বিদেশীদের সঙ্গে বেতনের ফারাক কমাতে বললেন মুশফিক
কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে বিদেশী ক্রিকেটার প্রতি বছরেই আনে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এই বছরে রাসেল ছাড়া খুব বড় নাম এখনও আসেনি, তবে বিনিয়োগ খুব কমছে না দলগুলোর। অথচ ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি না থাকায় এই বছর দেশী ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকও কমিয়ে দিয়েছে বিসিবি। এর আগেও এই বৈষম্য নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ জানিয়েছিলেন দেশী ক্রিকেটাররা। বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগে আজ মিরপুরে খুলনা টাইগারস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও বলেছেন, দেশী ও বিদেশীদের বেতনে ভারসাম্য আসা উচিত।
গত অক্টোবরে ক্রিকেটারদের ১৩ দফা দাবির অন্যতম ছিল, বিপিএলে স্থানীয় ও বিদেশীদের মধ্যে ভারসাম্য আনা। ডি ভিলিয়ার্সকে টুর্নামেন্টের অর্ধেক সময় পাওয়ার জন্য গত বছর যেমন রংপুর ৩ কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ করেছিল। বাংলাদেশের আইকন ক্রিকেটাররাও গত কয়েক বছরে দর কষাকষি করে নিজেদের বেতন কোটির কাছাকাছি নিতে পেরেছিলেন। তবে এবার সেরকম কিছু হচ্ছে না। এ প্লাস ক্যাটাগরির চার ক্রিকেটারের জন্য বিসিবি বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছে ৫০ লাখ টাকা। আর এ ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে সেটি ২৫ লাখ। অথচ এই বছর এ প্লাস ক্যাটাগরির বিদেশী ক্রিকেটাররা পাচ্ছেন ১ লাখ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা ৮০ লাখের বেশি। আফ্রিদির মতো বুড়িয়ে যাওয়া ক্রিকেটাররাও এবার তাই বেতন পাচ্ছেন মুশফিক, তামিমদের প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি।
এসব নিয়ে স্থানীয় ক্রিকেটারদের অসন্তোষ একরকম ওপেন সিক্রেট। মুশফিকের কথায় তা চাপাও থাকল না, ‘আমরা সবসময় প্রত্যাশিতমত পারিশ্রমিক পাইনা । এবার তো অনেক তাড়াতাড়ি হয়েছে । লাকিলি এবার খেলাটা হচ্ছে সেটাই অনেক । আমরা নীতি নির্ধারকদের দৃাষ্টি আকর্ষন করেছি তারা সেভাবে আশ্বস্ত করেছেন । নেক্সট থেকে বেতন বা ভাতা আমরা ঠিকঠাক পাবো বলে আশা করি ।’
আফ্রিদি, রুশোদের মতো শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে বেড়ানো ক্রিকেটারদের সঙ্গে এত বেতন-বৈষম্য নিয়েও আঙুল তুলেছেন মুশফিক,’ আমরা সারা বছর খেলি, তারপরও দেখা যায় অনেকের থেকে আমরা কম পাচ্ছি যারা শুধু টি টুয়েন্টি খেলে। এটা আমাদের জন্য ডিসক্রেডিট। বিশ্বে সব লিগে কিন্তু লোকাল খেলোয়াররা বেশি পাারিশ্রমিক পান । আমাদের নিজেদের খেলার মানটাও বাড়াতে হবে আমি আশা করবো আমরাও যাতে এবার ভাল খেলা দেখাতে পারি যাতে করে আমাদের বেতনটা বৃদ্ধি পাই । আর পারিশ্রমিক বেশি হলেই যে আপনি টিম পাবেন তানা । এবছর দেখেন অনেক ভাল ভাল খেলোয়াড়ও টিম পাননি । আমার মনে হয় সে দিকটা বিবেচনা করেই আমাদের এগুলো ঠিক করা উচিত । এবছরের বিপিএলটা সবার জন্য অনেক চ্যালেন্জিং , আমার জন্যই চ্যালেন্জিং ।
দেশীদের মধ্যে যে বিপিএলে ধারাবাহিক পারফর্ম করে যাওয়া অনেকে যে আরও বেশি পারিশ্রমিক পেতে পারেন, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুশফিক, ‘বিদেশী ক্রিকেটারদের সাথে ব্যবধান যাতে কম হয় সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন , রিভিউ করা উচিত তাদের জন্যও ভাবা উচিত কারন টপ প্লেয়ার হয়ত ৪ জন বা ৫ জন আছেন । কিন্তু ৫০ থেকে ৬০ জন আছে যারা প্রতি বছর দারুন পারফর্ম করে যাচ্ছে । ইভেন বিপিএলে অনেক ভাল খেলে । আমি যদি বলি শফিউল, তাইজুল, রাহি এরা সবাই ভাল খেলেছ যারা কিনা বি কিংবা সি তে আছে । এদের দিকটা দেখলে আমি মনে করি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যেই ভাল হবে । বিপিএল ইতিহাসে বাইরের খেলোয়ার যে খুব বেশি ভাল খেলে তা না । টপ রান বা উইকেটের দিকে তাকান । ক্রিস গেইল ছাড়া কেউ একা ম্যাচ জেতানোর রেকর্ড নাই । আমরা চেষ্টা করেছি তাদের সাথে মিলেমিশে পারফর্ম করতে ।’
মুশফিকের কথার সমর্থন দিতেই যেন আজ বিপিএলে প্রথম ম্যাচে জ্বলে উঠেছিলেন সিলেটের মোহাম্মদ মিঠুন ও চট্টগ্রামের ইমরুল কায়েস। কিন্তু মুশফিকদের আর্তি কি বিসিবি কর্তাদের কানে পৌঁছাবে?