ইমরুলের ৫৪*-তে ঢাকার ১২৪ অনায়াসে পেরিয়ে গেল চট্টগ্রাম
ঢাকা প্লাটুন ১২৪/৯, ২০ ওভার
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১২৫/৪, ১৮.৪ ওভার
চ্যালেঞ্জার্স ৬ উইকেটে জয়ী
চট্টগ্রামের রান-উৎসব পেরিয়ে ঢাকায় ফিরে বিপিএলের প্রথম ম্যাচ হলো লো-স্কোরিং। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ঢাকা ১২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি, প্রথমদিকে চাপে পড়লেও ইমরুল কায়েসের ফিফটিতে ঢাকাকে টপকে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। রানতাড়ায় ইমরুল অপরাজিত ছিলেন ৫৩ বলে ৫৪ রান করে।
প্রথম ৭ ওভারে চট্টগ্রাম তুলেছিল মাত্র ৩২ রান, ২ উইকেট হারিয়ে। তবে সেটি ছিল মূলত মাশরাফি বিন মুর্তজার বোলিংয়ের প্রভাব। শুরু থেকে টানা ৪ ওভারের স্পেল করেছেন ঢাকা অধিনায়ক, এ উইকেটও ছিল তার বোলিংয়ের জন্য দারুণ। একদিক থেকে চাপ ধরে রেখেছিলেন, মাহেদিকে দুই ছয় মারা লেন্ডল সিমন্স মাশরাফিকে ফ্রন্টফুট ক্লিয়ার করে খেলতে গিয়ে এজড হয়ে ফিরেছেন।
মাশরাফির ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ১ উইকেটের বোলিংয়ের পরই চাপ আলগা হয়ে গেছে চট্টগ্রামের, ঢাকাও আর ফিরতে পারেনি ম্যাচে। মাঝে মাহেদিকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন জুনাইদ সিদ্দিকও।
৮ম ওভারেই থিসারা পেরেরার কাছ থেকে ১৮ রান তুলেছেন ইমরুল-ওয়ালটন, পরের ওভারে শাদাব দিয়েছেন আরও ১২। রিয়াজের শর্ট বল সামলাতে না পেরে ওয়ালটন ফাইন লেগে আফ্রিদিকে ক্যাচ দিয়েছেন ১৬ বলে ২৫ রান করে, তবে ততক্ষণে রানতাড়ায় শক্ত ভিত পেয়ে গেছে চট্টগ্রাম।
ইমরুলের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটির পর রিয়াজের ইয়র্কারে বোল্ড হয়েছেন রায়ান বার্ল, তবে ইমরুল টিকে ছিলেন ঠিকই। ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৫টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছয়, এর মাঝে পরের ছয়টি গিয়ে পড়েছিল গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামও তো আছে ওই ‘গ্র্যান্ড’ পজিশনেই।
এর আগে ঢাকার ব্যাটিংয়ের গল্পটা ছিল এমন- তিন রান-আউট, দুই স্টাম্পিং, তিনটি ডাক, মাত্র তিনজন ব্যাটসম্যানের ১০০-এর ওপর স্ট্রাইক রেট- যাদের দুজন আবার নয় ও দশ নম্বর ব্যাটসম্যান। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সঙ্গে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামা ঢাকা মিরপুরের প্রায় কুয়াশচ্ছন্ন দুপুরে ঢাকা খেই হারিয়ে শেষ পর্যন্ত তুলতে পেরেছিল ১২৪ রান, সেটাও নয় নম্বরে নামা ওয়াহাব রিয়াজের ১৫ বলে ২৩ ও দশে নামা মাশরাফি বিন মুর্তজার ১২ বলে ১৭ রানের ক্যামিওতে।
ঢাকার প্রথম ছন্দপতন হয়েছিল এনামুল হক বিজয়ের রান-আউটে, ৫.২ ওভারে তখন তাদের রান ৩২। সে ওভারেই গোল্ডেন ডাক মেরেছেন আগের দুই ম্যাচে ম্যাচসেরা মাহেদি হাসান, লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে নুরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। পাওয়ারপ্লেতে সেই ৩২ রান তোলার পর প্রথম ১০ ওভারে ঢাকা তুলেছিল ৫৮ রান। চাপ কমাতে নাসুম আহমেদের অফস্টাম্পের বাইরের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেড়িয়ে এসে মাঠ থেকেই বের হয়ে যেতে হয়েছে তামিমের, ২৭ বলে ২১ রান করেছেন, গিয়ারটা আর বদলানো হয়নি তার।
জাকের আলি শুরু থেকেই চাপে ছিলেন, রায়ান বার্লের লেগস্পিনের নাগাল না পেয়ে তিনিও হয়েছেন স্টাম্পড। সে ওভারেই টেনে মারতে গিয়ে ওয়াইড লং-অনে মুক্তার আলির দারুণ ক্যাচের শিকার শাহিদ আফ্রিদি। পরের ওভারে মুক্তার এসে নিজের বলে নিয়েছেন আরেকটি ভাল ক্যাচ, এবার তার শিকার শাদাব খান। সে ওভারে থিসারা পেরেরার উইকেটও পেতে পারতেন মুক্তার, তবে তার ক্যাচ লাইনে ছেড়েছিলেন ইমরুল।
পরের ওভারে অবশ্য মুক্তার পেয়েছেন পেরেরার উইকেট, ৮ নম্বরে নেমে ৯ বলে ৬ রানের বেশি করতে পারেননি পেরেরা। এতক্ষণ একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মুমিনুল রিয়াজের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে হয়েছেন রান-আউট, ৩৪ বলে ৩২ রান করে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ স্কোরার। তার আউটের ওভারেই রুবেলকে পরপর দুই চারে মুমিনুল গিয়ার বদলানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অবশ্য। সঙ্গে রিয়াজও মেরেছিলেন একটি ছয়।
রিয়াজ পরে প্লাঙ্কেটকে আরেকটি ছয় মেরেছেন মিডউইকেট দিয়ে, আর মাশরাফি মেরেছিলেন তিনটি চার। শেষ ৪ ওভারে ৪৬ রান তুলেছে ঢাকা।