মালান ঝড়ে রংপুরের ১৮১ টপকে গেল কুমিল্লা
রংপুর রেঞ্জার্স ১৮১/৮, ২০ ওভার (শাহজাদ ৬১, মুজিব ২/২৫)
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ১৮২/৪, ১৯.৪ ওভার (মালান ৪২*, সাব্বির ৪৯, সৌম্য ৪২)
কুমিল্লা ৬ উইকেটে জয়ী
চট্টগ্রামে রান-উৎসব চলছেই। প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচও দেখেছে হাই-স্কোরিং লড়াই, এবার রংপুর রেঞ্জার্সের ১৮১ রান টপকে গেছে কুমিল্লা। শুরুতে ভানুকা রাজাপাকশে ও শেষে ডেভিড মালানের ঝড়, মাঝে সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানের দুটি চল্লিশ পেরুনো ইনিংসে রংপুর করেছে দারুণ রানতাড়া। মাঝের ওভারগুলিতে কুমিল্লাকে চেপে ধরেছিল রংপুর, তবে শেষদিকে গিয়ে আর আটকাতে পারেনি তাদের।
রানতাড়ায় প্রথম ওভারেই লুইস গ্রেগরিকে টানা চার চারে শুরু করেছিলেন সৌম্য, এরপর তার কাছ থেকে ব্যাটন নিয়ে তান্ডবটা চালিয়ে গেছেন রাজাপাকসে। সেই গ্রেগরির করা ৫ম ওভারেই দুজন মিলে তুলেছিলেন ২১ রান, পাওয়ারপ্লেতে কুমিল্লা তুলেছিল ৫৪। তবে ঝড়ো শুরুর পর রাজাপাকসে ফিরেছিলেন মোহাম্মদ নবির বলে ১৫ বলে ৩২ রান করে, কুমিল্লার রানের গতি কমে এসেছিল এরপর। মাঝের ৮ ওভারে সৌম্য সরকারের উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫৩ রান তুলেছিল কুমিল্লা। মুকিদুলকে চেক শট খেলতে গিয়ে লিডিং-এজড হয়ে সৌম্য ফেরার আগে করেছেন ৩৪ বলে ৪১ রান।
সাব্বির নেমেই ছয় মেরেছিলেন, দিয়েছিলেন ঝড়ো শুরুর ইঙ্গিত। তবে শেষ ৩৬ বলে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ৬৮ রান। মোস্তাফিজের বলে ৪০ বলে ৪৯ রান করার পর সাব্বির ফিরলেও ডেভিড মালানের ২৪ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংসের সঙ্গে দাশুন শনাকার ৭ বলে ১২ রানে শেষ পর্যন্ত ২ বল বাকি থাকতেই সে লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে কুমিল্লা।
এর আগে মোহাম্মদ শাহজাদের ঝড়ো ফিফটির পর বাকিদের অবদানে ১৮১ পর্যন্ত গিয়েছিল রংপুর। জয় পেতে মরিয়া রংপুরের আজ একটা দারুণ শুরু দরকার ছিল খুব করেই। মোহাম্মদ শাহজাদ প্রথম ওভার থেকেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, দিনটা তার। স্বদেশী মুজিব উর রেহমানকে দুই চার মেরে শুরু করেছিলেন। আবু হায়দার রনির পরের ওভারে মারলেন দুই ছয়, এরপর চতুর্থ ওভারে সানজামুলকে মারলেন একটি চারের সঙ্গে আরও দুইটি ছয়। এরপরের ওভারে গিয়েই প্রথম হোঁচট খায় রংপুর। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা মোহাম্মদ নাঈম আজ রান আউট হয়ে গেলেন ৮ রান করে, সাব্বির রহমানের সরাসরি থ্রোতে।
শাহজাদের ঝড় অবশ্য চলছিল। পরের ওভারে মারলেন আরও দুই চার, ২১ বলে পৌঁছে গেলেন ফিফটিতে। ক্যাচ ক্যাচ দিতে দিতেও বেঁচে গেছেন কয়েকবার, তবে শেষ পর্যন্ত আউট হলেন সানজামুলের হাফ ট্র্যাকারে। অলস একটা শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে এলেন কাভারে শানাকাকে। ৮৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল রংপুর। পরের ওভারে আরও দারুণ ফিল্ডিং কুমিল্লার। এবার দুই রান নিতে গিয়ে আল আমিনের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে গেলেন আল আমিন। ৮৭ রানে নেই তিন উইকেট।
টম অ্যাবেল ও মোহাম্মদ নবী এগিয়ে নিচ্ছিলেন রংপুরকে। কিন্তু ২৫ রানের বেশি করতে পারলেন না অ্যাবেল, সৌম্যের বলে ক্যাচ দিলেন আল আমিনকে। নবী ২৬ রান করার মুজিবের বলে হয়ে যান বোল্ড। লুইস গ্রেগরি দুইটি চারের পর মালানের মিসফিল্ডে একটি ছয়ও পেয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু আরেকটি ছয় মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন লং অফে দাঁড়িয়ে থাকা সাব্বিরকে। ফিরলেন ১২ বল ২১ রান করে। মুজিবের পরের বলে জহুরুল ইসলামের আউট একটু দুর্ভাগ্যজনক, বল তার ব্যাটে লেগে আবার প্যাডে লাগার পর ভেঙে দিয়েছে স্টাম্প।
শেষ পর্যন্ত রংপুর ১৮০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে আরাফাত সানি ও নাদিফ চৌধুরীর জন্য। সানি নেমেই মুজিবকে চার মেরেছেন, পরে সৌম্যকে আরেকটি। অপরাজিত ছিলেন ১০ বলে ১৫ রান করে। আর শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে নাদিফ করেছেন ১১ বলে ১৫ রান।