মুশফিক-নজিবুল্লার পর শহীদুলে আবার জয়ে ফিরল খুলনা
খুলনা ২০ ওভারে ১৮২/৭
রংপুর ২০ ওভারে ১৩০/৯
ফলঃ খুলনা ৫২ রানে জয়ী
টানা তিন জয়ের পর হেরেছিল খুলনা, আর চার হারের পর জিতেছিল রংপুর। দুই দল মুখোমুখি হতে আবার পালটে গেল সমীকরণ। খুলনা আবার ফিরল জয়ে, আর রংপুর হারে।
শেন ওয়াটসন এসেছিলেন, আরও এক দফা অধিনায়কের পরিবর্তন হয়েছিল রংপুরের। কিন্তু লাভ হলো না। খুলনার ছুঁড়ে দেওয়া ১৮২ রান তাড়া করে কাছাকাছিও যেতে পারেনি, ম্যাচ হেরে গেছে ৫২ রানে।
টসের সময় মুশফিক বলেছিলেন ১৫০ অন্তত করতে চান। আর শিশিরের কথা মাথায় রেখে ১৬০ করলে ভালো। আজ মিরপুরের প্রথম উইকেট যেরকম ছিল, তাতে মুশফিকের চাওয়া কঠিনই মনে হচ্ছিল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে অনেকটাই সহজ হয়েছে উইকেট। আর মুশফিক পেয়েছেন চাওয়ার চেয়েও অনেক বেশি রান। ১৮২ রানে থেমেছে খুলনা। সেই পাহাড় আর টপকাতে পারেনি রংপুর।
মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত উড়ন্ত একটা সূচনা এনে দিয়েছিলেন খুলনাকে। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর প্রথম ওভার থেকে দুজন নিলেন ১৮ রান। লেগ স্টাম্পের ওপর বল করে কাজটা সহজ করে দিয়েছেন মুগ্ধই। মিরাজ খেলছিলেন দেখার মতো কিছু শট, মোস্তাফিজের পরের ওভারে একটা চারও মারলেন। কিন্তু গুডলেংথ বলে খোঁচা দিলেন উইকেটের পেছনে। পরের বলটা একই লেংথের, এবার শরীর থেকে দূরে ব্যাট চালালেন ইনফর্ম রাইলি রুশো। অধিনায়ক ওয়াটসন স্লিপে ক্যাচ দিলেন, পর পর দুই বলে দুই উইকেট মোস্তাফিজের। শামসুর এলেন ক্রিজে, একটি ছয়ও মারলেন। কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারলেন না, লুইস গ্রেগরির বলে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে। পাওয়ারপ্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে খুলনা করল ৪৯।
শান্ত আগের ম্যাচের ব্যর্থতা কাটিয়ে আজ বড় কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। সঞ্জিতের বলে দারুণ একটা ছয় মারলেন অফ সাইডে, কিন্তু নবীকে মারতে ক্যাচ দিলেন। আউট হলেন ১০ বলে ৩০ রান করে। ১০ ওভার শেষে খুলনার রান ৮৪।
মুশফিক ধীরে ধীরে শট খেলা শুরু করছিলেন, তবে নজিবুল্লাহ জাদরান শট খেলা শুরু করলেন শুরু থেকেই। মুকিদুলের ওভারটাই বেছে নিলেন। ১৩তম ওভার থেকে ১৬ রান পেল খুলনা। সঞ্জিতের পরের ওভারে তিনটি চার পেল খুলনা। দুইটি মারলেন মুশফিক, একটি নজিবুল্লাহ। মোস্তাফিজের ওভারে ছয় মেরে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পেলেন মুশফিক, ওদিকে নজিবুল্লাহও তুলতে শুরু করে দিয়েছেন ঝড়। দেলপোর্টের ওভারে দুইটি চারের পর একটি ছয়ও মারলেন, মুশফিক মারলেন আরেকটি। ওই ওভার থেকে এলো ১৯ রান। তবে গেগরিকে উড়িয়ে মারতে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিলেন সাদমানকে। আউট হলেন ২৬ বলে ৪১ রান করে।
মুশফিক শেষ ওভারে গিয়ে মোস্তাফিজের বলে আপার কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন থার্ডম্যানে, তার আগে করেছেন ৪৮ বলে ৫৯ রান। পরের বলেই রান আউটে শেষ হলে ফ্রাইলিংকের ২ বলে ৩ রানের ক্যামিও। মোস্তাফিজ অনেক দিন পর দুর্দান্ত একটা শেষ ওভার করলেন, দিয়েছেন মাত্র ৩ রান। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট।
তাড়া করতে নেমে রংপুরের বড় ভরসা ছিলেন শেন ওয়াটসন। ওপেনিং করতেই নেমেছিলেন, কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই ফ্রাইলিংকের বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন ডিপ স্কয়্যারলেগে। আউট হয়ে গেছেন ৫ রানে।
মোহাম্মদ নাঈম তার স্ট্রোকপ্লের ছটায় দ্রুত রান তুলছিলেন। তিন চার আর এক ছয়ে উঠে গিয়েছিল ২০ রান। কিন্তু আমিরের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। ক্যামেরন দেলপোর্টও বেশি করতে পারেননি, ৯ রান করে ক্যাচ দিয়েছেন শফিউলের বলে।
ফর্মে থাকা লুইস গ্রেগরি একটু আশা দেখাচ্ছিলেন। তানভীরের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে পর পর দুইটি ছয়ও মেরেছিলেন। কিন্তু ২৬ বলে ৩৪ রান করে সেই তানভীরের বলেই শেষ পর্যন্ত স্টাম্পড হয়ে গেছেন। ফজলে রাব্বির ৪ রানের নড়বড়ে ইনিংসটা তার আগেই শেষ হয়ে গেছে শহিদুলের বলে আউট হয়ে।
মোহাম্মদ নবী আজও ব্যর্থ, ৭ রান করে আউট হয়ে গেছেন শহিদুলের বলে। শহিদুল শো শুরু হয়ে গেছে এর মধ্যেই। দারুণ এক স্লোয়ারে বোল্ড করেছেন জহুরুলকে, পরে স্লোয়ারে আউট করেছেন সাদমানকেও। ৪ উইকেটে ২৩ রান দিয়ে শেষ করেছেন বোলিং। রংপুরের পরাজয় তার অনেক আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। শেষ দিকে মোস্তাফিজ চার-ছয় মেরে খানিকটা বিনোদন দিয়েছেন কেবল। মোস্তাফিজের ২১ হয়ে থেকেছে রংপুরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।