• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    ৪২৬ রানের রেকর্ডের ম্যাচে ঢাকাকে আটকে দিল চট্টগ্রাম

    ৪২৬ রানের রেকর্ডের ম্যাচে ঢাকাকে আটকে দিল চট্টগ্রাম    

    পুরো স্কোরকার্ড দেখুন


    চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ২২১-৪, ২০ ওভার 
    ঢাকা প্লাটুন ২০৫ অল-আউট, ২০ ওভার 
    চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী 


    মুমিনুল হক, জাকের আলির পর মাশরাফি বিন মুর্তজা বা থিসারা পেরেরা- ২২৫ রানতাড়ায় ঢাকাকে ঠিক হিসাব থেকে বাইরে ফেলতে দিচ্ছিলেন না তারা। সমীকরণ কঠিন হয়ে উঠলেও চট্টগ্রামকে হুমকি দিচ্ছিল ঢাকা, তবে শেষ হাসি হাসল ঘরের দলই। লেন্ডল সিমন্স, ইমরুল কায়েসের পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে চ্যাডউইক ওয়ালটনের ঝড়ে বিপিএল ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২১ রান তোলা চট্টগ্রাম ঢাকাকে করতে দেয়নি ২০৫ রানের বেশি। দুই দল মিলে অবশ্য বিপিএলে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডে পেছনে ফেলেছে ২০১৩ সালে বরিশাল-রাজশাহীর ৪২২ রানের ট্যালিকে। 

    ঢাকাকে ১৯.৩ ওভার পর্যন্ত লড়াইয়ে রেখেছিলেন পেরেরা, তবে শেষ পর্যন্ত স্নায়ু ধরে রেখে চট্টগ্রামকে আরেকবার সার্ভিস দিয়েছেন বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানা। ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি, পাওয়ারপ্লেতে ২ ওভারের সঙ্গে ডেথ ওভারে বাকি ২টি করেছেন তিনি। 

    চট্টগ্রামের রান-উৎসবে মেহেদির পারফরম্যান্সই তাই আলাদা করে নজরে পড়তে বাধ্য। ২য় ওভারেই চট্টগ্রামকে ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন তিনি, তাকে পুল করতে গিয়ে টপ-এজে ধরা পড়েছিলেন এনামুল হক। এরপর জাকের আলির ১৯ বলে ২৭, লরি এভান্সের ১১ বলে ১৭ বা আসিফ আলির ৬ বলে ১৫ রানের ক্যামিওর সঙ্গে একপাশে মুমিনুল হকের ফিফটি দুর্গম পথে এগিয়ে দিয়েছিল ঢাকাকে। 

    মুমিনুল আগলে রেখেছিলেন একপ্রান্ত, তিন বাউন্ডারির সঙ্গে মেরেছেন দুটি ছয়, যার মধ্যে পরের ছয়ে পূর্ণ করেছেন ফিফটি। ৭ রানে জীবন পেয়েছিলেন রানার হাতে, সে সুযোগের সদ্ব্যবহারই করেছেন বলতে হবে। নাসিরকে ছয় মারার পর আবার একই রকম শট খেলতে গিয়েই লং-অনে ধরা পড়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। 

    এরপর ঢাকার ভরসা হয়ে ছিলেন পেরেরা। শাহিদ আফ্রিদি বা মাহেদি হাসান তেমন কিছু করতে পারেননি, তবে নাসিরকে টানা তিন ছয়ের পর আরেকটি বাউন্ডারিতে ঝলক দেখিয়েছিলেন মাশরাফি। তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ইমরুলের বারদুয়েকের চেষ্টায় ধরা পড়েছেন এরপর, নাসিরের বলেই। ২ উইকেট নিলেও ৬০ রান দিয়ে বিপিএলের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ডও হয়ে গেছে নাসিরের। 

    ১৯তম ওভারে কেসরিক উইলিয়ামসকে দুই ছয় মেরে পেরেরা অসম্ভব স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন চট্টগ্রামকে, তবে পরের চার ডেলিভারিতে উইলিয়ামস অঘটন ঘটতে দেননি। আর শেষ ওভারে তো ছিলেন সুপার-কুল রানা। শেষ বলে রানার শিকারে পরিণত হওয়ার আগে পেরেরা করেছেন ২৭ বলে ৪৭ রান। 

    চট্টগ্রামে প্রথম দিন দ্বিতীয় ম্যাচে স্কোরিং হয়ে পড়েছিল বেশ কঠিন, তবে এদিন দুই ম্যাচই হলো হাই-স্কোরিং। প্রথমে ব্যাটিং করা চট্টগ্রাম গড়েছিল বিপিএলের তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। শুরুতে লেন্ডল সিমন্স তুলেছিলেন ঝড়, ৩৬ বলে ৫৭ রান করে ইমরুলের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান-আউট হয়ে ফিরতে হয়েছিল এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানকে। 

    এর আগে আভিশকা ফার্নান্ডোর সঙ্গে ওপেনিংয়ে ২৮ বলেই সিমন্স যোগ করেছিলেন ৫১ রান, দ্বিতীয় উইকেটে ইমরুলের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৫০ রানের। সিমন্স ফিরলেও ইমরুলের সঙ্গে যোগ দেওয়া মাহমুদউল্লাহ তুললেন আরও বড় ঝড়। 

    হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট ভোগাচ্ছিল তাকে, পরে তো ফিল্ডিংয়েও নামতে পারেননি। তবে ব্যাটিংয়ে খেলেছেন দুর্দান্ত সব শট, ১৩তম ওভারে মাশরাফিকে হোয়্যাক করে মারতে গিয়েই চোট পেয়েছিলেন। পেরেরাকে চার মেরে মাত্র ২৪ বলে ফিফটি পূর্ণ করেছেন, ১৮তম ওভারে গিয়ে আউট হওয়ার আগে করছেন ২৮ বলে ৫৯ রান। শেষ ওভারে হাসান মাহমুদ গুণেছেন ২০ রান, এর মাঝে করেছেন দুটি নো-বল। 

    শেষ পর্যন্ত অনেকখানি এগিয়েও তাই চট্টগ্রামকে টপকে যেতে পারেনি ঢাকা, সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রেকর্ডের ভাগিদার হয়েই।