• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    বিপিএলে নখ কামড়ানো রোমাঞ্চ কই?

    বিপিএলে নখ কামড়ানো রোমাঞ্চ কই?    

    ঢাকা পর্বের প্রথম ভাগ ও চট্টগ্রাম পর্ব শেষ হয়েছে বিপিএলের, ম্যাচও হয়ে গেছে প্রায় অর্ধেকের মতো। এবারের উইকেট আগের যে কোনো বারের চেয়ে এখন পর্যন্ত ভালো, রানও উঠেছে বেশ। দেশী তরুণদের পেসাররা ভালো করছেন, দেশী ব্যাটসম্যানরাও কমবেশি রানের মধ্যে আছেন- তার চেয়ে বড় কথা ব্যাটে-বলে ম্যাচে ব্যবধানও দেশিরা গড়ে দিচ্ছেন। অপ্রাপ্তি আর ভুলও কম নয়, তবে  একটা জায়গায় এবারের বিপিএল অনেকটাই ম্যাড়মাড়ে হয়ে যাচ্ছে। শেষ বলের বা শেষ ওভারের রোমাঞ্চ যে এবার তেমন একটা নেই!

    এখন পর্যন্ত বিপিএলের এবার যেসব ম্যাচ হয়েছে, তার মধ্যে একদম রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ হয়েছে হাতেগোণা। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচটা ছিল সিলেট ও চট্টগ্রামের মধ্যে। সেটা মোটামুটি জমলেও ঠিক নখ কামড়ানো হয়নি। এরপরের বেশ কয়েকটি ম্যাচ হয়েছে একপেশে। বলতে গেলে টুর্নামেন্টের প্রথম জমজমাট ম্যাচটা হয় চট্টগ্রাম পর্বের শুরুতে এসে। রাজশাহী রয়্যালসের ১৮৯ রান তাড়া করে দুই বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে ম্যাচটা জিতে যায় খুলনা টাইগারস। তবে ম্যাচটা আসলে শেষ ওভারের আগেই প্রায় জিতে গিয়েছিল খুলনা। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৪ রান, মুশফিক আউট হয়ে গেলেও ফ্রাইলিংক বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন। সেদিনই সিলেট ও চট্টগ্রামের ম্যাচটা উত্তেজনা ছড়ালেও দুই ওভার ও চার উইকেট হাতে রেখেই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম।

    শেষ ওভারের সেই অর্থে প্রথম দাঁত কামড়ানো ম্যাচ হয়েছে কুমিল্লা ওয়ারিয়রর ও রংপুর রেঞ্জার্সের ম্যাচে। শেষ ওভারে কুমিল্লার জেতার জন্য দরকার ছিল ১১ রান, ক্রিজে ছিলেন মালান ও শানাকা। রংপুরের পার্ট টাইম বোলার টম অ্যাবেলের প্রথম বলেই ছয় মেরে দেন মালান। কিন্তু দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেলের পর তৃতীয় বলে আউট হয়ে যান শানাকা, শেষ তিন বলে দরকার ছিল ৪ রান। চতুর্থ বলেই চার মেরে ম্যাচটা শেষ করে দেন মালান।

    এরপর চট্টগ্রামের সাথে ঢাকা ও কুমিল্লার দুইটি হাই স্কোরিং ম্যাচও জমেছে বেশ । কিন্তু শেষ ওভারের আগেই থিতিয়ে গেছে উত্তেজনা, বলতে গেলে মেহেদী হাসান রানার বোলিং তার আগেই নিশ্চিত করে দিয়েছে চট্টগ্রামের জয়। এরপর আবার একটা নখ কামড়ানো ম্যাচ হয়েছে ঢাকা ও কুমিল্লার মধ্যে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৮ রান দরকার ছিল ঢাকার, সৌম্যের প্রথম দুই বল থেকে আসে ১ রান। তবে এর পরের বলেই ছয় মেরে দেন আফ্রিদি, পরের বলটা ডট হলে শেষ দুই বলে দরকার ছিল ১ রান। পঞ্চম বলেই সেটা পেয়ে যান আফ্রিদি।

    গত বিপিএলে শুরুতেই বেশ কয়েকটি থ্রিলার হয়েছিল। তৃতীয় ম্যাচটা লো স্কোরিং হলেও সিলেট-কুমিল্লার সেই ম্যাচটা শেষ হয়েছিল শেষ ওভারের পঞ্চম বলে। চট্টগ্রাম ভাইকিংসের ম্যাচগুলোতে একটু বেশি উত্তেজনার ছোঁয়া ছিল। সিলেটের সঙ্গে ৫ রানে হেরে যায় চট্টগ্রাম, পরে খুলনার সাথে চট্টগ্রামের ম্যাচটা দেখে বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম টাইয়ের পর সুপার ওভার। সে বছর ঢাকা পর্বের শুরুতে ঢাকা ও রংপুরের হাই স্কোরিং ম্যাচে উত্তেজনা ছিল শেষ বল পর্যন্ত। শেষ ওভারে প্রথম দুই বলে চার খেয়েও শেষ পর্যন্ত অখ্যাত এক আলিস ইসলাম জিতিয়ে দেন ঢাকাকে। ঢাকাতেই আবার কুমিল্লার সঙ্গে মুশফিকের দারুণ এক ইনিংসের পর শেষ ওভারে জিতে যায় চট্টগ্রাম। টুর্নামেন্টের প্রথম অর্ধেকের মধ্যে অন্তত চার-পাঁচটি একেবারে নখ কামড়ানো ম্যাচ দেখে ফেলেছিল বিপিএল।

    তার আগের বিপিএলেও শেষ ওভারের রোমাঞ্চ ছিল তৃতীয় ম্যাচেই। কুমিল্লার বিপক্ষে শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ছিল সিলেটের, ডিজে ব্রাভোর ওভার থেকে সেটি তুলে ফেলেছিলেন সোহান। ঢাকা পর্বে খুলনা ও ঢাকার ম্যাচটাও শেষ ওভারের পঞ্চম বল পর্যন্ত গড়িয়েছিল। এরপর ঢাকা-কুমিল্লা ও রংপুর-সিলেটের মধ্যে একই দিনে আর দুইটি থ্রিলার দেখতে পায় ঢাকা। প্রথমে লো স্কোরিং ম্যাচে ঢাকাকে দুই বল বাকি থাকতে হারিয়েছে কুমিল্লা। অন্যদিকে রংপুরের সঙ্গে শেষ ওভারে ১৯ রান নিতে পারেনি সিলেট।

    এবার রান হলেও শেষ ওভারের এই উত্তেজনা যেন অনেকটাই কম। ঢাকা পর্ব থেকে কি তা ফিরে আসবে?