• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    টানা দ্বিতীয় জয়ে প্লে-অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো রংপুর

    টানা দ্বিতীয় জয়ে প্লে-অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো রংপুর    

    রংপুর রেঞ্জার্স ১৮২/৬, ২০ ওভার
    রাজশাহী রয়্যালস ১৩৫/৮, ২০ ওভার 
    রংপুর ৪৭ রানে জয়ী


    নাঈম শেখের ফিফটিতে পাওয়া ভিতে পরের ব্যাটসম্যানদের ঝড়, শুরু থেকেই আঁটসাঁট বোলিং আর সময়মতো তাসকিন আহমেদ-লুইস গ্রেগরির এনে দেওয়া ব্রেকথ্রুতে ভর করে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে রংপুর রেঞ্জার্স। ১৮৩ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে তাসকিন আহমেদ ২৯ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট, গ্রেগরি ২ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ২৮ রান। আর ৪ ওভারে মোস্তাফিজ খরচ করেছেন মাত্র ১৬ রান। ৮ম ম্যাচে রংপুরের এটি তৃতীয় জয়, প্লে-অফে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেই সিলেট যাবে তারা। অন্যদিকে রাজশাহী হারলো টানা দ্বিতীয় ম্যাচ, ৮ ম্যচে ১০ পয়েন্ট তাদের। 

    আগেরদিন ঝড়ো শুরু করা লিটন-আফিফ এদিন ঠিক সুবিধা করতে পারছিলেন না, আরাফাত সানি ও মোস্তাফিজুর আঁটসাঁট বোলিং করছিলেন শুরু থেকেই। তবে রংপুরকে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছেন এ ম্যাচ দিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদ। তার প্রথম বলেই শরীর থেকে দূরে টেনে মেরেছিলেন আফিফ, ইনফিল্ড ক্লিয়ার করেই ফেলেছিলেন প্রায়। তবে লুইস গ্রেগরি ভাবলেন অন্য কিছু, ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ছোঁ মেরে নিলেন ক্যাচটি। 

    এরপর কাপালির বিপক্ষে রিভিউ হারিয়ে ফেললো রংপুর। সেটি অবশ্য খুব একটা অসুবিধায় ফেলেনি তাদের। পাওয়ারপ্লেতে ৫ জন বোলারকে এনেছেন রংপুর অধিনায়ক শেন ওয়াটসন, এ সময় ৩১ রান তুলতে পেরেছে রাজশাহী। ওয়াটসনের অধিনায়কত্ব এদিন ছিল দারুণ আক্রমণাত্মক, ব্রেকথ্রুর পরই স্লিপ এনে বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। ৮ম ওভারে সানিকে টানা দুই ছয় মেরে কাপালি গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, তবে এরপর আবার তাকে ঢুকে যেতে হয়েছে খোলসে। 

    এরপরের দুই বলে তাসকিন নিয়েছেন দুটি উইকেট- লিটন কাট করতে গিয়ে দিয়েছেন ক্যাচ, আর ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে মালিক হয়েছেন বোল্ড। প্রথমার্ধে ৫৯ রান তুলে রাজশাহী অনেকখানি পথ হারিয়ে ফেলেছে তখনোই। 

    কাপালি ও বোপারা ফিরেছেন গ্রেগরিকে টেনে মারতে মারতে গিয়ে, মাঝে তাসকিনের এক ওভারে উঠেছিল ১৫ রান। এরপর ক্রিজে এলেন আন্দ্রে রাসেল, ঝড় তুললেন একটু, ফিরে গেলেন রান-আউট হয়ে। ২ ছয়ে ৭ বলে ১৭ করেছেন তিনি, তার আগেই নবির বলে টপ-এজড হয়ে ফিরেছেন ১৫ বলে ১৯ রান করা নাহিদুল। তাসকিন এরপর ফিরিয়েছেন ফরহাদ রেজাকে। 

    এর আগে রাজশাহী বোলিংয়ে প্রথম ওভারেই একটা ধাক্কা খেয়েছিল, আন্দ্রে রাসেলের প্রথম ওভারে নাঈম শেখ প্রথম তিন বলের মধ্যেই হুক করে ছয় ও চারে মেরে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বলটা করার সময়ই চোট পান রাসেল, মাথা নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে যান মাঠ দেখে। নাঈম অবশ্য পুল আর কাটে রান করেই যাচ্ছেন। মোহাম্মদ ইরফানের পরের ওভারে এলো তিন চার, শেন ওয়াটসন ওদিকে দর্শক।

    ওয়াটসন আগের দুই ম্যাচে রান পাননি, আজ একটি চার মেরেছিলেন। কিন্তু আউটটা হলো বেশ বিতর্কিতভাবে। আফিফ হোসেনের বলটা কাট করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন, কামরুল ইসলাম রাব্বি সামনের দিকে ঝুঁকেই ধরেছেন ক্যাচটা। কিন্তু রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, বল মাটিতে লেগেছে। বিতর্কটা আরও বেড়ে গেল, যখন হরিপ্লেতে দেখা গেল আফিফ পা দাগের ভেতরেই ছিল না। ৭ রানে দুর্ভাগ্যজনকভাবেই ফিরতে হলো ওয়াটসনকে।

    নাঈম অবশ্য দারুণ সব শট খেলতে শুরু করেছিলেন। আফিফকে দুই চার মেরে ২৫ বলে পৌঁছে গেলেন ৩৯ রানে। পাওয়ারপ্লেতে রান উঠল ৫২। ক্যামেরন ডেলপোর্ট একটু সতর্ক শুরু করেছিলেন। কিন্তু দশম ওভারে আফিফকে পর পর তিন বলে নিলেন ছয়, চার, ছয়সহ ১৪ রান। কিন্তু ১৭ বলে ৩১ রান করে পরের বলটা দিলেন ফিরতি ক্যাচ, সেটিও রিপ্লে দেখে আউট দিয়েছেন আম্পায়ার।

    নাঈম সেই যে গুটিয়ে গেলেন, আর বের হতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত রাব্বির বলে ফিরতি ক্যাচ দেওয়ার আগে আউট হলেন ৪৭ বলে ৫৫ রান করে। লুইস গ্রেগরি ও মোহাম্মদ নবী নামার পর রানের চাকা আরেকটু জোরে ঘুরতে শুরু করেছে রংপুরের। দুজন তিন ওভারে তুলে ফেললেন ৩৬ রান। এরপরেই ১৭ বলে ২৮ রান করে ইরফানের বলে আউট হলেন গ্রেগরি। 

    ফজলে রাব্বি এলেন আর গেলেন, ভরসা ছিলেন নবী। কিন্তু আজও বড় কিছু করতে পারলেন না, ১২ বলে ১৬ রান করে আফিফের এক দারুণ এক ক্যাচে আউট হয়ে গেলেন। ছন্দটা তখন হারিয়ে ফেলেছে রংপুর। তবে শেষ দুই ওভারে আল আমিন আর জহুরুল অনেকটা পুষিয়ে দিলে। জহুরুল শেষ ওভারে রেজাকে মারলেন চারটি চার, অপরাজিত রইলেন ৮ বলে ১৯ রান। আর আল আমিন করেছেন ১০ বলে ১৫। আর তাতেই ১৮২ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছিল রংপুর।