খুলনাকে উড়িয়ে সবার আগে শেষ চারে চট্টগ্রাম
খুলনা টাইগার্স ১২১ অল-আউট ১৯.৫ ওভার
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ১২৪/৪, ১৮.১ ওভার
চ্যালেঞ্জার্স ৬ উইকেটে জয়ী
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স অপেক্ষায় ছিল। কুমিল্লার সঙ্গে ক্লোজ-এনকাউন্টার হারের পর তারা দেখেছে রাজশাহী রয়্যালস ও ঢাকা প্লাটুনের তাদেরকে টপকে শীর্ষে যাওয়া। সিলেট পর্বে নিজেদের প্রথম ও শেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে উড়িয়ে দিয়ে একটা জয়ের অপেক্ষা ফুরোলো চট্টগ্রামের, সঙ্গে প্রথম দল হিসেবে এই বিপিএলের প্লে-অফেও চলে গেল তারা। ২ ম্যাচ বাকি রেখেই তাদের পয়েন্ট এখন ১৪।
সিলেটের উইকেট ছিল বেশ অন্যরকম, ম্যাচশেষে তো মুশফিক বলেই দিলেন, টি-টোয়েন্টিতে এমন উইকেট আশা করেন না তারা। অবশ্য এরপরই কৃতিত্ব দিলেন চট্টগ্রাম বোলারদের। তাদের দারুণ বোলিংয়ে খুলনা আটকে গিয়েছিল ১২১ রানেই, আর সেটি টপকেছে চট্টগ্রাম ১১ বল ও ৬ উইকেট বাকি রেখেই।
রানতাড়ায় লেন্ডল সিমন্স ও জুনাইদ সিদ্দিকের ওপেনিং জুটিতেই উঠেছিল ৬৯ রান। পরপর দুই ওভারে দুই স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন এ দুজন- ৩ চার ও ২ ছয়ে ২৮ বলে ৩৬ রান করা সিমন্স আল ইসলাম ও ৩৯ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩৮ রান করা জুনাইদ মেহেদি হাসান মিরাজকে। এর আগে পাওয়ারপ্লেতে ৪২ রান তুলেছিলেন তারা। আসেলা গুনারত্নে ও চ্যাডউইক ওয়ালটনকে এরপর দ্রুতই ফিরিয়েছেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক, তবে ইমরুল কায়েসে ভর করে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে চট্টগ্রাম। শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন তাদের অধিনায়ক।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনা টাইগার্সকে শুরুতেই ছিটকে দেওয়ার কাজটি ছিল এমন- মেহেদি হাসান রানা শুরু করলেন, মাঝে রুবেল হোসেন ও কেসরিক উইলিয়ামসের সঙ্গে থাকলেন জিয়াউর রহমান। রানা ফিরে বাকি কাজটুকু সারলেন যেন রুবেলের সঙ্গে, আর তাতেই দমবন্ধ অবস্থা হয়ে গেল খুলনা টাইগার্সের। দফায় দফায় উইকেট হারিয়েছে খুলনা, চট্টগ্রাম পেসাররা চেপে বসেছেন তাদের ওপর। রাইলি রুশোর ৪০ বলে ৪৮ রানের ইনিংস যা একটু সংগ্রামই করতে পেরেছে, মুশফিকের ২৪ বলে ২৯ রানের ইনিংসও তাই।
তাদের ব্যাটিং দেখেও মনে হয়নি, খুলনা উড়ান দিতে পারবে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রানার এক ওভারে খেই হারানো শুরু তাদের। তৃতীয় ওভারে তিনি ফিরিয়েছেন খুলনার দুই ওপেনারকে- ওভার দ্য উইকেট থেকে বল ভেতরে ঢুকিয়ে এলবিডব্লিউ করেছেন তিনি, আর আমলার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে করেছেন বোল্ড। এ বিপিএলের স্বপ্নের সময়টা এখনও শেষ হয়ে যায়নি এই বাঁহাতির। পরের ওভারে রুবেলের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে শামসুর ক্যাচ দিলে ১৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে খুলনা।
মুশফিক ও রুশো খুলনাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছেন, দুজনের ৪র্থ উইকেট জুটিতে উঠেছে ৪৯ রান। তবে ঠিক যখন মুশফিক ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন বলে মনে হচ্ছিল, রিভার্স সুইপ কাল হয়েছে তার। রিভার্স সুইপের চেয়ে বরং রিভার্স স্কুপ করতে চেয়েছিলেন, সেটি বলা বেশি উপযুক্ত। তবে জিয়াউর রহমানের বলটা মিস করে স্টাম্প হারিয়েছেন খুলনা অধিনায়ক, সে ওভারে একটা ছয়ও মেরেছিলেন তাকে।
রুশো চেষ্টা করে গেছেন আরও কিছুক্ষণ, রবি ফ্রাইলিঙ্ককে নিয়ে তার জুটি ছিল ৪৩ রানের। এবার আঘাত করেছেন উইলিয়ামস। পরপর দুই বলে রুশো ও আমির ইয়ামিন তার শিকার- পেসের বৈচিত্র না বুঝে রুশো বোল্ড হয়েছেন, ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন ইয়ামিন।
আলাউদ্দিন বাবু ও তানভির ইসলাম বোল্ড হয়েছেন রুবেলের ইয়র্কার সামলাতে না পেরে, মাঝে রানার তৃতীয় শিকা রবি ফ্রাইলিঙ্ক ছাড়ব-খেলব করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। আর আলিস আল ইসলামের রান-আউটে ১ বল বাকি থাকতেই শেষ হয়েছে খুলনার ইনিংস।