তরুণ পেসারদের 'মাথায় না ওঠানোর' অনুরোধ মুশফিকের
বিপিএলের ঠিক অর্ধেকও হয়নি এখনও। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় প্রাপ্তি বলতে কিছু সম্ভাবনাময় তরুণ পেসারের ঝলক সবার আগে আসবে। চট্টগ্রামের মেহেদী হাসান রানা, ঢাকার হাসান মাহমুদ, রংপুরের মুকিদুল ইসলামরা আলাদা করে নজর কেড়েছেন। খুলনা দলেও যেমন রবিউল হক ও শহিদুল ইসলামরা আজকের ম্যাচের আগে ভালোই করছিলেন। তবে খুলনা অধিনায়ক মুশফিক তরুণ পেসারদের নিয়ে এখনই উচ্ছ্বসিত হচ্ছেন না। বরং তাদের কাছ থেকে কিছু আশা না করে খেলাটা উপভোগ করার পরামর্শ দিলেন। আর প্রচারমাধ্যমের কাছে মুশফিক অনুরোধ করলেন যেন তাদের মাথায় না উঠিয়ে ফেলা হয়।
প্রসঙ্গটা এসেছিল আসলে খুলনার বোলিং নিয়ে। প্রথম তিন ম্যাচে বোলিং কমবেশি ভালো খারাপ হলেও খুলনার জিততে সমস্যা হয়নি। কিন্তু আজ সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেছে তাদের। তরুণ শহীদুল, রবিউলরা সহ সিনয়র শফিউল, আমিররাও লাইন খুঁজে পাননি। খুলনার বোলিং ‘ওয়ান ডাইমেনশনাল’ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুশফিক মুচকি হেসে মনে করিয়ে দিলেন, ‘তিন ম্যাচ আগেই এই বোলিং নিয়ে জিতেছি। অবশ্যই আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল, এখানে রাতের খেলায় রান হচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে কীভাবে আমরা আরেকটু টাইট করতে পারি।’
তবে বোলারদের কথা বলতে গিয়ে তরুণ পেসারদের নিয়ে মুশফিক বেশ সিরিয়াসভাবেই বললেন, ‘আর বোলারদের ক্ষেত্রে আমি বলব মাত্র কয়েকটা ম্যাচ গেছে। এখনই তাদের বিচার না করে খেলতে দেওয়া উচিত। তাদের আরেকটু সুযোগ দেন। আমার অনুরোধ থাকবে, তাদের এখনই মাথায় উঠিয়ে ফেলেন না। তিন দিন আগেও কিন্তু এই দল নিয়ে জিতেছি। আবার আজকে এই দল নিয়েই হেরেছি। তো আমার মনে হয় তাদের পরের দুই তিন বছর খেলতে দেন কোনো চিন্তা ছাড়া। সামনে বিশ্বকাপ আছে না কী কাপ আছে সেটা নিয়ে ভাবার দরকার নেই। আমার মনে হয় তাদের চাপ দিয়েন না। তাদের দুই তিন বছর কোনো ভাবনা ছাড়া খেলতে দিলে আপনারাই বুঝতে পারবেন কে আসছে কে যাচ্ছে।’
কদিন আগেই রংপুরের মুকিদুল যেমন বলেছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার চোখ আছে। মুশফিক নিজের কথা না ভেবে তরুণদের দলের ভাবানাটা আগে ভাবতে বললেন, ‘তাদের উঠতি বয়স, খেলাটা উপভোগ করতে দিন। তাদের ইন্ডিভিজুয়াল বানিয়ে দিয়েন না। তারা দলের জন্য খেলছে, তাদের যেন দলের ওপর ফোকাস থাকে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওরা সামনে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করবে, তো ওদের মাথায় রাখতে হবে দেশ সবার আগে। সবচেয়ে বেশি উইকেট নিতে হবে এরকম চিন্তা না করে বরং দলের আমি কী করতে পারলাম সেটা ওদের ভাবতে হবে। উইকেট না পেলেও অন্তত রান আটকে অবদান রাখা যায়। এই সংস্কৃতি যেন তাদের মধ্যে থাকে। মন খুলে ওরা বল করুক। ভুল করুক শিখুক, এরপর একটা পূর্নাঙ্গ প্যাকেজ হিসেবে আসুক। জাতীয় দলে এসে সেখান থেকে যেন তাদের ছিটকে পড়তে না হয়।’
তার মানে এই না, প্রচারের আলোয় থাকাটা মুশফিক খারাপ বলছেন, ‘লাইম লাইটে থাকা খারাপ না, সেটা হলে তাদের দায়িত্ব বাড়বে। কিন্তু এমন না একটা বিপিএলে ভালো করলে শেষ ৫-১০ বছর যে ভালো করেছে তাকে সরিয়ে দিয়ে আপনি চলে আসবেন।’
এই প্রসঙ্গে বললেন মোস্তাফিজের কথা, ‘হতে পারে একটা বিপিএল কারও জন্য খারাপ যেতেই পারে। যেমন মোস্তাফিজ হয়তো এখন নিজের সেরা ফর্মে নেই। কিন্তু এখনও আমার কাছে ও চ্যাম্পিয়ন বোলার। বাংলাদেশের এক ওভারে চার রান ঠেকাতে হলে আমি ওকেই বল দেব। সেটা ও ফর্মে থাক আর না থাক। এরকম একটা প্রতিভা, সবাই এমনভাবে বলছে যেন কোথায় না কোথায় চলে গেছে। তো আমার অনুরোধ, এরকম তুলনা যেন করা না হয়। অবশ্যই এটা খুব একটা লক্ষণ যে অনেক পেস বোলার আসছে। কারণ ভবিষ্যতে পেসারদের চোট অনেক বেশি হয়। তাদের বেশি ব্যাক আপ থাকলে সেটা সবার জন্যই ভালো। কিন্তু আমার অনুরোধ হচ্ছে, তাদেরকে আপাতত উপভোগ করতে দেন। আর যারা এত বছর ধরে খেলে আসছে তাদের ওই সম্মানের জায়গাটা দেন।’