রেকর্ডভাঙা ৪৬০ রানের ম্যাচে আবারও শেষ হাসি চট্টগ্রামের
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ২৩৮/৪, ২০ ওভার
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ২২২/৭, ২০ ওভার
চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স আগের ম্যাচে গড়েছিল বিপিএল ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড, সে স্কোর তাড়া করার চেষ্টায় কাছাকাছি গিয়ে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের ভাগিদার হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ঢাকা প্লাটুনকে। আবার রেকর্ড গড়লো চট্টগ্রাম, এবার বিপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩৮ রান তুলে। এবার চেষ্টা করলো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। আবার হলো বিপিএলে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড, আগেরদিনের ৪২৬ রান ছাপিয়ে এবার দুই দল মিলে করলো ৪৬০ রান। তবে ফলটা থাকলো ওই একই, চট্টগ্রাম জিতল ১৬ রানে। ব্যাটসম্যানদের পর মেহেদি হাসান রানার দুর্দান্ত বোলিংয়ে আবারও শেষ হাসি হেসেছে চ্যালেঞ্জার্স। বৃথা গেছে ডাভিড মালানের ৩৮ বলে ৮৪ রানের ইনিংস। এর আগে আভিসকা ফার্নান্ডো, ইমরুল কায়েস, চ্যাডউইক ওয়ালটনের সঙ্গে নুরুল হাসানে ভর করে বিশাল স্কোর গড়েছিল চ্যালেঞ্জার্স।
রানতাড়ায় শুরুতেই অবশ্য রানার তোপে ছিটকে যেতে বসেছিল কুমিল্লা। প্রথম ২ ওভারে ১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন এই পেসার- সৌম্য চেক শট খেলতে গিয়ে হয়েছেন লিডিং এজড, ভানুকা রাজাপাকসে লাইন মিস করে হারিয়েছেন স্টাম্প, সাব্বির আগের বলে অল্পর জন্য বেঁচে গেলেও হয়েছেন এলবিডব্লিউ। পাওয়ারপ্লেতে ৪০ রান তুলেছিল কুমিল্লা, চট্টগ্রাম দিচ্ছিল দ্রুতই খেলা শেষ করে দেওয়ার ইঙ্গিত।
বাধ সাধলেন মালান। প্রথমে সঙ্গে পেলেন ইয়াসির আলি রাব্বিকে। শট নির্বাচনে তিনি ছিলেন দারুণ, প্লেসমেন্ট আর টাইমিং-ও ছিল অসাধারণ। ৩৫ রানে দাঁড়িয়ে কঠিন একটা সুযোগ দিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন, এরপর ফিফটি পূরণ করেছিলেন মাত্র ২৬ বলে। আগের ৩ ওভারে ৫২ রান তুলে কুমিল্লা চোখ রাঙাচ্ছিল চট্টগ্রামকে, এবার ইমরুল আনলেন তার বিশ্বস্ত রানাকে। রানা হতাশ করলেন না, তার কাটারে টেনে মারতে গিয়ে ডিপ-মিডউইকেটে ক্যাচ দিলেন মালান।
এরপর শনাকা একটু চেষ্টা করলেন, মুক্তার আলিকে দুটি ছয়ও মারলেন টানা। তবে এরপরই বল ডেকে আনলেন স্টাম্পে, পরের ওভারে উইলিয়ামসকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও। আগের ৩ ওভারে ৬ রান দেওয়া রানার শেষ ওভারে ২২ রান তুললেও অলৌকিক কিছু করতে পারেননি আবু হায়দার রনি।
এর আগে শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের ভরা গ্যালারির পূর্ণ বিনোদন জুগিয়ে বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩৮ রান তুলেছিল চ্যালেঞ্জার্স। প্রথম ওভারেই চার মেরে আভিশকা ফার্নান্দো আভাস দিয়েছিলেন বড় কিছুর। তৃতীয় ওভার লেন্ডল সিমন্সও যোগ দিলেন তাঁর সঙ্গে, কিন্তু ৭ বলে ১০ রান করে মুজিবের বলে হয়ে গেলেন বোল্ড।
ইমরুল নামলেন, প্রথম বল থেকেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন ফর্মে আছেন। আল আমিনের বলে দারুণ কিছু শট খেললেন। ওদিকে ফার্নান্দো মালানের এক ওভারে দুই ছয় মেরে যোগ দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে। ঠিক ১০ ওভারে চট্টগ্রাম পেরিয়ে গেল ১০০। সৌম্য এলেন, তাকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গেলেন ফার্নান্দো। কিন্তু ধরা পড়লেন সাব্বিরের হাতে, ২৭ বলে ৪৮ রান করে আউট হয়ে গেলেন।
ইমরুল অবশ্য ৩৫ বলে পেয়ে গেছেন ফিফটি, শানাকার বলে পেলেন নিজের প্রথম ছয়ও। এর পরের বলেই অবশ্য আউট হয়ে গেলেন ৪১ বলে ৬২ রান করে। নাসির বেশিক্ষণ থাকলেন না, ৩ রান করে সৌম্যর বলে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিলেন মুজিবকে।
এরপরেই শুরু চ্যাডউইক ওয়ালটন আর নুরুল হাসান সোহানের ঝড়। শুরুটা ১৮তম ওভার থেকে, শানাকাক্র ওই ওভার থেকে এলো ১৮ রান। সৌম্যর পরের ওভারটা আরও খরুচে, সেই ওভার থেকে এলো ২৯ রান। তিনটি ছয়ের সঙ্গে দুইটি চারও। রনির শেষ ওভার থেকে এলো ২১ রান। আর তাতেই ২৩৮ রানে পৌঁছাল চট্টগ্রাম। ২৭ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত ছিলেন ওয়ালটন, ১৫ বলে ২৯ রান করেছেন সোহান।