার মার্কস’
লটারিতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার আগে ডাকার সুযোগ পড়ে খুলনার। এ+ ক্যাটাগরি থেকে মুশফিকুর রহিমকে নিয়েছে তারা। স্থানীয় ক্রিকেটারদের এই ক্যাটাগরির বাকি তিনজনের মধ্যে তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহকে প্রথম দফাতেই যথাক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রাম নিয়ে নিয়েছে। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৮ম রাউন্ড পর্যন্ত। সেখানে গিয়ে তাকে দলে ভিড়িয়েছে ঢাকা। তামিমের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বিপিএলে একই দলে খেলছেন মাশরাফি। মুশফিক টানা সাত আসরে খেলছেন সাতটি আলাদা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে, মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন চট্টগ্রামে।
আর ড্রাফটের শেষ ডাকে গিয়ে পাকিস্তানের শাহিদ আফ্রিদিকেও দলে নিয়েছে ঢাকা, এর আগে শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরাকে দলে নেওয়ার ফলে স্থানীয় ও বিদেশী মিলিয়ে এ+ ক্যাটাগরির ৪ জন ক্রিকেটার হয়েছে তাদের, যা ড্রাফটে সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ক্যাটাগরির দুজন আছেন খুলনায়- মুশফিক ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশো। চট্টগ্রামে দুজন- মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল। রংপুর ও কুমিল্লায় আছেন একজন করে- যথাক্রমে মোহাম্মদ নবি ও মুজিব-উর-রহমান। সিলেট ও রাজশাহীতে নেই একজনও। বিদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে এ+ ক্যাটাগরিতে নাম লিখিয়েছিলেন শুরুতে ১১ জন, পরে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন শোয়েব মালিক। দল পেয়েছেন ৬ জন।
ওগো বিদেশীনি : পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দাপট
৪৩৯ জন বিদেশী ক্রিকেটার নিবন্ধন করেছিলেন বিপিএলের ড্রাফটে। এদের মাঝে ড্রাফট থেকে দল পেয়েছেন ৩৪ জন। নিয়ম অনুযায়ি সর্বনিম্ন ৬ জন থেকে সর্বোচ্চ ৮ জন বিদেশী ক্রিকেটার স্কোয়াডে নিতে পারবে প্রতিটি দল। তবে ড্রাফট থেকে ৪-৫ জন ক্রিকেটার নিলে তালিকার বাইরে থেকে সরাসরি সর্বোচ্চ ২ জনকে সাইন করাতে পারবে দলগুলি। ড্রাফট থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম নিয়েছে ৬ জন করে বিদেশী ক্রিকেটার, খুলনা ও সিলেট নিয়েছে ৫ জন করে। বাকি দলগুলি আটকে থেকেছে ৪ জনেই। তবে সরাসরি নেওয়া যাবে বলে বিদেশী ক্রিকেটার বাড়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
ড্রাফটে সবচেয়ে বেশি ৯৫ জন ক্রিকেটার ছিলেন ইংল্যান্ডের, দল পেয়েছেন ৫ জন। বিদেশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দল পেয়েছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে- ৭ জন করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আছেন ৬ জন, শ্রীলঙ্কা থেকে ৫ জন, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩ জন। জিম্বাবুয়ের আছেন ১ জন।
লেগস্পিনার কই?
একজন করে লেগস্পিনার প্রতিটি একাদশে বাধ্যতামূলক- বিপিএলে এবার দলগুলিকে এ নিয়ম বেঁধে দেওয়ার কথা বলেছিল বিসিবি। আজ ড্রাফটের সময় বলা হয়েছে, ‘একজন কোয়ালিটি স্পিনার যিনি লেগস্পিনার হলে ভাল হয়’- এমন একজনকে স্কোয়াডে নেওয়ার কথা। ড্রাফট শেষে দেখা গেছে, স্বীকৃত লেগস্পিনার আছেন তিনটি দলে- খুলনায় আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, ঢাকায় শাহিদ আফ্রিদি ও রাজশাহীতে মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি। লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার আছেন দুজন- রাজশাহীতে অলক কাপালি ও সিলেটে জিভান মেন্ডিস।
এছাড়া একজন করে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করতে পারে পেসার রাখার নিয়মের কথাও উল্লেখ আছে বিপিএলের এবারের আসরে।
এবং উপেক্ষিতরা…
ফিক্সিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত আসরে ফিরেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এবার ড্রাফটে ছিলেন ১২ লাখ টাকার প্রাইস-ক্যাপে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। তবে তার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কোনও দল। দল পাননি একই ক্যাটাগরির তালিকায় এক নম্বরে থাকা শাহরিয়ার নাফীসও। গতবারও ড্রাফটে দল না পাওয়া নাফীস পরে খেলেছিলেন রাজশাহী কিংসের হয়ে। বিপিএলে বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রথম সেঞ্চুরি ছিল তার।
এছাড়াও দল না পাওয়াদের মধ্যে আছেন- আব্দুর রাজ্জাক, তানভীর হায়দার, নাঈম ইসলাম, জিয়াউর রহমান, মার্শাল আইয়ুব, জুবাইর হোসেন, সোহরাওয়ার্দি শুভ, আলাউদ্দিন বাবু, সাকলাইন সজিব, সাদমান ইসলাম, এবাদত হোসেন, ধীমান ঘোষ, তাসামুল হক।
সর্বনিম্ন ৯ থেকে সর্বোচ্চ ১১ জন স্থানীয় ক্রিকেটার নিতে পারবে দলগুলি। এর মাঝে ড্রাফটে ১০ জন করে নিয়েছে তিনটি দল- খুলনা, ঢাকা ও রাজশাহী। বাকি ৪টি দলে আছেন ৯ জন করে স্থানীয় ক্রিকেটার। ঢাকায় মোট আছেন ১৬ জন ক্রিকেটার, খুলনা ও চট্টগ্রামে আছেন ১৫ জন করে। রাজশাহী ও সিলেট ড্রাফট থেকে নিয়েছে ১৪ জনকে, রংপুর ও কুমিল্লা ১৩ জনকে। বিদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে ২ জন সরাসরি সাইন করানো গেলেও দেশী ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে ড্রাফটে ‘অবিক্রিত’দের মধ্য থেকেই নিতে হবে।