ফ্লেচারের সেঞ্চুরির পর খুলনার বিপক্ষে বড় জয় সিলেটের
সিলেট থান্ডার ২৩২/৫, ২০ ওভার
খুলনা টাইগারস ১৫২ অল-আউট, ১৮.৩ ওভার
থান্ডার ৮০ রানে জয়ী
চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচেই জিতেছিল পরে ব্যাটিং করা দল। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ২০০ পেরিয়ে যাওয়ার পরই বদলে গেল গল্পটা। এখন পর্যন্ত বিপিএলে চট্টগ্রামে সমীকরণটা এমন- আগে ব্যাটিং করে আপনি জিতবেন, তবে পেরুতে হবে ২০০। সিলেট সে সমীকরণেই পেলো তৃষিত জয়টা। আন্দ্রে ফ্লেচারের ৫৭ বলে ১০৩ ও জনসন চার্লসের ৩৮ বলে ৯০ রানের বিস্ফোরণে ২৩২ রান তোলা সিলেট এর আগে ৩ ম্যাচ খেলে অপরাজিত থাকা খুলনাকে হারিয়ে পেয়েছে প্রথম জয়, পঞ্চমবারের চেষ্টায়।
চট্টগ্রাম লেগে এর আগে দুইবার ২০০ পেরিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক দল, তবে দুবারই প্রতিপক্ষ ঢাকা প্লাটুন ও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স রানতাড়ায় করেছিল দারুণ লড়াই, ২০০ পেরিয়ে গিয়েছিল তারাও। খুলনা অবশ্য তেমন কিছু করতে পারলো না। রাইলি রুশোর ৩২ বলে ৫২ ও রবি ফ্রাইলিঙ্কের ২০ বলে ৪৪ রানের ইনিংস যথেষ্ট হয়নি তাদের জন্য, শফিউল বাট করতে পারেননি বলে ৯ বল বাকি থাকতেই ১৫২ রানে আটকে গেছে তারা। ৮০ রানের ব্যবধানে জিতেছে সিলেট, বিপিএলে রানের হিসেবে এর চেয়ে বড় জয় আছে আর ৮টি।
রানতাড়ায় প্রথম বৈধ বলেই রহমনউল্লাহ গুরবাজকে হারিয়ে ফেলেছিল সিলেট, মনির হোসেনের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। খুলনা যেন পথ হারিয়েছিল সেখানেই। রুশোর সঙ্গে সাইফ হাসানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উঠেছিল ৭৫ রান, তবে সমান বলে ২০ রান করে রান-আউট হয়ে ফিরেছেন সাইফ। রুশো ৪ ম্যাচে তৃতীয় ফিফটি করেছেন, নাভিন-উল-হকের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকেও।
এরপর শামসুর রহমান ও মুশফিকুর রহিমের উইকেটে কার্যত আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল সিলেটের। শেষদিকে ফ্রাইলিঙ্ক শুধু ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছেন শুধু। মনির শেষ পর্যন্ত ৩১ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট, সান্টোকি ৩ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৩১ রান। মুশফিকের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটসহ এবাদত ২ উইকেট নিয়েছেন ১৭ রানে, নাভিন ১ উইকেট নিয়েছেন ২১ রানে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রবি ফ্রাইলিংকের প্রথম ওভারেই দুই চারে দারুণ শুরু করেছিলেন সিলেট। কিন্তু প্রথম ওভারের শেষ বলে ফ্রাইলিংকের বলে বোল্ড হয়ে যান মজিদ। এরপর চার্লস আর ফ্লেচার মিলে শুরু করেছেন আক্রমণ। ৪.২ ওভারে উঠে গেছে ৫০ রান, পাওয়ারপ্লেতে উঠেছে ৭২ রান। চার্লস ২৫ বলে পেয়েছেন ফিফটি, ফ্লেচারও ২৬ বলে পেয়েছেন ফিফটি।
এরপর দুজন আরও বেশি বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। খুলনার সব বোলারকেই কচুকাটা করছিলেন দুজন, জনসন একটু বেহসি বিধ্বংসী ছিলেন ৩৭ বলেই পৌঁছে গিয়েছিলেন নব্বইয়ের ঘরে। তখনও সাত ওভারের বেশি বাকি। কিন্তু শহীদুলের বলে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন ৯০ রান, রিভিউটাও হারিয়েছেন। খানিক পরে সেই রিভিউ দরকার হয়েছিল সিলেটের, যখন মিঠুনকে ৩ রানে এলবিডব্লু দিয়ে দিয়েছেন আম্পাউয়ার। বল ব্যাটে লেগেছিল মিঠুনের, স্টাম্পেও ছিল না। কিন্তু রিভিউ নিতে পারেননি মিঠুন।
মোসাদ্দেক ১১ রান করে ফেলেছিলেন, কিন্তু রবিউলের বলে রুশোর দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিরে গেছেন। ফ্লেচার ঝড় অবশ্য চলছিল এক দিক থেকে, দেহতে দেখতে পৌঁছে গেছেন নব্বইয়ের ঘরে। ১৯তম ওভারে গিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে পেয়েছেন নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি, সেটি মাত্র ৫৩ বলে। একটা সময় মনে হচ্ছিল বিপিএলের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাও নতুন করে লেখাবে সিলেট। সেটা শেষ পর্যন্ত হয়নি, ২৩৯ রানের রেকর্ড আর ছোঁয়া হয়নি তাদের। বিপিএলে সিলেটের ২৩২ রান এখন চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোর।