সিলেটকে প্রায় বিদায় করে অক্সিজেন পেল রংপুর
সিলেট থান্ডার ১৩৩/৯, ২০ ওভার
রংপুর রেঞ্জার্স ১৩৪/৩, ১৭.২ ওভার
রংপুর ৭ উইকেটে জয়ী
পয়েন্ট টেবিলের তলানীর দুই দলের লড়াই, জয়টা তাই সিলেট বা রংপুর- দুদলের কাছেই ছিল দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। সে লড়াইয়ে মোহাম্মদ মিঠুনের ৬২ রানের পরও সিলেটের বোর্ডে ১৩৩ রান যথেষ্ট হলো না কোনোভাবেই, ক্যামেরন ডেলপোর্টের ঝড়ো ফিফটির সঙ্গে মোহাম্মদ নাঈমের ৫০ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে সিলেটের সে রান রংপুর রেঞ্জার্স পেরিয়ে গেছে ১৬ বল ও ৭ উইকেট বাকি রেখেই। খাতা-কলমে সম্ভাবনা থাকলেও সিলেটের বিদায়ঘন্টা বেজে গেছে প্রায়, আর হাঁসফাঁস করতে থাকা রংপুর পেয়েছে সামান্য অক্সিজেনের সরবরাহ। টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে এটি দ্বিতীয় জয় তাদের।
রানতাড়ায় শুরুতে হাঁসফাঁস না করলেও একটু চাপে ছিল রেঞ্জার্স, মূলত এবাদত হোসেনের তোপে। দ্বিতীয় ওভারে টানা চার ডটের পর দারুণ এক ইয়র্কারে ওয়াটসনের অফস্টাম্প উপড়ে গেছে, প্রথম স্পেলে মাত্র ২ ওভারে ২ রান দিয়েছিলেন এবাদত। তবে এরপরই তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়, আর একদিক থেকে আসা নাঈম হাসানের ওপর এরই মাঝে চড়াও হয়েছিলেন ডেলপোর্ট ও নাঈম শেখ। শুরুতে নাঈম শেখের সহজ ক্যাচ মিসও ব্যাকফুটে নিয়ে গেছে সিলেটকে।
পাওয়ারপ্লেতে ৩১ রান তুলেছিল রংপুর, তাও শেষ দুই বলে নাঈমকে মারা ডেলপোর্টের চার-ছয়ে। অবশ্য এরপর থেকে বাউন্ডারি এসেছে নিয়মিতই, ডেলপোর্ট তুলেছেন ঝড়। রাদারফোর্ডকে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করেছেন মাত্র ২৪ বলে, শেষ পর্যন্ত নাভিন উল হকের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেছেন ২৮ বলে ৬৩ রান। ৬টি চারের সঙ্গে তিনি মেরেছেন ৫টি ছয়, নাঈমের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৯৯ রানের।
লুইস গ্রেগরিকেও দ্রুত ফিরিয়েছিলেন নাভিন, তবে ততক্ষণে বেশ দেরি হয়ে গেছে সিলেটের। এবাদতকেও শীঘ্রই আনা হয়নি। সিলেট অলৌকিক কিছু করতে পারেনি। জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় নাঈম অপরাজিত ছিলেন ৩৮ রানে, ৫০ বল খেলে। আর মোহাম্মদ নবি করেছেন ১২ বলে ১৮ রান।
এর আগে টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়া রংপুর চেপে ধরেছিল সিলেটকে, মোস্তাফিজুর রহমানসহ সব বোলারই পেয়েছেন উইকেট। শেষ ওভারে ২ উইকেটসহ ১০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। মোহাম্মদ মিঠুনের ৬২ রানের ইনিংসই সিলেটের একমাত্র হাইলাইটস, তার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ রান করেছেন শেরফ্যান রাদারফোর্ড। রংপুরের সবচেয়ে খরুচে ছিলেন মুকিদুল, ১০ ওভারে তিনি গুণেছিলেন ৪৩ রান।
টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুটাই এলোমেলো হয়েছিল সিলেটের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আরাফাত সানির শিকার আন্দ্রে ফ্লেচার, দিয়েছেন ক্যাচ। চতুর্থ ওভারে মুকিদুলকে টেনে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন জনসন চার্লসও। ২ উইকেট হারিয়ে পাওয়ারপ্লেতে সিলেট তুলেছিল মাত্র ২৭ রান।
চারে উঠে আসা মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে মিঠুনের জুটি একটু আশা জোগাচ্ছিল সিলেটকে। তবে ডাবলস নিতে গিয়ে মোসাদ্দেক রান-আউট হলে ভেঙেছে ৫৭ রানের সে জুটি, নাঈম শেখের সরাসরি থ্রো-তে ভেঙেছিল নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প, সঙ্গে ডাইভ দিয়ে চোটও পেয়েছেন মোসাদ্দেক।
রাদারফোর্ড নেমেই আক্রমণের চেষ্টা করছিলেন, অবশ্য সানিকে ছয় মারার পর আবার তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন মিডউইকেটে, তবে সেখানে পেয়েছিলেন জীবন। পরে লুইস গ্রেগরিকে তুলে মারতে গিয়ে প্রায় একই জায়গাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি।
মিঠুন ফিফটি করেছিলেন ছয় মেরে, তবে গিয়ার বদলানোর আগেই মোস্তাফিজের বলে মিড-উইকেটে সানির সামনে ঝুঁকে নেওয়া ভাল ক্যাচে ফিরতে হয়েছে তাকে। ৪৭ বলে ৬২ রানের ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে ২টি ছয় মেরেছেন মিঠুন।
মিঠুনের উইকেটের পর সিলেটের মোটামুটি স্কোরের স্বপ্নও মোটামুটি থমকে গেছে। নাঈমের সমানসংখ্যক বলে ৮ ও সোহাগের ১২ রানের ইনিংস তেমন পার্থক্য গড়তে পারেনি। মোস্তাফিজের করা শেষ ওভারের প্রথম দুই দুজনই এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন, মোস্তাফিজ দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সামনে। হ্যাটট্রিক না হলেও সে বলে রান-আউট হয়েছেন মনির হোসেন।