দেশীদের সুযোগ দেওয়া না হলে শিখবে কীভাবে, প্রশ্ন মাহেদীর
শুধু বোলিং দিয়েই ম্যাচসেরার দাবিটা জানান দিতে পারতেন ঢাকা প্লাটুনসের মাহেদী হাসান। আবার শুধু ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংসটাও যথেষ্ট হতে পারত ম্যাচসেরার জন্য। বলতে গেলে একাই তো আজ হারিয়ে দিয়েছেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে। বিপিএলে বল হাতে নিজেকে চেনাচ্ছেন কয়েক মৌসুম থেকে, তবে অলরাউন্ডার মাহেদীর এমন বিধ্বংসী যুগল রূপ দেখা গেছে কমই। আজ সংবাদ সম্মেলনে বলে গেলেন, ভরসা করার মতো জায়গায় সুযোগ পেলে দেশীরা আরও ভালো করতে পারে।
বল হাতে দেশী পেসাররা এর মধ্যেই নজর কেড়েছেন আলাদা করে। হাসান মাহমুদু, মুকিদুদের মতো তরুণ পেসারদের নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। মুশফিক অবশ্য অনুরোধ করেছেন, এখনই এসব তরুণদের যেন ‘মাথায় উঠিয়ে’না তোলা হয়। দেশী ব্যাটসম্যানরাও খারাপ করছেন না। ইমরুল, মোহাম্মদ নাঈম, মুশফিক, মিঠুনরা এর মধ্যেই বড় ইনিংস খেলেছেন। যদিও বিদেশি ব্যাটসম্যানদের ওপরেই বরাবরের ওপর ভরসা বেশি দলগুলোর। মাহেদীর সেটি নিয়ে যেন একটু অতৃপ্তিও আছে, ‘আসলে দেশি খেলোয়াড়েরা এ টুর্নামেন্টে তেমন সুযোগ পায় না। সব ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বিদেশিদের উপর নির্ভরশীল থাকে যে ওরা সব কিছুই করতে পারবে। দেশিদের ওইভাবে সুযোগ না দেন আমরা শিখব কীভাবে। আমাদের শেখার একটা অপশন থাকতে হবে এমন বড় ইভেন্টে। এই অপশনটা থাকে না ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। তারা সবসময় বিদেশিদের উপর বিশ্বাস করে বেশি।’
মাহেদী আজ ব্যাট করেছেন তিনে। এমন নয় যে, টপ অর্ডারে সুযোগ একেবারেই পাননি। দ্বিতীয় ম্যাচেও ঢাকার হয়ে তিনে ব্যাট করেছিলেন, কিন্তু ১২ রানের বেশি করতে পারেননি। আজ লরি এভান্সের অনুপস্থিতিতে প্রমোশন পেয়ে সেটি ভালোমতোই কাজে লাগিয়েছেন, ‘ ঘরোয়ায় যদি দেখেন, ফার্স্ট ক্লাস দেখেন আমি পেটাতে পারি। কিন্তু বিপিএল একটু ভিন্ন জায়গা, সুযোগটা ওভাবে পাই না সত্যি বলতে। আপনি দেখবেন আমার ইনিংসগুলা সবসময় আমি একই জায়গায় ব্যাট করতে পারি না। কখনো দশ নম্বর কখনো নয় নম্বর, সেজন্য শেষের দিকে আমার জন্য কঠিন, ওই সময় ভালো বোলার থাকে, ইয়র্কার করে বাউন্সার মারে। আমার জন্য কঠিন হয়ে যায়। নতুন বলের জন্য আমি ঠিক আছি। পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারি। কোচেরও সেই প্ল্যানটা ছিল।এই উইকেটে কেউ যদি ৫০ বল খেলে ফেলে তার জন্য ১০০ করাটা সহজ। বিশেষ করে টপ অর্ডারে যারা খেলে। উইকেট খুবই ভালো। সে যদি চায় সব কিছুই করতে পারে।’
ওই সময় তামিমের সঙ্গে যখন ব্যাট করছিলেন, নিজেদের পরিকল্পনাও জানালেন, ‘আমি সুযোগ নিচ্ছি, তামিম ভাই স্ট্রাইক রোটেট করবে এটাই ছিল পরিকল্পনা। সবাই মারতে গেলে কঠিন আসলে। তখন পাওয়ার প্লে-তে মুজিবও বল করছিল। আমি আমার জোনে বলগুলো পেয়ে গেছি এজন্য তামিম ভাইয়ের কষ্ট করা লাগে নাই। তামিম ভাই নিজেও চেয়েছিল আস্তে আস্তে খেলে শেষ করে আসবে। যেহেতু রান হচ্ছিল। আমাদের এক ওভারে মে বি ২৮ রান হয়েছিল। ওটা অনেক ব্যবধান তৈরি করে দিয়েছে।’
মাহেদীর আজকের ২২ বলে ফিফটি এবারের বিপিএলে দেশী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এখন পর্যন্ত দ্রুততম। বিদেশীদের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যটা ধরা পড়েছে তার চোখে, ‘আমরা একটু পিছিয়ে আছি শারীরিক শক্তির দিক থেকে। বিদেশি সবাইকে দেখেন ওরা অনাকে শক্তিশালী। আমরা যেটা চার মারি ওরা সেটা ছয় মারে। পার্থক্যটা এখানেই। এই জন্যই ওরা এগিয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে বলব যে দেশি খেলোয়াড়রা এতোটা খারাপও করছে না। তারা সুযোগ যেটা পাচ্ছে মোটামুটি ভালোই করছে।’
বোলারদের জন্য চট্টগ্রামের উইকেট এবার বড় চ্যালেঞ্জই। সেই জায়গায় ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দেওয়াটা দুর্দান্তের চেয়েও বেশি কিছু। এই চ্যালেঞ্জ জয়ে আলাদা তৃপ্তি আছে মাহেদীর, ‘
আমি বিপিএল খেলছি চার বছর ধরে। আমার কিছু অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু সবসময় একইরকম যাবে না এই উইকেটে। উইকেটটা বেশি ভাল।দেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক কিছু শিখার আছে। এইরকম উইকেট পাওয়া মুশকিল। মিরপুর সিলেট যাই বলেন এখানে বেশি ব্যাটিং সহায়ক উইকেট আরকি। জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা জায়গা। ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ করে বল করতে হয়। লাকিলি আমি ওদের দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পেয়ে গেছি তাতে হয়ত সফল হয়েছি। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটসম্যান থাকলে ভিন্ন কিছু হতে পারত।’