ফিফা গেমসের জন্যই রুশোর অমন নাচের উদযাপন
ফিফটি করে খুলে ফেললেন হেলমেট। এরপর হাতটা নাকের কাছে নিয়ে রীতিমতো নাচ শুরু করে দিলেন । রাইলি রুশোর ওই উদযাপনে ডাগআউটে খুলনার খেলোয়াড়দের মধ্যে তখন হাসির রোল পড়ে গেছে। ম্যাচ শেষেও যখন রুশো হাত মেলাচ্ছিলেন সতীর্থদের সঙ্গে, ওই উদযাপন নিয়েই তখন সব কথা। সংবাদ সম্মেলনে সেই কারণটা জানিয়েছেন খুলনা টাইগারসের এই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। রপুরের বিপক্ষে ফিফটি করলে প্লেস্টেশনে ফিফা গেমসের মতো করে এই উদযাপন করবেন, কথা দিয়েছিলেন সতীর্থদের।
ফিফা গেমস শুধু ফুটবলার নয়, ক্রিকেটারদের মধ্যেও তুমুল জনপ্রিয়। খেলার ফাঁকে হোটেল রুমে এতেই বুঁদ হয়ে থাকেন অনেক ক্রিকেটার, সেটা দেশি-বিদেশী সবাই। রুশোও যেমন মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে প্লেস্টেশনে একটা ফিফা মাচ নিয়ে টুইট করেছেন কাল। তখনই সম্ভবত সতীর্থদের বলেছেন, আজ ফিফটি করলে এরকম একটা উদযাপন করবেন। সেই কথাই রাখলেন রুশো।
রুশো অবশ্য আজ যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল বলটা ফুটবলের মতো দেখতে পাচ্ছেন। আরাফাত সানিকে দিয়ে শুরু, এরপর তাসকিনের এক ওভারে মেরেছেন তিনটি ছয়। শেষের ছয়টি উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে যেভাবে খেলেছেন, সেটা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা একজন ব্যাটসম্যানের কথাই বলে। রুশোও আজ ৩১ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবে খেলতে পেরেছেন। সংবাদ সম্মেলনে নিজেও সেটা বলছিলেন, ‘আজ এমন একটা যখন মনে হচ্ছিল সবকিছুই ব্যাটের মাঝখানে লাগছে। ব্যাট করার জন্য প্রচুর সময় পাচ্ছিলাম যেটা আসলে সব সময় হয় না। সর্বশেষ একটা চার দিনের ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলাম, তখন ব্যাট করতে গিয়ে এমন ফুরফুরে মনে হয়েছিল।’
সর্বশেষ বিপিএলে সবচেয়ে বেশি রান ছিল রুশোর। এবারের বিপিএলেও শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত, তিন ম্যাচের স্কোর ৬৪*, ৪২ ও ৬৬*। তিন ম্যাচে মাত্র একবার আউট হয়েছেন, ব্যাটও করছেন দারুণ। বিপিএলে নিজেকে এমন মেলে ধরার রহস্য নেই বলেও দাবি করলেন, ‘আমার মনে হয় না এর পেছনে কোনো গোপন রহস্য আছে। আমার মনে হয় আপনি যেটা করেন সেটা আপনাকে উপভোগ করতে হবে। কাজ হিসেবে না নিয়ে নিজের সেরাটা দিতে হবে। আমি ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসি, আর দলকেও সব সময় পাশে থাকার জন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আমি এটা নিয়ে আসলে ভাবছি না খুব একটা। আমার দিন হলে তো আমারই দিন। নয়তো পরের দিন তো আছেই। তাই নিজ্র ওপর বিশ্বাস রেখে পা মাটিতে রাখারই চেষ্টা করি।’
আজ রুশো যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে তাসকিন-মোস্তাফিজদের অসহায়ই মনে হয়েছে। রুশোর অবশ্য প্রতিপক্ষ বোলারদের জন্য সহমর্মিতাই ঝরল, ‘এরকম ফরম্যাটে ছন্দ না পেলে কিছু করা খুব কঠিন। ওরা তিনটি ম্যাচ হেরেছে, এখন আরেকটি হারল। আর বোলিংয়ে ছন্দ পাওয়া তো আরও জরুরি। মোস্তাফিজ জোরেই বল করেছে, কিন্তু ম্যাচের ছন্দটা বদলে দেওয়ার জন্য কাউকে দরকার হবে আপনার। আপনি যেসব বাংলাদেশিদের কথা বললেন তারা সবাই অভিজ্ঞ ও পেশাদার। আজকের দিনটা হয়তো তাদের ছিল না, কিন্তু আমি নিশ্চিত তারা দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াবে। ’