মালিক-রাসেল ঢাকা পড়ল সৌম্যের ৮৮
রাজশাহী রয়্যালস ২০ ওভারে ১৯০/৪
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ২০ ওভারে ১৭৫/৪
ফলঃ রাজশাহী ১৫ রানে জয়ী
সর্বশেষ কবে বিপিএলে ফিফটি করেছিলেন সৌম্য সরকার? সাড়ে চার বছর আগে করা একমাত্র ফিফটি তাঁর নিজের মনে আছে কি না সন্দেহ। এবার কুমিলার হয়ে টি-টোয়েন্টিরই ক্যারিয়ারসেরা ৮৮ রান করলেন। কিন্তু সেটা দলকে জেতানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। ম্যাচ থেকে আসলে যে শুরু থেকেই ছিটকে গেছে কুমিল্লা, ১৫ রানের হারটা বলছে না রাজশাহী আসলে জিতেছে সহজেই। এই জয়ে ছয় ম্যাচে পঞ্চম জয় পেল রাজশাহী, আর কুমিল্লা সাত ম্যাচের পাঁচটিতেই হারল।
মিরপুরে আজ রোদ উঠেছে, উইকেটও আগের চেয়ে বেশ ভালো হয়েছে। শুর থেকেই ব্যাটে আসছিল বল, আবু হায়দার রনির প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে লিটন দাস ও আফিফ হোসেন জানান দিচ্ছিলেন , এই উইকেটে রান আসবে।
শুরুতে একটু স্লথ থাকার পর আল আমিনের বলে চার-ছয় মেরে লিটন গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সানজামুল এসেই ফেরালেন তাকে, স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লিটন ফিরলেন ১৯ বলে ২৪ রান করে। পাওয়ারপ্লেতে রান উঠেছে ৫৬। আফিফ এর মধ্যেই হাত খুলে শুরু করেছিলেন, রবিউল ইসলাম রবির বলে চার-ছয়ও মেরেছিলেন। সৌম্যের বলে আরেকটি চার মেরে পৌঁছলেন চল্লিশের ঘরে। কিন্তু সৌম্যের একটু ভেতরের দিকে ঢোকা বলটা শট খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজে হয়ে গেলেন বোল্ড। ফিরলেন ৩০ বলে ৪৩ রান করে।
রবি বোপারা এলেন, কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ১২ বলে ১০ রান করে মুজিবের বলে কাট করতে গিয়ে বল টেনে নিয়ে এলেন উইকেটে। শোয়েব মালিক ততক্ষণে শুরু করে দিয়েছেন শট খেলা। আর অধিনায়ক রাসেল পুরোপুরি ফিট না হয়েও তার মতোই ঝড় তুলেছেন। মুজিবকে ছয় মেরে প্রথম আগ্রাসন শুরু মালিকের। ১৭তম ওভারে রনির বলে দুই ছয় মেরে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রাসেল। পরের ওভারে আল আমিনকে আরও দুই ছয় মেরেছেন রাসেল। এরপর মালিকের পালা। ডেভিড ভিসের ১৯তম ওভার থেকে নিয়েছেন ১৬ রান, ৩৫ বলে পেয়েছেন ফিফটি। শেষ ওভারে আরও একটি ছয় মেরেছেন, ৩৮ বলে ৬১ রানে শেষ ওভারে হয়েছেন রান আউট। আর রাসেল অপরাজিত ছিলেন ২১ বলে ৩৭ রান করে।
এই রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকে হোঁচট খেয়েছে কুমিল্লা। রবিউল ইসলাম রবি, স্টিয়ান ফন জিল কেউই পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি। ডেভিড মালান বড় ভরসা ছিলেন, কিন্তু মাত্র ৩ রান করে রাসেলের বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন ডিপ স্কয়্যার লেগে। এর মধ্যে সাব্বির আর সৌম্য চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছিলেন না। ৩৬ বলে ফিফটি পেয়েছেন সৌম্য, কিন্তু সাব্বির আউট হয়ে গেছেন ২৩ রান করে।
শেষ ২ ওভারে ৫৬ রান দরকার যখন, কুমিল্লার হার নিশ্চিতই হয়ে গেছে। তবে সৌম্য এরপর ঝড় তুলেছেন, সঙ্গ দিয়েছেন ভিসেও। হারের ব্যবধান তাই ১৫ রানে নিয়ে এসেছে কুমিল্লা। ৪৮ বলে ৮৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য, পাঁচটি চারের সঙ্গে মেরেছেন ছয়টি ছয়।
তার আগে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে টসে জিতেছেন কুমিল্লার নতুন অধিনায়ক ডেভিড মালান, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বল করার। এখন পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই জিতেছে রাজশাহী, অন্যদিকে কুমিল্লা ছয়টি ম্যাচের মধ্যে জিতেছে দুইটিতে।
কুমিল্লা দলে আছে চারটি পরিবর্তন। দাসুন শানাকা ও ভানুকা রাজাপাকশে দেশে ফিরে গেছেন, দলে যোগ দিয়েছেন দুই দক্ষিণ আফ্রিকান স্টিয়ান ফন জিল ও ডেভিড ভিসে। সেই সঙ্গে সুমন খান ও ইয়াসির রাব্বির জায়গায় এসেছেন আবু হায়দার রনি ও সানজামুল ইসলাম। রাজশাহীতে আবু জায়েদ রাহী ও কামরুল ইসলাম রাব্বির জায়গায় এসেছেন তাইজুল ইসলাম ও ইরফান শুক্কুর।