• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    কেমন হলো বিপিএলের সাত দলের ঘর গোছানো?

    কেমন হলো বিপিএলের সাত দলের ঘর গোছানো?    

    আর মাত্র এক দিন পরেই শুরুর বিপিএল। কেমন হলো দলগুলোর ঘর গোছানো? কোন দলের শক্তি কোথায় আর দুর্বলতাই বা কোনখানে? 


    ঢাকা প্লাটুনস

    শক্তি

    মাশরাফির অধিনায়কত্ব

    মাশরাফি বিন মুর্তজা যে বিপিএলে পয়া, সেটা অনেক আগেই প্রমাণিত। এখন পর্যন্ত চারবার বিপিএলে শিরোপা জিতেছেন অধিনায়ক হিসেবে। এবার ড্রাফটে শুরুতে কেউ না ডাকলেও শেষের দিকে গিয়ে তাঁকে দলে নিয়েছে ঢাকা প্লাটুনস। ২০১৩ সালেও এমনভাবে দলে ঢুকে ঠিকই শিরোপা জিতেছিলেন ঢাকাকে নিয়ে। এবারও কি সেরকম কিছু হবে?

     

    এবারও কি তামিম?

    সর্বশেষ বিপিএল ফাইনালে তামিম ইকবাল যে ইনিংসটা খেলেছিলেন, খুব সম্ভবত বিপিএলের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা। এরপর তামিমের সময়টা খুব ভালো যায়নি, সর্বশেষ কোনো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেছেন সেই শ্রীলংকা সফরে। গত বার যেখানে শেষ করেছিলেন, এবার সেখান থেকে শুরু করতে পারবেন?

    দুর্বলতা

    মিডল অর্ডারে নির্ভরতা কই?

    তামিম, মুমিনুল, লরি ইভান্সরা টপ অর্ডারে আছেন, তবে ঢাকার মিডল অর্ডারে নির্ভর করার মতো ব্যাটসম্যান আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।   

     

    এক্স ফ্যাক্টর

    লরি ইভান্স

    গত মৌসুমে রাজশাহীর হয়ে বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই ছিলেন ধারাবাহিক। এবারও ঢাকার হয়ে চমকে দিতে পারেন সবাইকে।

    স্কোয়াড

    দেশি : তামিম ইকবাল, এনামুল হক, হাসান মাহমুদ, মেহেদি হাসান, আরিফুল হক, মুমিনুল হক, শুভাগত হোম, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), রকিবুল হাসান, জাকের আলি অনিক

    বিদেশি : থিসারা পেরেরা, লরি ইভান্স, ওয়াহাব রিয়াজ, আসিফ আলি, লুইস রিস,  শহীদ আফ্রিদি, শাদাব খান।


    রংপুর রেঞ্জার্স

    শক্তি

    পেস বোলিং

    মোস্তাফিজ গত কিছুদিনে নিজেকে একটু হারিয়ে ফেলেছেন, তবে বিপিএলে এখনও সবচেয়ে বড় অস্ত্রগুলোর একজন। তাসকিন গত বছর সিলেটের হয়ে উজ্জ্বল ছিলেন। আর বিদেশী হিসেবে যোগ দিয়েছেন বিপিএলের আরেক পরীক্ষিত পাকিস্তানের পেসার জুনাইদ খান। পেস বোলিংয়ে তাই রংপুর চমকে দিতে পারেন সবাইকে।

    দুর্বলতা

    ব্যাটিংয়ে বড় নাম

    মোহাম্মদ নাঈম গত কিছুদিনে দারুণ করেছেন, কিন্তু বিপিএলে এখনো পরীক্ষিত নন। দেশীদের মধ্যে টপ অর্ডারে সেই অর্থে পরীক্ষিত আছেন শুধু জহুরুল ইসলাম। বিদেশীদের মধ্যে শেই হোপের না আসাটা বড় একটা ধাক্কা রংপুরের জন্য, মোহাম্মদ শাহজাদও বেশ কিছুদিন জাতীয় দলের বাইরে। রংপুরের ব্যাটিং নিয়ে তাই থাকতে পারে প্রশ্ন।

    এক্স ফ্যাক্টর

    সানি-সঞ্জিতের স্পিন

    আরাফাত সানি বিপিএলে কতটা কার্যকরী, প্রমাণ দিয়েছেন গত বিপিএলেই। সঞ্জিত সাহা অ্যাকশন শুধরে হতে পারেন আরেকজন গোপন অস্ত্র। ঢাকার স্লো উইকেটে এই দুজনের ওপর ভরসা করতে পারে রংপুর।

    স্কোয়াড

    দেশি: মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, আরাফাত সানি, জহুরুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, জাকির হাসান, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, নাদিফ চৌধুরি, সঞ্জিত সাহা

    বিদেশি: মোহাম্মদ নবি (অধিনায়ক),  লুইস গ্রেগোরি, ক্যামেরন দেলপোর্ত, মোহাম্মদ শাহজাদ, জুনাইদ খান।


    সিলেট থান্ডার

    শক্তি

    মিডল অর্ডারে আস্থা

    বেশির ভাগ দলেই টপ অর্ডারে ব্যাট করবেন বিদেশীরা। মিডল অর্ডারে দেশী ব্যাটসম্যানরাই সুযোগ পাবেন বেশি। সেক্ষেত্রে মোসাদ্দেক ও মিঠুন দেশীদের মধ্যে হতে পারেন বড় ভরসা। মিঠুন অনেক দিন ধরেই বিপিএলে ধারাবাহিক, মোসাদ্দেকও গত বার বেশ ভালো করেছেন চট্টগ্রামের হয়ে।

    ‘ছোট’ দলের ‘টিম স্পিরিট’

    বিপিএলের ইতিহাসে আন্ডাররেটেড দলগুলোর মধ্যে একটি বরাবরই চমকে দিয়েছে সবাইকে। সিলেটের দলে সেরকম বড় নাম না থাকলেও তারা অলক্ষ্যে থেকে চমকে দিতে পারে সবাইকে।

    দুর্বলতা

    গেম চেঞ্জার কই?

    বড় কোনো গেম চেঞ্জার না থাকায় ভুগতে পারে দলটি। 

    এক্স ফ্যাক্টর

    নাঈম-অপু-গাজীর স্পিন

    নাজমুল অপুর বাঁহাতি স্পিন আর নাঈম-গাজীর অফ স্পিন বিপিএলে হতে পারে বেশ কার্যকর।

    স্কোয়াড

    দেশী: মোসাদ্দেক হোসেন (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল ইসলাম অপু, সোহাগ গাজী, রনি তালুকদার, নাঈম হাসান, দেলোয়ার হোসেন, মনির হোসেন, রুবেল মিয়া, আবদুল মজিদ, নাজমুল হোসেন মিলন

    বিদেশি : শফিকউল্লাহ শাফাক, নাভিন-উল-হক, জনসন চার্লস,  জিভান মেন্ডিস, ক্রিসমার সান্টোকি, আন্দ্রে ফ্লেচার।


    রাজশাহী রয়্যালস

    শক্তি

    ‘ওয়ান ম্যান রাসেল’

    টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় গেম চেঞ্জারদের একজন তিনি। এবারের বিপিএলে রাজশাহীর শক্তির বড় একটা জায়গা আন্দ্রে রাসেলকে দলে নেওয়া। বেশ কিছুদিন ঢাকার হয়ে খেলার পর এবার নাম লিখিয়েছেন রাজশাহীতে। অধিনায়ক হওয়াটা বাড়তি দায়িত্ব দিচ্ছে তাঁকে, তাতে আরও চওড়া হবে রাসেলের কাঁধ? সম্ভবত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দলগুলোর একটি রাজশাহী।

    দুর্বলতা

    স্পিনে ঘাটতি

    তাইজুল ইসলাম বিপিএলে খারাপ না করলেও টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতে অতটা ভরসা করার মতো নন। মোহাম্মদ নওয়াজ অবশ্য খারাপ নন, তবে তরুণ মিনহাজুল আফ্রিদি এখনও অনভিজ্ঞ। স্পিন আক্রমণ নিয়ে একটু প্রশ্ন উঠতেই পারে তাদের।

    এক্স ফ্যাক্টর

    জাজাই পারবেন এবার?

    জাজাই খেলতে পারলে বড় রান নিয়ে চিন্তা করতে হবে না রাজশাহীকে। গত বার ঢাকা সেটা বুঝেছে শুরুতে। কিন্তু পরের দিকে গিয়ে জাজাই হয়ে গেছেন ম্লান। এবার কি ধারাবাহিক হতে পারবেন?

    স্কোয়াড

    দেশি : লিটন দাস, আফিফ হোসেন, আবু জায়েদ চৌধুরি, ফরহাদ রেজা, তাইজুল ইসলাম, অলক কাপালী, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ইরফান শুক্কুর, মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি, নাহিদুল ইসলাম

    বিদেশি :  রবি বোপারা,  হজরতউল্লাহ জাজাই, কাইস আহমাদ মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ইরফান, আন্দ্রে রাসেল  (অধিনায়ক)


    কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স

    শক্তি

    নতুন বলের বোলিং

    স্পিনার হলেও মুজিব উর রেহমান নতুন বলেই বেশি কার্যকরী। পাওয়ারপ্লেতে বল করে বরাবরই অভ্যস্ত, আর নতুন বলে সঙ্গী হবেন ফর্মে থাকা আল আমিন। দুজন পাওয়ারপ্লেতে ধারাবাহিক থাকলে সেখানেই ম্যাচের ভাগ্য কিছুটা গড়ে দিতে পারে কুমিল্লা।

     

    দুর্বলতা

    অধিনায়কত্বেই ঝামেলা?

    শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ঠিক ছিল না কুমিল্লর অধিনায়ক কে হবেন। সৌম্যের হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে অধিনায়ক হয়েছেন দাসুন শানাকা। এমনিতেই দল হিসেবে কুমিল্লা অনুশীলন করেছে সবচেয়ে কম, শানাকা এককাট্টা করতে পারবেন সবাইকে?

    এক্স ফ্যাক্টর

    সুমন-অংকনদের তারুণ্য

    পেস বোলার সুমন খান গত কিছুদিনে বেশ ধারাবাহিক, মাহিদুল অংকনও প্রতিশ্রুতির ছাপ রেখছেন। সুযোগ পেলে চমকে দিতে পারেন দুজন।  

    স্কোয়াড

    দেশি : সৌম্য সরকার, আল আমিন হোসেন, ইয়াসির আলি চৌধুরি, সাব্বির রহমান, সানজামুল ইসলাম, আবু হায়দার রনি, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, সুমন খান, ফারদিন হোসেন অনি

    বিদেশি: মুজিব-উর-রহমান, দাভিদ মালান, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), ভানুকা রাজাপাকশে


    খুলনা টাইগার্স

    শক্তি

    ভারসাম্যে সবচেয়ে এগিয়ে?

    খুব সম্ভবত এবারের বিপিএলের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দলগুলোর একটি খুলনা। গতবারের বিপিএল সেরা রুশোর সঙ্গে ব্যাটিংয়ে আছেন মুশফিক, শান্ত, সাইফরা। অফ স্পিনার মিরাজ, বাঁহাতি স্পিনার তানভীর, লেগ স্পিনার বিপ্লব, ডান হাতি পেসার শফিউল-শহিদুল-ফ্রাইলিংক-, বাঁহাতি পেসার আমির, খুলনার দলের বোলিং বেশ বৈচিত্রপূর্ণ।

    দুর্বলতা

    ‘অপয়া’ মুশফিক

    কাগজে কলমে খুলনা দলের খুব বেশি দুর্বলতা নেই। সমস্যা হচ্ছে, মুশফিক এখন পর্যন্ত বিপিএল জিততে পারেননি একবারও। এবার অবশ টুর্নামেন্টের শক্তিশালী দলগুলোর একটি পেয়েছেন, সেটা কি বদলে দেবে ভাগ্য?

    এক্স ফ্যাক্টর

    গোপন অস্ত্র গুরবাজ

    রহমানউল্লাহ গুরবাজ কিছুদিন আগেই ত্রিদেশীয় সিরিজে দারুণ ব্যাট করে গেছেন বাংলাদেশে। রুশো, আমিরদের ভিড়ে চমকে দিতে পারেন তিনি এবার।

    দেশি : মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), শফিউল ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, শামসুর রহমান, সাইফ হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, শহিদুল ইসলাম, আলিস আল ইসলাম, তানভির ইসলাম

    বিদেশি : রাইলি রুশো, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, মোহাম্মদ আমির, নাজিবউল্লাহ জাদরান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ


    চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

    শক্তি

    ঘরোয়া শক্তি ও সিমন্স

    মাহমুদউল্লাহ গত মৌসুম বাদ দিলে বিপিএলে কমবেশি ধারাবাহিক ছিলেন প্রতিবারই। এবার সঙ্গে পাচ্ছেন বিপিএলে পরীক্ষিত রুবেল, ইমরুল, নাসিররাও আছেন এবার। ভারত থেকে দারুণ ফর্ম নিয়ে শিগগিরই যোগ দেওয়ার কথা লেন্ডল সিমন্সেরও।

    দুর্বলতা

    গেইল থেকেও নেই

    কাগজে কলমে চট্টগ্রামে আছেন গেইল, কিন্তু আসলে শেষ দুই ম্যাচ ছাড়া খেলতে পারবেন না। তার আগেই হয়তো ঠিক হয়ে যেতে পারে চট্টগ্রামের ভাগ্য।

    এক্স ফ্যাক্টর

    জুনাইদের আরেকবার জ্বলে ওঠা

    জুনাইদ সিদ্দিকীকে এখন প্রায় ‘বুড়োদের’ দলে ফেলে দেওয়া গেলেও গত বার খুলনার হয়ে দেখিয়েছেন, এখনও চমকে দিতে পারেন। এবার কি হবে সেরকম কিছু?

    স্কোয়াড

    দেশি :  মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, নাসির হোসেন, রুবেল হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, এনামুল হক জুনিয়র, মুক্তার আলি, পিনাক ঘোষ, নাসুম আহমেদ, জুনায়েদ সিদ্দিক

    বিদেশি :  ক্রিস গেইল, কেসরিক উইলিয়ামস, লেন্ডল সিমন্স, আভিশকা ফার্নান্দো, রায়াদ এমরিট, রায়ান বার্ল।