• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    ইন্টার মিলান ৩-১ বার্সেলোনা: ১০ বছর আগের কে এখন কোথায়?

    ইন্টার মিলান ৩-১ বার্সেলোনা: ১০ বছর আগের কে এখন কোথায়?    

    শেষ বাঁশির পর আঙ্গুল উঁচিয়ে ন্যু ক্যাম্পের সবুজ গালিচায় হোসে মরিনহোর দৌঁড়, বা লিওনেল মেসিদের শূন্যদৃষ্টি। ২০০৯-১০ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের সব রোমাঞ্চ দ্বিতীয়ার্ধে হলেও কাজটা আসলে সান সিরোতেই সেরে রেখেছিল হোসে মরিনহোর ইন্টার মিলান। বার্সেলোনার ‘হেক্সা’ জয়ী দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় করে ‘ট্রেবল’ জিতেছিল ইন্টার। চ্যাম্পিয়নস লিগের অন্যতম রুদ্ধশ্বাস সেই টাইয়ের এক দশক পর আবারও সান সিরোতে ইন্টারের মুখোমুখি হচ্ছে বার্সেলোনা। ১০ বছর আগের সেদিন মাঠে থাকা কে এখন কোথায়?


    ইন্টার মিলান

    হুলিও সিজার

    দুর্দান্ত সব সেভে ২৪ এপ্রিল, ২০১০-এ নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে একাধিকবার গোলবঞ্চিত করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক হুলিও সিজার। ঐ ম্যাচের পর আরও দু’বছর ইন্টারেই ছিলেন সিজার। এরপর খেলেছেন কুইন পার্ক রেঞ্জার্স, বেনফিকার মত ক্লাবগুলোয়। গত বছর ফুটবলকে বিদায় বলেছেন সিজার। ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ফ্লামেঙ্গোতে, শেষ মৌসুমটা খেলেছিলেন তাদের হয়েই।

    মাইকন

    ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব ক্রুসিওমা-এর হয়ে খেলছেন। ২০১২ সালে ইন্টার ছাড়ার পর খেলেছিলেন ম্যানচেস্টার সিটি, রোমার মত ক্লাবগুলোয়।

    লুসিও

    মাইকনের মত ইউরোপের পাট চুকিয়ে লুসিও এখন ফুটবল খেলছেন ব্রাজিলেই। বয়সটা ৪১ হয়ে গেলেও এখনও চতুর্থ বিভাগের ক্লাব ব্রাজিলিয়েন্সের হয়ে নিয়মিত মাঠে নামছেন তিনি। ইন্টারের পর জুভেন্টাস হয়ে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ফিরেছিলেন লুসিও।

    হাভিয়ের জানেত্তি

    ইন্টারের ফুটবল ডিরেক্টরের ভূমিকায় আছেন এখন। সেই ম্যাচের অধিনায়ক জানেত্তি ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ারের ১৯টি বসন্ত কাটিয়েছেন ‘নেরাজ্জুরি’দের হয়েই। অবসরের পরও ইন্টারের সাথে সম্পর্কে ছেদ পড়েনি তার।

    থিয়াগো মোত্তা

    পেশাদারি ক্যারিয়ার ছেড়েছেন, কিন্তু ফুটবলের মোহ কাটিয়ে উঠতে পারেননি। গত বছর অবসর নেওয়া মোত্তা এখন সিরি আ-এর ক্লাব জেনোয়ার ম্যানেজার। 

     

     

    এস্তেবান ক্যাম্বিয়াসো

    অবসরে গিয়েছেন দু’বছর আগে। ম্যানেজার বা সহকারী হিসেবে এখনও ফুটবলে ফেরেননি। ইন্টারের পর লেস্টার সিটি, অলিম্পিয়াকোসের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। গ্রিক চ্যাম্পিয়নদের সাথে চুক্তি শেষ হওয়ার মাস দুয়েক পরই অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

    গোরান পান্ডেভ

    খেলে যাচ্ছেন এখনও। সাবেক সতীর্থ মোত্তার ক্লাব জেনোয়ার অধিনায়ক এখন তিনি। উত্তর মেসিডোনিয়ার অধিনায়ক এবং সর্বোচ্চ গোলদাতাও পান্ডেভ। ইন্টার ছাড়ার পর নাপোলি, গ্যালাতাসারে ঘুরে জেনোয়ায় যোগ দিয়ে আবারও সিরি আ-তে ফিরেছেন তিনি।

    ওয়েসলি স্নাইডার

    এ বছরই বুটজোড়া তুলে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন স্নাইডার। বার্সেলোনাকে হারানোর পর ঐ মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জেতার পর ব্যালন ডি’অরের জন্য ফেভারিট ধরা হচ্ছিল তাকেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। ইন্টারের পর গ্যালাতাসারে, নিসের হয়ে খেলার পর কাতার সুপার লিগের ক্লাব আল ঘারাফার হয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন তিনি।

    ডিয়েগো মিলিতো

    প্রায় বছর তিনেক আগে অবসর নিয়েছেন। ২০০৯-১০ মৌসুমের সেমিফাইনালের পর ফাইনালে তার জোড়া গোলেই বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে নিশ্চিত হয়েছিল ইন্টারের ‘ট্রেবল’। ঐ মৌসুমের পর আরও ৪ বছর ইন্টারেই ছিলেন মিলিতো, ২০১৪-তে নাড়ির টানে ফিরেছিলেন প্রথম ক্লাব নাসিওনালের হয়ে। ২০১৬ সালে তাদের হয়েই ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন তিনি।

    স্যামুয়েল ইতো

    স্নাইডারের মত তিনিও কাতার সুপার লিগ থেকেই অবসরে গেছেন এ বছরেই। বার্সেলোনার হয়ে ২০০৯-১০ মৌসুমে ট্রেবল জেতা ইতো ২০১০-১১ মৌসুমেও জিতেছিলেন ‘ট্রেবল’, ইন্টারের হয়ে। ক্যারিয়ারের ইন্টার পাট চুকিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন চেলসি, এভারটন, সাম্পদোরিয়ার মত ক্লাবগুলোতে। কাতারী লিগের ক্লাব কাতার এসসি-র হয়ে পেশাদারি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।

     

    বদলি

    ক্রিশ্চিয়ান শিভু

    ইন্টারের হয়েই ২০১৩ সালে বুটজোড়া তুলে রেখেছিলেন। অবসরের পরও ‘নেরাজ্জুরি’দের সাথে মেলবন্ধন থামেনি তার। বর্তমানে ইন্টারের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।

    দেয়ান স্ট্যাঙ্কোভিচ

    ইন্টারের হয়েই ২০১৩ সালে বুটজোড়া তুলে রেখেছিলেন। অবসরের পরের বছরই উদিনেসের সহকারী ম্যানেজার হিসেবে ফুটবলে ফিরেছিলেন, ২০১৬-তে ফিরেছিলেন ইন্টারে, রবার্তো মানচিনির সহকারী হিসেবে।

    মারিও বালোতেল্লি

    ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়িয়েছেন পুরো ইউরোপ। ম্যানচেস্টার সিটি, মার্শেইয়ের মত ক্লাবগুলোর পর এখন খেলছেন সিরি আ-তেই, ব্রেশিয়ার হয়ে।


    বার্সেলোনা

    ভিক্টর ভালদেস

    বছর দুয়েক আগে ফুটবলকে বিদায় বলেছিলেন। এ বছর ফিরেছিলেন নাড়ির টানে, বার্সেলোনাতেই। কাতালানদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ম্যানেজার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মাস তিনেক পরই বরখাস্ত হতে হয়েছে তাকে।

    দানি আলভেজ

    ৩৬ বছর বয়সে এসেও দিব্যি খেলে যাচ্ছেন। এখনও ব্রাজিলের রাইটব্যাক হিসেবে প্রথম পছন্দ তিনি, ‘সেলেসাও’দের অধিনায়কও আলভেজই। প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ছাড়ার পর খেলছেন স্বদেশি ক্লাব সাও পাওলোর হয়ে।

    জেরার্ড পিকে

    ২০১০ সালে ইন্টারের বিপক্ষে সেই ম্যাচ খেলা ২৩ বছর বয়সী তরুণ পিকে এখন বার্সেলোনার রক্ষণের নেতা। এখনও খেলছেন বার্সেলোনার হয়েই।

    কার্লোস পুয়োল

    ২০১৪ সালে অবসরে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে কোচিং নয়, হয়েছেন ফুটবলারদের এজেন্ট। সাবেক সতীর্থ মার্ক বার্ট্রার এজেন্ট পুয়োল। বার্সেলোনা তাকে স্পোর্টিং ডিরেক্টরের পদে আনতে চাইলেও প্রস্তাবটি এ বছর ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।

    ম্যাক্সওয়েল

    জিউসেপ্পে মিয়াৎজাতে তার ক্রস থেকে বার্সাকে লিড এনে দিয়েছিলেন পেদ্রো রদ্রিগেজ। ২০১৭ সালে পিএসজির হয়ে ফুটবলকে বিদায় বলেছিলেন তিনি।

    জাভি হার্নান্দেজ

    ২০১৫ সালে বার্সার হয়ে নিজের দ্বিতীয় ট্রেবল জিতে কাতার সুপার লিগের ক্লাব আল সাদে যোগ দিয়েছিলেন।  এ বছর তাদের হয়েই অবসরে গিয়েছেন তিনি। অবসরের কয়েকদিন বাদেই আল সাদের ম্যানেজারের দায়িত্ব পেয়ে গেছেন তিনি। ইন্টারের মাঠে হারের পর মাঠের ঘাস নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন জাভি। মরিনহোর সাথে কথার লড়াইটাও এই ম্যাচ বেশ জমেছিল তার।

    সেইদু কেইটা

    সাবেক সতীর্থ জাভির মত কাতারে পাড়ি জমিয়েছিলেন কেইটা। ২০১৭ সালে এল জাইসের হয়ে বুটজোড়া তুলে রেখেছিলেন। 

    সার্জিও বুস্কেটস

    সেদিনের তরুণ বুস্কেটস এখন বার্সেলোনা মিডফিল্ডে সবচেয়ে অপরিহার্য। রাকিটিচ, ডি ইয়ং সহ আরও অনেক মিডফিল্ডারকে দলে নিয়েছিল বার্সা, কিন্তু বুস্কেটস এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কাতালানদের ভাইস ক্যাপ্টেনও তিনিই।

     

     

    ইব্রাহিমোভিচ

    ফুটবলের অন্যতম ‘জিপসি’র বয়স ৩৮ হয়ে গেলেও এখনও খেলা ছাড়েননি তিনি। উল্টো তাকে দলে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে সবাই। বার্সা ছাড়ার পর পিএসজি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এলএ গ্যালাক্সি ঘুরে আপাতত ‘ফ্রি এজেন্ট’ ইব্রাহিমোভিচ। অবশ্য খুব শীঘ্রই সিরি আ-তে ফেরার কথা বলছেন তিনি।

    লিওনেল মেসি

    পিকের মতই ইন্টারের বিপক্ষে এই ম্যাচের সময় ২৩ বছর বয়সী ছিলেন মেসি। এখন বার্সার অধিনায়ক তিনি। প্রায় এক দশক পর শিশুসুলভ মেসির চেহারায় এসেছে কাঠিন্য, চাপ দাঁড়িতে দুই দশকের মেসির ব্যবধান বেশ। তবে একটা জায়গায় পরিবর্তন নেই, ২০১০ এবং ২০১৯- দু;বছরই ব্যালন ডি’অর জিতেছেন তিনি। বার্সেলোনার হয়ে ৭০০ গোলের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন মেসি।

    পেদ্রো রদ্রিগেজ

    ইন্টারের মাঠে বার্সাকে লিড নেওয়া পেদ্রো এখন খেলছেন চেলসির হয়ে। ২০১৫ সালে বার্সা ছেড়ে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।

     

    বদলি

    এরিক আবিদাল

    দু’বার ক্যান্সারকে হারিয়ে দেওয়া আবিদাল এখন পেশাদারি ক্যারিয়ারে তার সাবেক ক্লাব বার্সেলোনারই ফুটবল ডিরেক্টর। ২০১৩ সালে বার্সা ছেড়ে মোনাকোয় যোগ দিয়েছিলেন, এরপর অলিম্পিয়াকোসের হয়ে বিদায় বলেছিলেন ফুটবলকে।